বাংলা হান্ট ডেস্কঃ পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের সবথেকে হাইভোল্টেজ আসন হতে চলেছে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্র। একসময় নন্দীগ্রাম আন্দোলন দিয়ে ক্ষমতায় আসা তৃণমূলের এখন সম্পূর্ণ ফোকাস আবার সেই নন্দীগ্রামেই। কারণ তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবার সেই আসনের প্রার্থী। নন্দীগ্রাম আন্দোলনের পুরোধা শুভেন্দু অধিকারীকে খোলা চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মুখোমুখি টক্করে মুখ্যমন্ত্রী।
এতদিন ধরে তৃণমূল নেত্রীর চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে ওই আসন থেকে জয়ের দাবি জানাচ্ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। গতকাল বিজেপি নিজেদের প্রার্থী তালিকায় শুভেন্দু অধিকারীকে নন্দীগ্রামের আসনেই লড়ার স্বীকৃতি দিয়েছে। বিজেপির প্রার্থী তালিকার পর নন্দীগ্রামই এখন একুশের নির্বাচনের লড়াইয়ের কেন্দ্রবিন্দু। তবে বাম-কংগ্রেস-ISF জোট এখনও নিজেদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি। তবে মৃদু গুঞ্জন উঠছে যে, নন্দীগ্রাম আসনে এবার ফুরফুরা শরীফের পীরজাদা তথা ISF এর প্রধান আব্বাস সিদ্দিকী দাঁড়াতে পারেন।
একদা বামেদের শক্তঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ছিল এই নন্দীগ্রাম। ১৯৬৭ থেকে ১৯৭৭ পর্যন্ত বাম বিধায়ক ভুপাল চন্দ্র পন্ডার দখলে ছিল নন্দীগ্রাম বিধানসভা আসন। ১৯৭৭ সালের নির্বাচনে জনতা পার্টির প্রবীর জানা ওই আসনে বিধায়ক হন। এরপর ১৯৮২ সালে ভুপালবাবু ওই আসনে আবারও ক্ষমতায় আসেন আর ২০০৬ পর্যন্ত ওই আসন বামেদের দখলেই থাকে।
২০০৯ সালের উপনির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী ফিরোজা বিবি ওই আসন থেকে জয়লাভ করেন। ২০১১ সালেও তিনিই ওই আসন থেকে জয়লাভ করেছিলেন। এরপর ২০১৬ সালে তৃণমূলের প্রতীকে শুভেন্দু অধিকারী সেই আসন থেকে রেকর্ড ৮০ হাজার ভোটে জয়ী হন। গোটা নন্দীগ্রাম এলাকা নখদর্পণে শুভেন্দু অধিকারীর। এমনকি নন্দীগ্রাম আন্দোলনের বেশিরভাগ শহীদ পরিবারই শুভেন্দুর সঙ্গে আছেন। ২০২১ এর নির্বাচনে নন্দীগ্রাম শুভেন্দুর পাশেই দাঁড়ায় নাকি সেটাই দেখার বিষয়।
তবে শুভেন্দুর জয় নিয়ে নিশ্চিত তৃণমূলের সাংসদ শিশির অধিকারী। শিশিরবাবু একদিকে যেমন শাসক দল তৃণমূলের সাংসদ, তেমনই আরেকদিকে শুভেন্দু অধিকারীর বাবাও। আর বাবা হয়ে নিজের ছেলেকে ফেলে দিতে চাইছেন না। সেই কারণে তিনি একুশের নির্বাচনে দলকে দূরে সরিয়ে রেখে ছেলের হয়ে প্রচার করারও কথা বলেছেন। শিশির অধিকারী জানান, নন্দীগ্রামে বড় ব্যবধানে জিতবে শুভেন্দু।
সম্প্রতি অধিকারী পরিবারের সঙ্গে তৃণমূলের দুরত্ব বেড়েছে। শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর তাঁর ভাই সৌমেন্দু অধিকারীও বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তবে পরিবারের আরও দুই সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী এবং শিশির অধিকারী এখনও তৃণমূলেই রয়ে গিয়েছেন। তৃণমূলের তরফ থেকে এই দুই সাংসদের ডানাও ছাঁটা হয়েছে। তবে দুজনের মধ্যে কেউই এখনও দল ছাড়েন নি।