একটা গাছই বদলে দিল জীবন! অভিনব ব্যবসা শুরু করে কোটিপতি হলেন তামিলনাড়ুর প্রৌঢ়

Published on:

Published on:

Tamil Nadu man's new idea made his Success Story.

বাংলাহান্ট ডেস্ক: তামিলনাড়ুর তিরুভল্লুর জেলার ছোট্ট গ্রাম ঈসনম কুপ্পমের বাসিন্দা জলন্ধরের জীবন বদলে (Success Story) দিয়েছে এক অদ্ভুত সুন্দর গাছ—ডেজার্ট রোজ। যখন অনেকেই এই বিদেশি উদ্ভিদকে ‘অতিরিক্ত ঝুঁকিপূর্ণ’ ও ‘অসফল ব্যবসার ধারণা’ বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন, তখন জলন্ধর এর মধ্যেই খুঁজে পান সম্ভাবনা, সৌন্দর্য আর লাভজনক ভবিষ্যতের পথ। তাঁর সেই দূরদর্শিতা, অভিজ্ঞতা এবং নিরলস পরিশ্রমই আজ তাঁকে আন্তর্জাতিক স্তরে এক সফল উদ্যোক্তায় পরিণত করেছে। বর্তমানে তাঁর ডেজার্ট রোজ চাষ তাঁকে মাসে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা এবং বছরে প্রায় ৬০ লক্ষ টাকার আয় এনে দেয়। শুধু ভারতেই নয়, তাঁর গাছ পৌঁছে যায় দুবাই, জ্যামাইকা এবং মরিশাসের মতো দেশেও।

ডেজার্ট রোজ দিয়ে জীবনের অনন্য কাহিনি লিখেছেন জলন্ধর (Success Story)

জলন্ধরের এই যাত্রার সূচনা বহু আগে, ১৯৮৬ সালে। সেদিন তিনি প্রথম মুম্বই থেকে ডেজার্ট রোজের কয়েকটি চারাগাছ সংগ্রহ করেছিলেন। বাগানচর্চায় তখন তাঁর চার দশকের অভিজ্ঞতা ছিল, যা তাঁকে আলাদা আত্মবিশ্বাস দিয়েছিল। তবে শুধু চারা সংগ্রহেই তিনি থেমে থাকেননি। গ্রাফটিং এবং হাইব্রিডাইজেশনের কৌশল আয়ত্ত করতে তিনি পাড়ি জমান থাইল্যান্ড, তাইওয়ান ও ভিয়েতনামে। এই বিদেশযাত্রা ছিল তাঁর সরল জীবনের বাইরে এক বিরাট ঝুঁকি, কিন্তু শেখার আগ্রহ ও সাহস তাঁকে সফলতার দিকে এগিয়ে দেয় (Success Story)।

আরও পড়ুন: বিজয়ের জনসভায় পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু ৩৯ জনের! আহত শতাধিক, নিরাপত্তা বাড়ল অভিনেতার বাড়িতে

আজ জলন্ধরের ১৫ একর জমির বিশাল ফার্মে ৪৫০-রও বেশি প্রজাতির ডেজার্ট রোজ রয়েছে। প্রতিটি গাছ ভিন্ন ভিন্ন রঙে ও আকারে ফুটে ওঠে, অনেক সময় এক গাছে একাধিক প্রকারের ফুলও ফোটে। ছোট চারাগাছের দাম যেখানে মাত্র ১৫০ টাকা, সেখানে এই বিরল গাছের দাম পৌঁছয় ১২ লক্ষ টাকায়। এই গাছের বিশেষত্ব হল—এগুলো বাড়াতে আলাদা সার লাগে না, সামান্য রোদ আর সপ্তাহে দু’বার জল পেলেই এগুলো ভালোভাবে বেড়ে ওঠে। এ কারণেই জলন্ধরের গাছ ভারতে যেমন জনপ্রিয়, তেমনই বিদেশেও সমানভাবে চাহিদাসম্পন্ন (Success Story)।

তবে এত বড় সাফল্যের পরও জলন্ধর অনলাইন বিক্রিতে ভরসা করেন না। অতীতে কিছু প্রতারক বিক্রেতার অভিজ্ঞতা তাঁকে সতর্ক করেছে। তাই তিনি ক্রেতাদের সরাসরি তাঁর ফার্মে আসার জন্য উৎসাহিত করেন। এতে ক্রেতারাও আসল গাছ দেখে কিনতে পারেন এবং জলন্ধরের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করতে পারেন (Success Story)।

Tamil Nadu man's new idea made his Success Story.

আরও পড়ুন:দুর্গাপুজো আয়োজন করতেও এত্ত বাধা? বিতর্কের মাঝেই সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার নিয়ে বড় কথা বলে দিলেন সজল ঘোষ

তাঁর কাজকে সরকারও স্বীকৃতি দিয়েছে। তামিলনাড়ু বাগান বিভাগ তাঁকে ‘ন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল ডেভেলপমেন্ট স্কিম’-এর আওতায় শেড নেট হাউস নির্মাণের জন্য ১০.৬৫ লক্ষ টাকা ভর্তুকি দিয়েছে। এখন তাঁর ইচ্ছে ফার্মটিকে পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করার (Success Story)।

জলন্ধরের গল্প কেবলমাত্র একটি গাছের ব্যবসার গল্প নয়। এটি এক অনন্য উদাহরণ—বিশ্বাস, দৃঢ়তা এবং স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার। যেখানে সবাই ব্যর্থতা দেখেছিল, সেখানে তিনি দেখেছিলেন সম্ভাবনার আলো। আর সেই দৃষ্টিভঙ্গিই আজ তাঁকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে সাফল্যের প্রতীক করে তুলেছে (Success Story)।