বাংলাহান্ট ডেস্ক: সময় যায় জলের মতো। কিন্তু কিছু কিছু দিন মানুষের মনে চিরদিনের মতো বিশেষ স্মৃতি হয়ে থেকে যায়। আজ, ২৪ জুলাই এমনি একটি দিন। ১৯৮০ সালে আজকের দিনে প্রয়াত হন মহানায়ক উত্তম কুমার (Uttam Kumar)। একজন প্রকৃত শিল্পীর মতোই শুটিং করতে করতে সেটেই হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। পরে বেলভিউ ক্লিনিকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন মহানায়ক।
সলিল দত্ত পরিচালিত ‘ওগো বধূ সুন্দরী’ ছিল উত্তম কুমার অভিনীত শেষ ছবি। এই ছবির শুটিংয়ের সময়েই হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। ছবির শুটিং শেষ করে যেতে পারেননি উত্তম কুমার। মাত্র ৫৩ বছর বয়সে তাঁর অকালমৃত্যুতে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। কিন্তু এই মৃত্যুর দায় সুপ্রিয়া দেবী চাপিয়েছিলেন অভিনেত্রী মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়ের ঘাড়ে।
ওগো বধূ সুন্দরী ছবিতে উত্তম কুমারের বিপরীতে ছিলেন মৌসুমী এবং সুমিত্রা মুখোপাধ্যায়। মৌসুমীর বিরুদ্ধে সেটে উত্তম কুমারকে অপমানের অভিযোগ উঠেছিল। সেই অসম্মান সইতে না পেরেই নাকি প্রয়াত হন উত্তম কুমার, এমনি অভিযোগ করেছিলেন সুপ্রিয়া দেবী।
ঠিক কী ঘটেছিল ঘটনাটা? শোনা যায়, ওগো বধূ সুন্দরী ছবিতে উত্তম কুমারের ব্যক্তিগত মেকআপ রুমে একদিন সমস্যা থাকায় তাঁকে অন্য রুম দেওয়া হয়। সেটি ছিল মৌসুমীর মেকআপ রুম। উত্তম কুমার সেই রুমে ঢুকতে গিয়ে বাধা পেয়েছিলেন সেদিন। তাঁকে বলা হয়েছিল, ভেতরে একজন বড় অভিনেত্রী মেকআপ করছেন। এখন ভেতরে কারোর ঢোকা বারণ।
শোনা যায়, এই অপমানটাই ভেতরে ভেতরে শেষ করে দিয়েছিল উত্তম কুমারকে। তাঁর প্রয়াণের পর সুপ্রিয়া দেবী ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন মৌসুমীর উপরে। নিজের জায়গায় দাঁড়িয়ে মহানায়ক মেকআপ রুমে ঢুকতে পারেননি, মৌসুমীর দেওয়া এই আঘাতটা মেনে নিতে পারেননি তিনি। জুনিয়র অভিনেত্রীর এই স্পর্ধা রাগে স্তব্ধ করে দিয়েছিল সুপ্রিয়া দেবীকে।
যদিও মৌসুমী চট্টোপাধ্যায় সবটাই অস্বীকার করেন। তিনি বলেছিলেন, উত্তম কুমার তাঁর কাছে ‘উত্তম কাকু’ ছিলেন। তিনি ছিলেন ‘ইন্দু’। মৌসুমী বলেছিলেন, তিনি নাকি জানতেনই না যে উত্তম কুমার তাঁর মেকআপ রুমে এসেছিলেন। জানা সত্ত্বেও তাঁকে চলে যেতে বলবেন এত স্পর্ধা তাঁর নেই বলেই স্পষ্ট জানিয়েছিলেন মৌসুমী।
কিন্তু দুজনের মধ্যে এই বিবাদ থামেনি ওখানেই। দুজনের মুখ দেখাদেখি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তবুও ‘কড়ি দিয়ে কিনলাম’ ছবিতে মৌসুমীর দজ্জাল শাশুড়ির ভূমিকায় চমকে দিয়েছিলেন সুপ্রিয়া দেবী। অনেকের মতে, এভাবেই মৌসুমীর উপরে বদলা নিয়েছিলেন তিনি।