বাংলা হান্ট ডেস্ক: ফের একবার হিংসাত্মক ঘটনার জেরে খবরের শিরোনামে উঠে এল আফগানিস্তান (Afghanistan) জানা গিয়েছে, এবার দেশের রাজধানী কাবুলে পাক দূতাবাস লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়েছে। যার ফলে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন এক পাক নিরাপত্তা রক্ষী। এমতাবস্থায়, ইসলামাবাদের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে যে, পাক কূটনীতিবিদ উবেদই-উর-রেহমান নিজামানিকেই হত্যার ষড়যন্ত্র করে এই গুলি চালনার ঘটনা ঘটে। তবে, নিরাপত্তারক্ষীর তৎপরতায় তিনি প্রাণে বেঁচে যান।
এই প্রসঙ্গে কাবুল পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত শুক্রবার পাক দূতাবাস থেকে বেরোনোর মুহূর্তে পাক কূটনীতিবিদ উবেইদ-উর-রেহমান নিজামনির উপর হামলা চালানো হয়। এমনকি, তাঁর উদ্দেশ্যে গুলি ছোঁড়া হলে তৎক্ষণাৎ উবেইদের নিরাপত্তা রক্ষী তথা পাক জওয়ান ইসার মহম্মদ তাঁকে ধাক্কা মেরে সরিয়ে দেন। যার ফলে সেই গুলিটি লাগে ইসারের দেহে। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে কাবুলের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এমতবস্থায়, চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তাঁর অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক। এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, গত মাসেই কাবুলে পা রাখেন উবেইদ-উর-রেহমান। আপাতত ওই পাক দূতাবাসের হেড অফ স্টেট পদে রয়েছেন এই কূটনীতিবিদ।
এদিকে, কাবুলের দূতাবাসে এহেন ভয়াবহ হামলার পর ঘটনাটির পরিপ্রেক্ষিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। শুধু তাই নয়, একটি টুইটের মাধ্যমে তিনি পাক কূটনীতিবিদকে “হত্যার চেষ্টা”-র ঘটনায় কড়া নিন্দা করেছেন। যদিও, এই ঘটনার পরেও এখনই দূতাবাস বন্ধ করা হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে ইসলামাবাদের তরফে।
কেন ঘটল এমন ঘটনা: প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, এমনিতেই গত কয়েক মাস ধরে আফগানিস্তান সীমান্ত লাগোয়া এলাকাগুলিতে পাক সেনার উপর ক্রমশ হামলা চালিয়ে যাচ্ছে তেহেরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান বা TTP-র জঙ্গিরা। যার ফলে চাপ বেড়েছে পাক সরকারেরও। ইতিমধ্যেই ইসলামাবাদের তরফে অভিযোগ তোলা হচ্ছে যে, এই সমস্ত হামলার নেপথ্যে আফগানিস্তানের তালিবান সরকারের মদত রয়েছে। এমনকি, হামলা চালিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে TTP জঙ্গিরা সরাসরি আফগানিস্তানে আশ্রয় নিচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছে পাক সরকার।
এদিকে, চলতি সপ্তাহেই পাক বিদেশমন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী হিনা রব্বানি খার আফগানিস্তানের তালিবান সরকারের সঙ্গে বৈঠক সারেন। ঠিক সেই আবহেই তিনি কাবুল থেকে ফেরার মাত্র একদিনের মধ্যেই এই ভয়াবহ হামলা চালানো হয়। বিশেষজ্ঞরা অনুমান করছেন যে, ওই বৈঠকে TTP-র বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে তালিবান সরকারের উপর ক্রমশ চাপ তৈরির চেষ্টা করেছে পাকিস্তান। যার ফলে এই হামলার পেছনে TTP -র যুক্ত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলে দাবি করেছেন তাঁরা। এদিকে, ঘটনাটির পরিপ্রেক্ষিতে কাবুল পুলিশের এক মুখপাত্র জানিয়েছে যে, দূতাবাস সংলগ্ন একটি বাড়ি থেকেই হামলাটি চালানো হয়। তবে, ইতিমধ্যেই এই হামলায় যুক্ত থাকতে পারে এমন এক সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যদিও, এখনও পর্যন্ত এই হামলার দায় স্বীকার করেনি কোনো জঙ্গি সংগঠন।