বাংলাহান্ট ডেস্ক : মাত্র ৯ সেকেন্ডের সময় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ভেঙে ফেলা হয়েছে নয়টার টুইন টাওয়ার। কুতুব মিনারের থেকেও উঁচু এই বিল্ডিংটি অবৈধভাবে নির্মাণের অভিযোগে ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিল ভারতের সুপ্রিম কোর্ট।নয়ডার ৯৩ সেক্টরে দশ বছর ধরে তিলে তিলে গড়ে ওঠা এই টুইন টাওয়ারটি ধ্বংস করা হয় রবিবার দুপুরে। কিন্তু জানেন কি এই টুইন টাওয়ার ধ্বংসের অন্যতম কারিগর দুই বাঙালি যুবক।
কুতুব মিনারের থেকেও উঁচু এই আবাসন প্রকল্পটি বেআইনিভাবে নির্মাণের অভিযোগ ওঠে। সেই মামলায় সুপ্রিম কোর্ট এই টুইন টাওয়ার ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেয়। যে দুটি টাওয়ার ধ্বংস করা হয়েছিল তার একটি নাম অ্যাপেক্স ,অন্যটির নাম শিয়ানে।অ্যাপেক্স এর উচ্চতা ১০০ মিটার ও শিয়ানের উচ্চতা ৯৭ মিটার।
এই ধ্বংসযজ্ঞের মধ্যে এক বাঙালি যুবকের পরিচয় ইতিমধ্যেই আমরা সবাই পেয়েছি। তার নাম চেতন দত্ত। কিন্তু জানেন কি এর পাশাপাশি আরও এক বাঙালি ইঞ্জিনিয়ার পাঁশকুড়ার মৃণাল ভৌমিকও যুক্ত ছিলেন এই ঐতিহাসিক কাজে।
আইআইটি মাদ্রাজে সিভিল আর্থকুইক নিয়ে গবেষণা করছেন মৃণাল ভৌমিক।পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া থানার লক্ষ্যাকুড়ির চাউল্যাকুড়ি গ্রাম থেকে নয়ডা যান মৃণাল। এই ধ্বংসযজ্ঞ তৈরীর জন্য আইআইটি মাদ্রাজের যে চারজনের টিম গঠিত করা হয়েছিল তাদের মধ্যেই একজন এই মৃনাল। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এ বিটেক করার পর তিনি এমটেক করেন এন আই টি রাউর কেল্লা থেকে। বর্তমানে মাদ্রাজ আইআইটি থেকে পিএইচডি নিয়ে গবেষণারত। এছাড়াও Prime Minister’s Research Fellowship scheme এ নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।
মৃণাল জানিয়েছেন, যে বিল্ডিংয়ের ৯ থেকে ১০ কিলোমিটার এর মধ্যে বসতি ও ৪ মিটারের মধ্যে গ্যাস লাইনের সংযোগ সেখানে এই ধরনের বিস্ফোরণ ঘটানো সত্যিই কঠিন। এইগুলির ফলে মানুষের কি ধরনের ক্ষতি হতে পারে তার মেজারমেন্ট করা অত্যন্ত কঠিন কাজ ছিল। মৃণালের কথায় এটি সম্পূর্ণ একটি দলগত কাজ। এক ভারতীয় সংস্থার পাশাপাশি দক্ষিণ আফ্রিকার সংস্থা ও আইআইটি রুরকি এবং আই আই টি মাদ্রাজ এই কর্মযজ্ঞে যুক্ত ছিল।
মৃণালের আরও সংযোজন, আইআইটি মাদ্রাজ টিমের সাথে যুক্ত ছিলাম। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের আগে চার মাস পূর্বে এই বিল্ডিংটিতে একটি সার্ভের কাজ করা হয়। তাদের পরীক্ষা করে দেখা হয় যে টুইনটাওয়ার ধ্বংসের জন্য কত কেজি বিস্ফোরক লাগতে পারে। টাওয়ার গুলি ধ্বংসের পাশাপাশি আশপাশের অঞ্চলের মানুষের যাতে কোন ক্ষতি না হয় সেই দিকটাও খেয়াল রাখতে হয়েছিল। বিস্তার পরীক্ষার পর বিল্ডিং এর প্রতি কলামে ৩৫০০ কিলো বিস্ফোরক লাগানো হয়।