বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজ্য সরকারের প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা কি বেসরকারি কর্পোরেট সংস্থার হাতে চলে গিয়েছে? এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। তাঁর অভিযোগ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস শুধু দল নয়, পুরো প্রশাসনকেই নিজের রাজনৈতিক স্বার্থে কাজে লাগাচ্ছে। এমনকি এখন প্রশাসনের ভিতরেও ঢুকে পড়েছে বেসরকারি পরামর্শদাতা সংস্থা আই-প্যাক।
এদিন শুভেন্দু (Suvendu Adhikari) মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করে বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেমন অবৈধ বাংলাদেশী মুসলিম অভিবাসীদের পশ্চিমবঙ্গে বসতি স্থাপনের অনুমতি দিয়েছিলেন, তেমনি তিনি এখন ‘কর্পোরেট স্টুজ’দের একটি দলকে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের প্রশাসনিক সীমানা লঙ্ঘনের অনুমতি দিয়েছেন।” শুভেন্দু আরও বলেন, এই সংস্থার কিছু অ্যাসোসিয়েট বর্তমানে নবান্ন এবং অন্যান্য সরকারি দফতরে প্রশাসনিক আধিকারিকদের ওপর প্রভাব খাটাচ্ছেন। এমনকী তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের মতো সংবেদনশীল জায়গাতেও ‘নির্দেশ’ দিচ্ছেন তারা।
বিরোধী দলনেতার কথায়, রাজ্যের ডব্লিউবিসিএস অফিসার যিনি অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার, তাঁর উপর এক কর্পোরেট সংস্থার অ্যাসোসিয়েট নির্দেশ দিচ্ছেন। কোনও সরকার অনুমোদিত নিয়োগপত্র ছাড়াই, কোনও প্রশাসনিক যোগসূত্র ছাড়াই, সরকারি অফিসারদের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করা হচ্ছে। শুভেন্দুর (Suvendu Adhikari) প্রশ্ন, “তবে কি রাজ্যের আমলারা এখন রাজনৈতিক দলের কর্মীদের থেকে নির্দেশ নিচ্ছেন?” এই প্রসঙ্গে রাজ্যের আইএএস এবং ডব্লিউবিসিএস অফিসারদের সংগঠনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। তাঁদের এই বিষয়ে মুখ খোলার দাবি জানিয়েছেন শুভেন্দু (Suvendu Adhikari)।
‘আর্থিক দুর্নীতি’র ইঙ্গিত বিরোধী দলনেতার
শুধু প্রশাসনিক হস্তক্ষেপই নয়, এর সঙ্গে আর্থিক দুর্নীতির ইঙ্গিতও দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। তাঁর দাবি, যেহেতু আই-প্যাক তৃণমূল কংগ্রেসের সংগঠন ও প্রচার ব্যবস্থার দেখভাল করছে, তাই একই সঙ্গে রাজ্য প্রশাসনে তাদের সক্রিয় ভূমিকা থাকা সম্পূর্ণ বেআইনি। তাঁর আরও আশঙ্কা, এই পরিষেবার খরচ মেটানো হচ্ছে রাজ্য সরকার বা কোনও সরকার-নিয়ন্ত্রিত দফতরের তহবিল থেকে। ফলে এর মধ্যে বড়সড় আর্থিক দুর্নীতির সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
‘জনতার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা’, বলছেন শুভেন্দু (Suvendu Adhikari)
এই সমগ্র পরিস্থিতিকে রাজ্যবাসীর বিশ্বাসভঙ্গ বলেই দাবি করেছেন তিনি। শুভেন্দুর অভিযোগ, “মানুষ ভাবছেন, সরকার তাঁদের জন্য কাজ করছে। কিন্তু বাস্তবে সরকার কাজ করছে শুধু তৃণমূল কংগ্রেসের স্বার্থে। প্রশাসনকে ব্যবহার করা হচ্ছে ভোটের স্বার্থে। রাজ্যের গোটা প্রশাসনিক ব্যবস্থা আজ দলীয় রাজনৈতিক কৌশলের শিকার।”
এই পরিস্থিতিকে ‘অশুভ আঁতাঁত’ বলে ব্যাখ্যা করে শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) জানিয়েছেন, তিনি আইনি পথে বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করবেন। তাঁর বক্তব্য, “এই অসুস্থ, বিকৃত সিস্টেমকে বন্ধ করতেই হবে।”