বাংলাহান্ট ডেস্কঃ মারণ ভাইরাস করোনার জেরে সারা বিশ্ব তোলপাড়। তার সঙ্গে চলছিল লকডাউন। এর জন্যে বিভিন্ন রাজ্যে লক্ষ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক আটকে পড়েন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নির্দেশিকার পরে ট্রেনের বন্দোবস্ত করা হলেও অনেকেই তার আগে থেকে হেঁটে বাড়ি ফেরার চেষ্টা করছেন। পথে যাতে শ্রমিকদের খাবার ও জলের কোনও সমস্যা না হয় সেই ব্যাপারে কেন্দ্রকে নির্দেশ দেওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) দ্বারস্থ হয়েছিলেন এক আইনজীবী। সেই আবেদন খারিজ করে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিল, এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হবে সরকারকেই।
শুক্রবার আইনজীবী অলোক শ্রীবাস্তব দেশের শীর্ষ আদালতে একটি পিটিশন ফাইল করেন। সেখানে তিনি আবেদন করেন, সুপ্রিম কোর্টের উচিত কেন্দ্রকে নির্দেশ দেওয়া যাতে এই পরিযায়ী শ্রমিকদের চিহ্নিত করে তাঁদের খাবার ও জলের ব্যবস্থা করা হয়। এই আবেদনের ব্যাপারে মহারাষ্ট্রের ঔরঙ্গাবাদে ট্রেনের ধাক্কায় লাইনে ঘুমিয়ে পড়া ১৬ জন শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনার কথাও উল্লেখ করা হয়।
আবেদন খারিজ করে দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, “এটা আদালতের সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয় নয়। কারণ, কোথায় কত পরিযায়ী শ্রমিক হাঁটছেন, সেটা আদালত নজরে রাখতে পারবে না। এটা সরকারের সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়। কাউকে হেঁটে ফিরতে দেওয়া হবে কিনা, যাঁরা হাঁটছেন তাঁদের খাবার ও জলের ব্যবস্থা হচ্ছে কিনা প্রভৃতি বিষয় সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য। কেউ রেললাইনে ঘুমিয়ে পড়েছেন কিনা, সেটা কী ভাবে সুপ্রিম কোর্ট নজর রাখতে পারবে।”
খবরের কাগজ পড়ে ওই আইনজীবী এই আবেদন করেছেন বলে তাঁকে ভর্ৎসনাও করে দেশের শীর্ষ আদালত। বিচারপতি বলেন, “প্রত্যেক আইনজীবী খবরের কাগজ পড়ে সেখান থেকেই সব বিষয়ে জ্ঞানী হয়ে যাচ্ছেন। আপনাদের জ্ঞান ওই খবরের কাগজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাই সরকারেকেই সিদ্ধান্ত নিতে দিন। এতে আদালতের কিছু শোনার বা বলার নেই। আমরা আপনাকে বিশেষ পাস দেব। গোটা দেশ ঘুরে সরকারের নির্দেশ কার্যকর করতে পারবেন?”
এদিন কেন্দ্রের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা (tusar meheta) উপস্থিত ছিলেন শুনানিতে। তিনি বলেন, “কেন্দ্রের তরফে ইতিমধ্যেই পরিযায়ী শ্রমিকদের তাঁদের রাজ্যে ফেরার জন্য ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ট্রেনে খাবারও দেওয়া হচ্ছে। শ্রমিকদের কোনও খরচ করতে হচ্ছে না। কিন্তু কেউ যদি তাঁর সময় আসা অবধি অপেক্ষা না করতে চান, কেন্দ্র কী করবে? রাজ্যর সঙ্গে কথা বলেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রত্যেকের সময় আসবে। সেটুকু অপেক্ষা করতেই হবে। কিন্তু যাঁরা পায়ে হেঁটে বা অন্য উপায়ে ফিরছেন, তাঁদের দিকে নজর দেওয়ার জন্য রাজ্যগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের খাবার ও যাতায়াতের বন্দোবস্ত রাজ্যগুলিকেই করতে হবে। কেন্দ্র এ ব্যাপারে কোনও জোর খাটাতে চাইছে না।”