বাংলা হান্ট ডেস্ক : ফের কি ঘনিয়ে আসছে কোনও বিপদ? আমেরিকায় (America) পাওয়া গেল কিছু রহস্যময় সংকেত। সেদেশের পূর্ব উপকূল অর্থাৎ আটলান্টিক মহাসাগরের (Atlantic Ocean) উপকূল বরাবর ৫ হাজার মাইল এলাকা ঢাকা পড়ে গিয়েছে শৈবাল বা শ্যাওলাতে। এই ঘটনাকেই বিপদের সংকেত বলে মনে করছেন অনেকেই। এই বাদামী রঙের কার্পেটের মতো শৈবাল ছড়িয়ে পড়েছে ফ্লোরিডা (Florida) থেকে মেক্সিকোর (Mexico) সমুদ্র তট পর্যন্ত।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, শৈবালের এই পুরু প্রাচীর নাকি মহাকাশ থেকেও স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। জানা যাচ্ছে, শৈবালের এই ছড়িয়ে পড়া নিয়ে বেশ চিন্তিত বৈজ্ঞানিক মহল। ‘গ্রেট আটলান্টিক সাগরকুসুম বেল্ট’ নামে এই শৈবালের প্রাচীর পশ্চিম আফ্রিকা উপকূল থেকে মেক্সিকো উপকূল পর্যন্ত বিস্তৃত। এর ওজন আনুমানিক ২০ মিলিয়ন টন। এটিই পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সমুদ্র শৈবাল।
বিজ্ঞানীদের মতে, খোলা জলে এই শৈবাল যথেষ্ট সুরক্ষিত। মাছেদের খাদ্য হিসাবেও ব্যবহৃত হয় এই শৈবালের স্তর। এছাড়া কিছু প্রজাতির মাছের আবাসস্থল হিসাবে ব্যবহৃত হয় এই শৈবাল। জল থেকে কার্বনডাই-অক্সাইডকে শোষণ করে সমুদ্রে অক্সিজেনের মাত্রা স্বাভাবিক রাখে। কিন্তু এই শৈবালই এবার ঢেউয়ের ধাক্কায় ক্রমচ পশ্চিম দিকে সরে যাচ্ছে। যার ফলে ক্যারিবিয়ান উপকূলে গিয়ে জমে যাচ্ছে এই বিরাট শৈবাল প্রাচীর।
কী বিপদ হতে পারে শৈবালের এই স্থানান্তর হওয়াতে? বৈজ্ঞানিকরা মনে করছেন, এই ভাবে শৈবাল ক্রমশ পশ্চিম দিকে সরে গেলে দমবন্ধ হয়ে যেতে পারে সামুদ্রিক প্রবালের। যার জেরে নষ্ট হতে পারে সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্র। এরই সঙ্গে নষ্ট হতে পারে সমুদ্রের জলের গুণাগুণ। বিশেষজ্ঞ মহল সতর্ক করে জানিয়েছেন, আগামী এক সপ্তাহ বা এক মাসে এই পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে।
ফ্লোরিডা আটলান্টিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামুদ্রিক বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ব্রায়ন লাপোইন্টে বলেন, ‘এ এক অদ্ভুত দৃশ্য। স্যাটেলাইটের ছবিতেও দেখা যাচ্ছে। সমুদ্রের জন্য এটা কখনই ভালো নয়।’ ব্রায়ন প্রায় ৪০ বছর ধরে এই বিষয়ে পড়াশোনা করছেন। তিনি জানান, এই বিরাট শৈবাল প্রাচীর বিভিন্ন ঋতুতে বিভিন্ন হয়। এই বছর পরিস্থিতি ভিন্ন বলেই মনে করেন তিনি।