বাংলা হান্ট ডেস্ক: বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের ফলে সন্তানের জন্ম হওয়ার পর বৈধ পিতা কে হবে এই বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ উত্তর দিল ভারতের সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। সুপ্রিম কোর্টের এই মামলার রায় শুনে ইতিমধ্যে বিতর্কে সৃষ্টি হয়েছে। একটি মামলার শুনানিতে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে যে, যদি কোন বিবাহিত মহিলার সন্তান হয়, তাহলে সেই সন্তানের আসল বাবা যেই হোক না কেন। আইনতই স্বামীকেই সন্তানের বাবা হিসেবে গণ্য করা হবে। পাশাপাশি সেই স্বামীকেই তার স্ত্রী ও সন্তানের দায়িত্ব নিতে হবে।
স্ত্রীর জন্ম দেওয়া সন্তানের দায়িত্ব পালন করতে হবে স্বামীকে! সুপ্রিম কোর্টের নয়া নির্দেশ ঘিরে বিতর্ক (Supreme Court)
সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, সন্তানের জন্ম সংক্রান্ত কোনো অনুসন্ধান বা প্রশ্ন যাতে না ওঠে, সে কারণেই এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে, যদি কোনও স্বামী সন্তানের পিতৃত্ব অস্বীকার করতে চান, তাহলে তাঁকেই প্রমাণ করতে হবে যে তিনি ও তাঁর স্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে ‘নো-কন্টাক্ট’ বা কোনও শারীরিক সম্পর্কে ছিলেন না। পাশাপাশি, বৈধ দাম্পত্য জীবনে সন্তানের জন্ম হলে আইনত সমিতি সন্তানের বৈধ পিতা হিসাবে ধরা হয়। এমনকি পরকীয়ার অভিযোগ উঠলে যদি না স্বামী প্রমাণ করতে পারি, যে গর্ভধারণের সময় তার স্ত্রী তার কাছে ছিলেন না ততদিন পর্যন্ত এই ধারণায় অটুট থাকবে বলে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)।
আরও পড়ুন: মেলেনি আবাসের ঘরটুকু! ফুটো হওয়া টিনের চালের নিচেই দিন গুজরান উচ্চমাধ্যমিকে সপ্তম হওয়া কোয়েলের
এই বিষয়ে শীর্ষ আদালত স্পষ্ট জানিয়েছেন, DNA পরীক্ষা করার দাবী সক্রিয়ভাবে কোন পক্ষেই অধিকার নয়। সন্তানের কল্যাণ ও ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও সামাজিক মর্যাদাকে বজায় রাখার জন্য জৈবিক সত্যের চেয়ে অগ্রাধিকার দিতে হবে। এই রায় বেরোনোর পর থেকে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে নানান বিতর্ক। সমালোচকদের মতে, এই রায় পুরুষদের ওপর অন্যায় ভাবে দায় চাপানো হচ্ছে। তাদের মতে এমন সন্তানের দায়িত্ব নিতে বাধ্য করা হচ্ছে যার বৈধ পিতা তারা নন।
রায়ের মূল বিষয়বস্তু:
১) সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) তারই রায় বলেছেন কোন বিবাহিত দম্পতি যদি একসঙ্গে থাকেন। তবে সেই সময় স্ত্রীর গর্ভে আসার সন্তানের পিতৃত্ব পরিচয় নিয়ে কোন প্রশ্ন তোলা যাবে না। যদিও কোন তৃতীয় ব্যক্তি পিতৃত্বের দাবি জানান, তাহলেও আইন অনুযায়ী স্বামীকে এই সেই অধিকারে বজায় থাকবে।
২) আদালত স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, বিবাহিত দাম্পত্যে ব্যক্তিগত সম্পর্কের মধ্যে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপকে উৎসাহিত করা উচিত নয়। যদি কোন তৃতীয় ব্যক্তি দাবি করেন যে তিনি ওই সন্তানের বাবা, তাহলে সেই দাবিকে গুরুত্ব দেওয়া হবে না। পাশাপাশি সেই ব্যক্তি যদি সুস্পষ্টভাবে কোন প্রমাণ বা স্বীকারোক্তি না দিতে পারেন তাহলে সেই সন্তানের অধিকার থেকে বঞ্চিত থাকবেন তৃতীয় ব্যক্তি।
এই নতুন রায়ের পর দেশ জুড়ে নানান বিতর্ক শুরু হয়েছে। সমালোচকদের দাবি জোর করে তাদের ওপরে সন্তানের দায়িত্ব নিতে বাধ্য করা হচ্ছে। যেখানে হয়তো জৈবিকভাবে তাদের দায় নেই। আবার অনেকের মতে, এই রায় বৈবাহিক পবিত্রতাকে ব্যক্তিগত অধিকার ও সত্যের উর্ধ্বে স্থান দিয়েছে।