বাংলাহান্ট ডেস্কঃ ৫০ পেরিয়েছে তো কি হয়েছে, মনের ইচ্ছাই পূরণ করলেন আইনজীবী ছেলের হাত ধরে। অদম্য ইচ্ছাশক্তি কাজে লাগিয়ে ৫২র এক প্রৌঢ়া ছেলের সহায়তায় পাশ করলেন উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা। ঘটনাটি উত্তর ২৪ পরগনার রহড়া রামকৃষ্ণপল্লির (Rahra of North 24 Parganas belongs to Ramakrishnapalli)। প্রৌঢ়ার নাম প্রতিমা গঙ্গোপাধ্যায় (Pratima Gangopadhyay), বয়স ৫২। ছেলের কাছে পড়াশোনা করে এ বছর উচ্চমাধ্যমিকে তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ২৫৯।
পরিবার জানিয়েছে, ১৯৯০ সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন প্রতিমাদেবী। এর আগে মাধ্যমিক দিলেও উত্তীর্ণ হতে পারেননি তিনি। ফের পড়াশোনার ইচ্ছে থাকলেও বিয়ের পর ইতি পড়ে। তবে আফসোস ছিলই। আর ছিল অদম্য ইচ্ছা, লড়াই-এর মনোবল।
নিজের অপূর্ণ সাধ পূরণ করে গেছেন ছেলেদের মধ্যে। এরপর ছেলেরা বড়ো হয় মা-এর স্বপ্নপূরণের দায়িত্ব নেয়। আর তাতেই ৫২-র কোটায় দাঁড়িয়ে জীবনের অন্যতম ইচ্ছে পূরণ করে ফেলেছেন প্রতিমাদেবী।
বিয়ের পর থেকে দুই ছেলে আর স্বামী নিয়ে আর পাঁচটা গৃহবধূর মতোই চলছিল যাপন। ঠিক গল্পটি ঘুরে যায় ২০১৭ সালে। নতুন করে ফের পড়াশোনা শুরু হয় বড় ছেলে অয়ন গঙ্গোপাধ্যায়ের হাত ধরে। ২০১৭-তে রবীন্দ্র মুক্ত বিদ্যালয় মাকে মাধ্যমিকের কোর্সে ভর্তি করিয়ে দেন তিনি।
মাধ্যমিক দেওয়া নির্বিঘ্নে হলেও সমস্যা হয় একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির সময়। ৫২ বছরের প্রৌঢ়াকে স্কুলে ভর্তি করার কথা শুনে কার্যত চমকে যায় স্কুলের কর্তৃপক্ষ। হাসাহাসিও করেন অনেকে।
কিন্তু মায়ের জন্য হাল ছাড়েননি ছেলে। বহু কাঠখড় পুড়িয়ে শেষপর্যন্ত রহড়া আইডিয়াল আকাডেমি ফর গার্লস স্কুলে মাকে ভর্তি করান। দু-বছর প্রস্তুতি নিয়ে উচ্চমাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হন প্রতিমাদেবী।
তাঁর বড় ছেলে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, এবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাতেও বসাবেন মা-কে। প্রতিমাদেবীর কথায়, “এবার কলেজ যাব, তারপর মাস্টার্সও করব। আমি ভীষণ খুশি পাশ করে। আরও পরব”।