বাংলাহান্ট ডেস্কঃ বুধবার সকাল ১০ টায় প্রকাশিত হয়েছিল মাধ্যমিকের (Madhyamik Pariksha) ফলাফল। সেই সঙ্গে প্রকাশ করা হয়েছিল মেধা তালিকাও। এরপরই বদলে যায়, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার সুন্দরবনের (Sundarbans) মথুরাপুর এক নম্বর ব্লকের কৃষ্ণচন্দ্রপুর হাই স্কুলের ছাত্র রখিয়াজের বাড়ির পরিবেশ। এবারও প্রথমের ধারা বজায় রেখে, স্কুলের মধ্যে ফার্স্ট হয়ে দেখাল সে।
সাংসারিক অর্থাভাব
সংসারের টানাটানি অবস্থা। রখিয়াজ মোল্লার বাবা একজন দিনমজুর এবং মা সামান্য সেলাই ফোরাই করে। মাসিক আয় বলতে কোনও মাসে দেড় হাজার, কোনও মাসে নয়শো, আবার কোন মাসে আরও কম। দুবেলার দুমুঠো খাবাও জোগাড় করতেই তারা হিমশিম খেয়ে যেত। আর সেখানে প্রাইভেট টিউশন তো অনেক দূরের কথা। এমনকি মায়ের সাথে সেলাইয়ের কাজে যোগ দেওয়ার ফলে স্কুলেও যেতে পারত না ঠিকমতো।
সাহায্য করতেন স্কুল শিক্ষক
স্কুল শেষে প্রধান শিক্ষক চন্দন মাইতি এসে সমস্ত পড়া বুঝিয়ে দিয়ে যেতেন। তা সত্ত্বেও কোনদিন প্রথম বই দ্বিতীয় হয়নি সে। সেই ধারা অক্ষুণ্ণ রেখে, মাধ্যমিকেও স্কুলের মধ্যে প্রথম হয়ে দেখাল রখিয়াজ। স্কুলের ছাত্রের এই সাফল্যে আনন্দিত তাঁর স্কুলের সমস্ত শিক্ষকেরাও।
করোনা আতঙ্কের মাঝে আবার প্রাকৃতিক দুর্যোগ আমফানে তাঁদের ঘরের চাল উড়ে গিয়েছিল। সেই সময়ও তাঁদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল স্কুলের প্রধান শিক্ষক চন্দন মাইতি। চাল-ডাল, ত্রিপল থেকে যাবতীয় সবকিছু দিয়েই তিনি সাহায্য করেছিলেন।
ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখে রখিয়াজ
বাংলায় ৯৭, অঙ্কে ৯৯, ভূগোলে ১০০ পেয়েছে রখিয়াজ, তাঁর মোট প্রাপ্ত নম্বর ৬৮১। এবার বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশুনা করে ভবিষ্যতে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখে রখিয়াজ। তবে এই অভাবের সংসারে ছেলের স্বপ্ন কি অধরাই থেকে যাবে? রখিয়াজের বাবা, মা এবং প্রধান শিক্ষকও অপেক্ষা করে আছে, কোন মিরাক্কেল ঘটার। হয়ত আকাশ পথে কোন ফরিস্তা এসে তাঁদের সাহায্য করবে। তবে রাখিয়াজের মাস্টারমশাই অনুরোধ করেছেন, কোন সহৃদয় ব্যক্তি বা কোন সংস্থা পারলে এগিয়ে আসুন রাখিয়াজের পাশে।