বাংলা হান্ট ডেস্ক: অতীত হোক কিংবা বর্তমান মানুষ বরাবরই জাত বিচার করে থাকেন। দাদু-ঠাকুমাদের মুখে বেশ গল্প শোনা যায় আগেকার সময় কিভাবে জাতি ভেদাভেদ করা হত। তবে এবার পশ্চিমবাংলায় (West Bengal) এমন একটি প্রজাতির মানুষের খোঁজ মিলল যাঁদের বর্তমানে বাস হাতে গোনা কয়েকটি। সময়ের আবহে বিলুপ্ত হয়েছেন তাঁরা। তাদের বিস্তার ব্রিটিশ আমলের আগে থেকে। না তাঁরা হিন্দিভাষী, না তাঁরা বাংলাভাষী। তবে পশ্চিমবঙ্গে একসময় তাঁদের বিস্তার ছিল বিশাল। নিচু সম্প্রদায় হওয়ার কারণে হতে হয়েছে বর্ণভেদের শিকার। আজকের প্রতিবেদনে জানাবো সেই জাতিরই মানুষের কথা।
বাংলায় (West Bengal) খোঁজ মিলল বিরল জাতির মানুষ:
জানা যায়, একসময় সমাজের উচ্চ শ্রেণীর মানুষেরা তাঁদের ভালো চোখে দেখতেন না। পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার কারণে নানা রকমের বঞ্চনার শিকার হতে হত। তবে কালের নিয়মে তাঁরা নিজেদেরকে বদলেছেন। বদলেছেন জীবনধারা, সেই সাথে পরিবর্তন এনেছেন নিজেদের স্বভাব আচরণেও। বলা যায় এখন তাঁরা উচ্চশ্রেণীর সংস্কৃতি রপ্ত করেছেন। আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতোই জীবিকা নির্বাহ করেন। পশ্চিমবঙ্গ (West Bengal) কিংবা উড়িষ্যায় এখনও রয়েছে তাঁদের ছাপ, তবুও হাতেগোনা।
জানা গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গে (West Bengal) নতুনভাবে এক জাতিকে আবিষ্কার করেছেন গবেষকরা। আর সেই জাতি হচ্ছে শিয়ালগিরি সম্প্রদায়। বলা হয় এই জাতি নিম্ন সম্প্রদায় অন্তর্ভুক্ত। তাঁদের পেশা ছিল শিকার। জানা যায় বাংলা ওড়িশার সীমান্ত এলাকায় হাতেগোনা কয়েকটি মৌজায় বসবাস শিয়ালগিরি সম্প্রদায়ের মানুষজনের। এমনকি জানা যায়, কয়েক পুরুষ আগে তাঁদের ভাষা ছিল অন্যরকম।
আরও পড়ুনঃ ছোট্ট একটা ভুলেই বড় বিপদ! আবাসের বাড়ি তৈরিতে ফের সমস্যা?
শিয়ালগিরি সম্প্রদায়ের মানুষজন ঠিক কোন ভাষায় কথা বলত: গবেষকরা যে নতুন জাতির আবিষ্কার করেছেন তাঁরা বাংলা কিংবা হিন্দিতে কথা বলতেন না। তাঁদের ভাষার মধ্যে ছিল কিছুটা গুজরাটি অপভ্রংশ আবার কিছুটা হিন্দি। বলা যায় একপ্রকার মিশ্রিত ভাষায় কথা বলতেন তাঁরা। এক সময় শিকার করে দিন কাটলেও বর্তমানে পেশাতেও বদল এসেছে। গবেষকদের মতে, এখন অনেকেই আবার শবর সম্প্রদায়ের সার্টিফিকেট পেয়েছে। আর এই নিয়ে মতান্তর সৃষ্টি হয়। তবে গবেষকরা দাবি করছেন এনারা কেউই শবর সম্প্রদায় নয় বরং শিয়ালগিরি সম্প্রদায়েরই অন্তর্ভুক্ত। বর্তমানে পশ্চিমবাংলায় (West Bengal) যে জাতি বিলুপ্ত হওয়ার পথে।