বাংলা হান্ট ডেস্ক: ইতিমধ্যেই পামবান সেতুর (Pamban Bridge) কাজ প্রায় শেষ! পাশাপাশি, রেলওয়ে (Indian Railways) বোর্ডের চেয়ারপার্সন জয়া ভার্মা সিনহা ঘোষণা করেছেন যে পামবান রেলওয়ে সেতু (ভারতের প্রথম ভার্টিক্যাল-লিফ্ট সেতু) রামেশ্বরম দ্বীপের সাথে মূল ভূখণ্ডকে সংযুক্ত করবে। পাশাপাশি, ব্রিজটি অপারেশনাল প্রস্তুতির দ্বারপ্রান্তে রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। উল্লেখ্য যে, তিনি এই প্রকল্পের অগ্রগতি মূল্যায়ন করতে সম্প্রতি রামেশ্বরমে সফরের পরে জানান যে “রিকনস্ট্রাকশন”-এর অগ্রগতি মসৃণভাবে চলছে।
জানিয়ে রাখি যে, এই নতুন পামবান সেতু সমুদ্রের ওপর তৈরি ভারতের প্রথম ভার্টিক্যাল-লিফট রেলওয়ে ব্রিজ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এটি পামবান দ্বীপের রামেশ্বরম এবং মূল ভূখণ্ডের মন্ডপমের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করবে। রেল বিকাশ নিগম লিমিটেড দ্বারা আনুমানিক ৫৩৫ কোটি ব্যয়ে পুরানো পামবান সেতুর সমান্তরালে নতুন ব্রিজটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এমতাবস্থায়, বর্তমান প্রতিবেদনে আজ আমরা এই সেতুর ১০ টি চমকপ্রদ তথ্য উপস্থাপিত করছি।
১. নতুন পামবান সেতুর সবচেয়ে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে অন্যতম হল এটির ভার্টিক্যাল লিফট ক্যাপাবিলিটি। এর ফলে ব্রিজের নীচে নৌ চলাচল বাধাহীন ভাবে হবে। এই ভার্টিক্যাল লিফট স্প্যানটিতে ট্রেন কন্ট্রোল সিস্টেমের সাথে সংযুক্ত ইলেক্ট্রোমেকানিক্যাল কন্ট্রোল ফিচার্স উপলব্ধ থাকবে।
২. এই সেতুটিতে ভবিষ্যতে বৈদুতিকরণের ব্যবস্থাও করা যাবে। যেটি বর্তমানে ভারতীয় রেলের ব্রডগেজ নেটওয়ার্ক জুড়ে সম্পূর্ণ বৈদুতিকরণের বিস্তৃত লক্ষ্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ রয়েছে।
৩. নতুন পামবান ব্রিজের সাবস্ট্রাকচারটি ডাবল লাইনের জন্য তৈরি করা হয়েছে এবং নেভিগেশনাল স্প্যানেও ডাবল লাইনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: পড়ুয়াদের জন্য বড় পদক্ষেপ! বই খুলে দেওয়া যাবে পরীক্ষা, কবে থেকে হবে শুরু? জেনে নিন বিস্তারিত
৪. এই ভার্টিক্যাল লিফট প্রক্রিয়া, দেশের একটি অনন্য উদ্ভাবন। যেটি নেভিগেশনের জন্য ৭২.৫ মিটারের সম্পূর্ণ “Horizontal Clearance” প্রদান করবে।
৫. সেতুর ভার্টিক্যাল লিফট সেকশনের নীচে শিপিং ট্র্যাফিকের পাসের সুবিধার্থে, রেল ট্র্যাফিক সাময়িকভাবে বন্ধ করা হবে। নৌ চলাচলের স্প্যানটি ভার্টিক্যালি আরোহণ করবে যাতে নৌ চলাচলের জন্য পর্যাপ্ত ক্লিয়ারেন্স উপলব্ধ হয়।
৬. নতুন পামবান সেতুতে ১৮.৩ মিটারের ১০০ টি স্প্যান এবং ৬৩ মিটারের একটি নেভিগেশনাল স্প্যান থাকবে। এছাড়াও, এটি পূর্বের সেতুর চেয়ে ৩ মিটার লম্বা হবে, এবং সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২২.০ মিটার ওপরে একটি নেভিগেশনাল এয়ার ক্লিয়ারেন্স প্রদান করবে।
৭. কাটিং-এজ টেকনোলজিতে সমৃদ্ধ স্টেইনলেস স্টিল রিইনফোর্সমেন্ট, কম্পোজিট স্লিপার, এবং একটি লং লাস্টিং পেইন্টিং সিস্টেমের মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তি এই নতুন সেতু নির্মাণে রেলওয়ে দ্বারা ব্যবহার হয়েছে।
আরও পড়ুন: ১০,০০০ টাকা থেকে বানিয়েছেন ৩৪,৭০০ কোটির কোম্পানি! দান করেছেন ৯৬ কোটি, অবাক করবে কিরণের কাহিনি
৮. দক্ষিণ রেলওয়ের মতে, ২.০৫ কিলোমিটার দীর্ঘ নতুন এই পামবান সেতুটি দ্রুত ট্রেন চলাচলের সুবিধা দেবে এবং দেশের ভূখণ্ড এবং রামেশ্বরম দ্বীপের মধ্যে ট্রাফিক বাড়াবে।
৯. ২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নতুন পামবান সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। রেল বিকাশ নিগম লিমিটেড ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে কাজ শুরু করেছিল। এমতাবস্থায়, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে এই কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও করোনার মতো ভয়াবহ মহামারীর কারণে এই সময়সীমা বাড়ানো হয়েছিল।
১০. জানিয়ে রাখি যে, পূর্ববর্তী সেতুটির উচ্চ জোয়ারের স্তর এবং গার্ডারের নীচের মধ্যে মাত্র ১.৫ মিটারের সীমিত ভার্টিক্যাল ক্লিয়ারেন্স ছিল। যার ফলে সমুদ্রের জল গার্ডারের ওপর ছড়িয়ে পড়ত। এদিকে, ১৯৮৮ সালে রোড ব্রিজ নির্মাণের আগে, মান্নার উপসাগরের মন্ডপম এবং রামেশ্বরম দ্বীপের মধ্যে ট্রেন পরিষেবাই একমাত্র সংযোগ হিসাবে কাজ করত।