ছোট একটা চিপই এখন মাথাব্যথার কারণ! চাইলেও চিনকে ছাড়তে পারছেনা আমেরিকা

বাংলা হান্ট ডেস্ক: বিশ্বের অন্যতম দুই শক্তিশালী দেশ আমেরিকা (America) ও চিনের (China) মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই উত্তেজনা চলছে। কিন্তু আমেরিকা চাইলেও চিনকে ছাড়তে পারছে না। ইতিমধ্যেই ওই দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে বর্তমানে চিন সফরে গিয়েছেন মার্কিন অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন। এদিকে, আমেরিকা ও চিনের মধ্যে তিক্ত সম্পর্কের কারণে সেমিকন্ডাক্টর কোম্পানিগুলি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

শুধু তাই নয়, উভয় দেশ একে অপরের কোম্পানির উপর বিভিন্ন বিধিনিষেধও আরোপ করেছে। এই প্রসঙ্গে মার্কিন আধিকারিকরা জানিয়েছেন, চিনের মিলিটারি ও সার্ভিল্যান্স কার্যক্রমে আমেরিকান প্রোডাক্টস স্থাপন করা হয়েছে। তাই চিনে চিপস ও চিপমেকিং ইকুইপমন্ট পাঠানোর ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। কারণ, আমেরিকা চায় এগুলি দেশেই তৈরি হোক। এজন্য কোম্পানিগুলিকে ভালোরকমের ইনটেনসিভও দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু মার্কিন কোম্পানিগুলির জন্য এটা করা সহজ নয়।

এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, মার্কিন চিপ কোম্পানিগুলির জন্য চিন হল একটি বড় বাজার। এর কারণ হল, সেখানে প্রচুর পরিমাণে এই ধরণের প্রোডাক্টস তৈরি করা হয়, যেখানে সেমিকন্ডাক্টর অর্থাৎ চিপ ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। এর মধ্যে রয়েছে স্মার্টফোন, ডিশওয়াশার, গাড়ি এবং কম্পিউটার। এগুলি সারা বিশ্বে রপ্তানি করা হয়।

এদিকে, বিশ্বের মোট সেমিকন্ডাক্টর বিক্রির ক্ষেত্রে চিনের এক-তৃতীয়াংশ অবদান রয়েছে। পাশাপাশি, কিছু আমেরিকান কোম্পানির রেভিনিউ ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ আসে শুধুমাত্র চিন থেকে। এছাড়াও, একাধিক কোম্পানি রয়েছে যারা আমেরিকায় চিপ তৈরি করছে কিন্তু সেগুলি অ্যাসেম্বলিং ও টেস্টের জন্য পাঠানো হয় চিনে। এমতাবস্থায়, আমেরিকায় এর জন্য নতুন কারখানা স্থাপন করতে অনেক বছর সময় লাগবে। অর্থাৎ সেমিকন্ডাক্টর শিল্প অনেকাংশেই চিনের ওপর নির্ভরশীল।

চিনের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখতে বাধ্য আমেরিকা: উল্লেখ্য যে, গত মে মাসে চিন সরকার মার্কিন চিপমেকার কোম্পানি মাইক্রন টেকনোলজিসকে চিনে নিষিদ্ধ করে। এই প্রসঙ্গে জানানো হয় যে, ওই কোম্পানিটি সাইবার সিকিউরিটি রিভিউতে ব্যর্থ হয়েছে। এদিকে, সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে যে, এই নিষেধাজ্ঞার ফলে তাদের আয়ের প্রায় ১২ শতাংশ কমে যাবে।

This is why America cannot leave China even if it wants to

জানিয়ে রাখি যে, গত জুন মাসে এই কোম্পানিটি চিনে তাদের বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিষয়ে ঘোষণা করেছে। মূলত, ওই কোম্পানিটি ৬০ কোটি ডলারের বিনিয়োগের মাধ্যমে জিয়ান শহরে একটি চিপ প্যাকেজিং ফ্যাসিলিটি তৈরি করবে। অর্থাৎ, আমেরিকান কোম্পানিগুলি যে চাইলেও চিন ছাড়তে পারে না, এটাই তার স্পষ্ট প্রমাণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বিশেষ করে, চিপ শিল্পের ক্ষেত্রে চিনের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখা অত্যন্ত বাধ্যতামূলক। আর এই কারণেই আমেরিকাও চিনের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ক্ষেত্রে জোর দিচ্ছে।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর