পৃথিবীতে এসেছিল ৭২ সেকেন্ডের এলিয়েন সিগন্যাল, এবার উদ্ঘাটিত হল রহস্য

বাংলা হান্ট ডেস্ক: ১৯৭৭ সালের ১৫ আগস্ট, অর্থাৎ আজ থেকে প্রায় অর্ধশতক আগে একটি এলিয়েন বার্তা এসে পৌঁছেছিল পৃথিবীতে। পরে জানা যায় যে, ওই বার্তার স্থায়িত্ব ছিল মাত্র ৭২ সেকেন্ড। মূলত, বিগ ইয়ার রেডিও টেলিস্কোপে ধরা পড়েছিল সেই মহাজাগতিক বার্তা। এমতাবস্থায়, অদ্ভুত এই বার্তা পেয়ে রীতিমতো হইচই পড়ে যায় বিজ্ঞানীমহলে। প্রত্যেকেই ওই বার্তার উৎসস্থল খুঁজতে আগ্রহী হয়ে পড়েন।

যদিও, এই ঘটনার পর প্রায় ৪৫ বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও সম্প্রতি জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন যে, ঠিক কত দূর থেকে এই বার্তা এসে পৌঁছে ছিল পৃথিবীতে। এমনকি সেই বার্তার চিহ্নিতকরণও করেছেন বিজ্ঞানীরা। মূলত, অদ্ভুত সেই সিগন্যালকে “Wow” হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বিখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী জেরি এম্যান ওই বার্তাটির ফ্রিকোয়েন্সিও খুঁজে পেতে সক্ষম হয়েছেন।

বিজ্ঞানীরা মনে করেছিলেন যে, মহাকাশের কোনো দূরের নক্ষত্রজগৎ থেকেই এই বার্তা পৃথিবীতে এসেছে। পাশাপাশি এই সংক্রান্ত গবেষণাও শুরু হয় পুরো দমে। তারপরেই মহাজগতিক বিভিন্ন তরঙ্গের সঠিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে এক্সটার্নাল টেরিস্টেরিয়াল ইন্টেলিজেন্স (SET) কাজ শুরু করে। সেখানেই এই বার্তার উৎস সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। জানা গিয়েছে যে, মূলত, ৬৬ জি এবং কে ধরণের নক্ষত্র থেকেই পৃথিবীতে এসেছে এই সিগন্যাল।

পরে আরো বিস্তারিত বিশ্লেষণের মাধ্যমে জানা যায় যে, সূর্যের মতো কোনো নক্ষত্রজগৎ থেকেই এসেছে এই বার্তা। পাশাপাশি, সেখানে প্রাণের অস্তিত্ব থাকার সম্ভাবনাও রয়েছে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। এমনকি, বিজ্ঞানীরা আরও জানিয়েছেন যে, পৃথিবী থেকে ওই ধরণের নক্ষত্রজগতের দূরত্ব হল প্রায় ১ হাজার ৮০০ আলোকবর্ষ।

ইতিমধ্যেই এই সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ অ্যাস্ট্রোবায়োলজিতে প্রকাশিত হয়েছে। মূলত, ওই “রহস্যজনক” বার্তার উৎস সম্পর্কে জানতে গিয়ে প্রায় ৫৫০ টি নক্ষত্রের উপর গভীরভাবে দৃষ্টি রেখেছিলেন বিজ্ঞানীরা। সেখানেই তাঁরা গবেষণার মাধ্যমে জানতে পারেন, যে সকল নক্ষত্রের তাপমাত্রা ৪,৪৫০ থেকে ৬,০০০ কেলভিনের মধ্যে রয়েছে সেইরকম নক্ষত্র থেকেই এমন বার্তা আসতে পারে।

wow

এমতাবস্থায়, সূর্যেরও তাপমাত্রা প্রায় ৫,৭৭৮ কেলভিন। পাশাপাশি, সূর্য আবার একটি জি টাইপের নক্ষত্রও বটে। আর সেই কারণেই বিজ্ঞানীরা মনে করেছেন, যে নক্ষত্র থেকে এই এলিয়েনের বার্তা এসেছিল সেখানে প্রাণের অস্তিত্বও থাকতে পারে। এদিকে, প্রায় ৪৫ বছর আগে পৃথিবীতে আসা ওই ধরণের বার্তার পর এত বছর কেটে গেলেও নতুন করে কোনো সিগন্যাল এখনও আসেনি।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর