বাংলাহান্ট ডেস্ক : আগামী বছরের শুরুতেই হওয়ার কথা ছিল পঞ্চায়েত ভোট। কিন্তু আদালতে আটকে রয়েছে রাজ্যের পঞ্চায়েত ভোটের ভবিষ্যৎ। কলকাতা হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ দিয়ে জানিয়েছে যে এই মুহূর্তে রাজ্য নির্বাচন কমিশন পঞ্চায়েত ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি করতে পারবেনা। কিন্তু প্রায় সব রাজনৈতিক দলই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচনের। পিছিয়ে নেই গেরুয়া শিবিরও। আইনি শাখার উপরে রাজ্য বিজেপি এবার বিশেষ গুরুত্ব দিতে চলেছে।
সূত্রের খবর, আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচন পরিচালনার জন্য বিজেপির পক্ষ থেকে রাজ্য স্তরের যে কমিটি গঠন করা হয়েছে তাতে আইনি লড়াইয়ের জন্য সবথেকে বেশি সদস্য রাখা হয়েছে। এর আগেই রাজ্য বিজেপি প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা রায়গঞ্জের সংসদ দেবশ্রী চৌধুরীর নেতৃত্বে পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য কমিটি গঠন করেছিল। কিন্তু এখন ২৩ জনের একটি বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে বিজেপির পক্ষ থেকে। প্রচার থেকে সোশ্যাল মিডিয়া, আইনি লড়াই থেকে আর্থিক বিষয়, সবকিছু সামলাবে এই ২৩ জনের কমিটি। এই দলে রয়েছে সাতটি বিভাগ।
জানা গিয়েছে, প্রত্যেকটি বিভাগে রয়েছেন দুই থেকে চারজন করে বিশেষজ্ঞ। কিন্তু ৬ জন আইনজীবী রয়েছেন আইনি বিভাগের দায়িত্বে। বিজেপির আইনি শাখার আহ্বায়ক লোকনাথ চট্টোপাধ্যায় রয়েছেন প্রধান দায়িত্বে। বিজেপি এইভাবে রাজ্যের কমিটি গঠন করেছে। এর পরবর্তীতে জেলায় জেলায় কমিটি গঠন করা হচ্ছে। সেই কমিটিগুলোতেও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে আইনি শাখার উপর।
বিজেপির এই উদ্যোগ দেখে রাজনৈতিক মহল প্রশ্ন করছে তবে কি বুথের লড়াই এর থেকে কোর্টের লড়াই বিজেপির কাছে বেশি প্রাধান্য পাবে?
এই ব্যাপারে লোকনাথ চট্টোপাধ্যায় একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, “গণতন্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হচ্ছে আদালত। বিরোধী রাজনীতির ক্ষেত্রে এটি বিশেষ করে কার্যকর। যখন আইন শৃঙ্খলা ভেঙে পড়ে কিংবা গণতন্ত্রের স্তম্ভ সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না কিংবা পুলিশ প্রশাসন নিষ্ক্রিয় থাকে তখন আদালত ছাড়া আর কোন উপায় থাকে না।” কিন্তু নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি ঘোষণা হলে আদালতের কি কোন গুরুত্ব থাকবে? এই প্রশ্নের জবাবে লোকনাথ বাবু বলেছেন, “আদালতের ভূমিকা নির্বাচনের বিষয় খুবই কম। কিন্তু সুষ্ঠু ও গণতান্ত্রিকভাবে যদি কিছু করতে হয় তবে আমি মনে করি আদালতের বড় ভূমিকা রয়েছে।”
রাজ্য বিজেপির আশঙ্কা, গত ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের মত মনোনয়ন জমা থেকে ভোট পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক সংঘাতের জন্য আদালতের দ্বারস্থ হতে হবে তাদের। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী রাজ্যের নেতাকর্মীদের আইনি লড়াইয়ের জন্য ইতিমধ্যেই সাহায্য চেয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের। এই সকল কর্মকাণ্ড থেকে স্পষ্ট যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে নিজেদের আইনি বিভাগ যথেষ্ট গুরুত্ব সহকারে দেখছে রাজ্য বিজেপি।