বাংলা হান্ট ডেস্কঃ শহরের বিপজ্জনক বাড়িগুলি নিয়ে সংস্কারের জন্য আগেই পুর আইন সংশোধন করা হয়েছে। কিন্তু বিধি সরলীকরণ করা হলেও এই বাড়ি সংস্কারের কাজ কে করবে? এবার সেই প্রশ্নই এবার ঘুরপাক খাচ্ছে বিভিন্ন মহলে। জানা যাচ্ছে, ইতিমধ্যেই শহরের বিপজ্জনক বাড়িতে থাকা ভাড়াটেদের বাসিন্দা শংসাপত্র প্রদান করেছে পুরসভা (Kolkata Municipal Corporation)।
কলকাতা পুরসভার (Kolkata Municipal Corporation) বিপজ্জনক বাড়ি নিয়ে মিটছে না সমস্যা
বিপজ্জনক বাড়ি সংস্কারের পুর আইন সংশোধন করা হয়েছে আগেই। সেই সমস্ত বাড়িতে থাকা ভাড়াটেদের ‘বাসিন্দা শংসাপত্র’ প্রদান করেছে পুরসভা। বছর দেড়েক আগে ভেঙে পড়া, উত্তর কলকাতার পাথুরিয়াঘাটা স্ট্রিটের বিপজ্জনক বাড়ির ভাড়াটেদের হাতে সেই শংসাপত্র তুলে দিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। কিন্তু বাসিন্দা শংসাপত্র ভাড়াটেদের হাতে তুলে দেওয়া হলেও মালিক বেপাত্তা হওয়ায় বিপজ্জনক বাড়িটির সংস্কার করা যাচ্ছে না।
বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি পুরসভার (Kolkata Municipal Corporation) বাজেট অধিবেশনে প্রশ্ন তুলেছিলেন স্থানীয় ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল পুরপ্রতিনিধি ইলোরা সাহা। তাঁর প্রশ্ন ছিল, ‘বিপজ্জনক বাড়ির মালিক সংস্কারে এগিয়ে না এলে ভাড়াটেদের বাসিন্দা শংসাপত্র দিয়ে কী লাভ?’ যদিও ইলোরার প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি মেয়র।
প্রসঙ্গত ২০২৩ সালের ১৬ অগস্ট রাতে ৬৫বি পাথুরিয়াঘাটা স্ট্রিটে একটি বিপজ্জনক বাড়ির ভেঙে পড়ার ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল এক দম্পতির। এরপর আবার ২০১৬ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর ওই বাড়িটির কাছেই আরও একটি বিপজ্জনক বাড়ি ভেঙে পড়ে। সেক্ষেত্রে একই পরিবারের দুই বধূর মৃত্যু হয়েছিল। শতাব্দী প্রাচীন এই সমস্ত বিপজ্জনক বাড়ি গুলিতে বিপদ হতে পারে জেনেও সেখানে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন বহু ভাড়াটে। এসবের মাঝে বাড়িওয়ালা-ভাড়াটের দ্বন্দ্বে থমকে আছে বহু বিপজ্জনক বাড়ি সংস্কারের কাজ।
আরও পড়ুন: ছাব্বিশের মাধ্যমিক নিয়ে বড় খবর! ভোটের জন্য এগোবে পরীক্ষা? সামনে নয়া আপডেট
অনেক ভাড়াটের এক্ষেত্রে প্রশ্ন, সংস্কার-পর্ব শেষ হলেই তাঁরা যে আবার ওই বাড়িতে ফিরতে পারবেন, সেই নিশ্চয়তা কে দেবে? এই ভয়েই সংস্কারের কাজ শুরু হলেও বাড়ি ছাড়তে নারাজ ভাড়াটেরা। তাই এই সমস্যার সমাধান করতে ইতিমধ্যেই কলকাতা পুরসভা (Kolkata Municipal Corporation) বিপজ্জনক বাড়ির সংস্কারের ক্ষেত্রে বিধি সরলীকরণ করেছে। ১৯৮০ সালের কলকাতা পুরসভা আইনের ৪১২-এ ধারা সংশোধন করার পাশাপাশি, দীর্ঘদিন ধরে বিপজ্জনক বাড়িতে বসবাস করা ভাড়াটেদের হাতে বাসিন্দা শংসাপত্র তুলে দিয়েছে পুরসভা। এরফলে এবার বাড়ির সংস্কার-পর্ব শেষ হওয়ার পর বাসিন্দারা আবার সেখানে এসে থাকতে পারবেন।
উল্লেখ্য সম্প্রতি পুরসভার (Kolkata Municipal Corporation) বাজেট অধিবেশনে পুরপ্রতিনিধি ইলোরা বলেছিলেন,তাঁর ওয়ার্ডের বিপজ্জনক বাড়িগুলির ভাড়াটেদের হাতে বাসিন্দা শংসাপত্র দেওয়া হলেও বেপাত্তা বাড়ির মালিকরাই। তাই তিনি বলেছিলেন, ‘এ বিষয়ে পুরসভা আইন প্রণয়ন করে বিপজ্জনক বাড়ি দখল করে সংস্কারের কথা ভাবতে পারে।’ কিন্তু তাঁর এই প্রস্তাব শুনে মেয়র সাফ জানিয়ে দেন, বেসরকারি মালিকানাধীন কোনও বিপজ্জনক বাড়ি পুরসভা দখল করতে পারে না। কিন্তু প্রশ্ন হল তাহলে এই বিপজ্জনক বাড়িগুলির সমস্যার সমাধান হবে কীভাবে? জবাবে মেয়র এদিন জানান, ‘কোনও বাড়ি বেশি রকম বিপজ্জনক হয়ে পড়লে আমরা আদালতের দ্বারস্থ হব।’