বাংলা হান্ট ডেস্কঃ প্রত্যাশা মতোই এদিন সিবিআইয়ের (CBI) বিশেষ আদালতে জামিন পেলেন না তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) নেতা অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal)। আগামী চার দিন পুনরায় সিবিআই হেফাজতেই থাকতে হবে বীরভূম জেলা সভাপতিকে। এর মাঝেই এবার গরু পাচার মামলায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার নজরে উঠে এলো অনুব্রতর তিন অপারেটরের নাম। এমনকি, সিবিআইয়ের চার্জশিটেও তাদের নাম উল্লেখ রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। গরু পাচার মামলায় কিভাবে অনুব্রত এবং তাঁর অপারেটররা সম্পূর্ণ দুর্নীতিকে পরিচালনা করতেন, তা জানতে বদ্ধপরিকর সিবিআই।
উল্লেখ্য, এদিন সিবিআই হেফাজত থেকে আদালতে নিয়ে আসা হয় অনুব্রত মণ্ডলকে। সেখানে অসুস্থতার প্রসঙ্গকে আদালতের সামনে তুলে ধরা হলেও অবশেষে কেষ্টর জামিনের আবেদন খারিজ করে দেন বিচারক। ফলে আগামী চার দিন সিবিআই হেফাজতেই থাকতে হতে চলেছে অনুব্রতকে। এর মাঝে আবার তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে উঠে চলা একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্যকে হাতিয়ার করেই তদন্তকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে মরিয়া সিবিআই। এই মুহূর্তে তৃণমূল কংগ্রেস নেতার তিন অপারেটরের খোঁজ পেয়েছে সিবিআই আধিকারিকরা; তারা হলেন আব্দুল লতিফ, বিদ্যুৎ গায়েন এবং রাজীব ভট্টাচার্য।
সিবিআই সূত্রের খবর, আব্দুল লতিফের নাম তাদের চার্জেশিটে ইতিমধ্যেই উল্লেখ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ইলামবাজার হাটে গরু কেনাবেচা নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি এনামুল হক এবং সায়গল হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যমে আব্দুল লতিফ অনুব্রতর কাছে টাকা পৌঁছে দিতে বলে দাবি সিবিআইয়ের। সূত্রের খবর, অপর দুই অপারেটর রাজীব ভট্টাচার্য এবং বিদ্যুৎ গায়েন বীরভূম জেলা সভাপতির রাইস মিল ও অন্যান্য সকল সংস্থার অপারেটর পদে নিযুক্ত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ রাজীব ভট্টাচার্যকে ইতিমধ্যে সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়তে হয়েছে। যদিও তাঁর বিরুদ্ধে উঠে চলা সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন রাজীব। বর্তমানে একাধিক সম্পত্তির মালিক রাজীবের দাবি, “অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে রাজনৈতিক দিক থেকে সম্পর্ক থাকলেও বর্তমানে ব্যবসায়িক সম্পর্ক নিয়ে যে অভিযোগ উঠে চলেছে, তা মিথ্যা। এর কোন রকম ভিত্তি নেই। অতীতেও সিবিআইয়ের তরফ থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আমাকে ডেকে পাঠানো হয়। তখন তাদের কাছে সবকিছুই খুলে বলি।”
উল্লেখ্য, গতকাল বোলপুরে অনুব্রত মণ্ডলের ভোলে বোম রাইস মিলে তল্লাশি চালায় সিবিআই। বর্তমানে এই রাইস মিলটি অনুব্রত মণ্ডলের স্ত্রী এবং কন্যার নামে রয়েছে। গতকাল রাইস মিলের ভেতর প্রবেশ করতেই চক্ষু চড়ক গাছ হয়ে যায় তদন্তকারী অফিসারদের। এর ভিতর একাধিক বিলাসবহুল গাড়ি দেখে হতবাক হয়ে পড়েন সকলেই। প্রসঙ্গত, বর্তমানে রাজীব ভট্টাচার্যের মোট পাঁচটি রাইস মিল রয়েছে। এ প্রসঙ্গে তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হলে রাজীব জানান, “আমার নামে যে রাইস মিলগুলি রয়েছে, সেগুলি আমি ব্যাঙ্ক থেকে লোন নিয়ে ক্রয় করি। এক্ষেত্রে কোনরকম দুর্নীতি হয়নি। আমি চাই না, রাজনীতিতে এসে উল্টে এরই শিকার হয়ে যাই। দ্রুত যেন সকল তদন্তের কিনারা হয়।”
একইসঙ্গে ভোলে বোম রাইস মিল প্রসঙ্গে তিনি জানান, “প্রথমদিকে এই রাইস মিলটির দেখাশোনা করেছিলাম। তবে পরবর্তী সময়ে অনুব্রতর মেয়ে এটি চালাতো বলে জানি।”