বাংলাহান্ট ডেস্ক : উত্তর ২৪ পরগনার গোবরডাঙায় তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতিকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে খুনের চেষ্টা। পুরো ঘটনায় অভিযুক্ত ওই অঞ্চল প্রধানেরই খুড়তুতো ভাই। গুরুতর আহত অবস্থায় আক্রান্ত তৃণমূল নেতা কল্যাণ দত্তকে ভর্তি করা হয় কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে। আশঙ্কাজনক অবস্থাতেই এখন সেখানে চিকিৎসাধীন তিনি। ঘটনার জেরে তুমুল উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়।
গোবরডাঙার বেড়গুম ২ নম্বর অঞ্চলের সভাপতি কল্যাণ দত্ত। বুধবার রাতে তাঁদের পারিবারিক জমিজমা সংক্রান্ত বচসা চরমে ওঠে। হঠাৎই ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাঁর উপর চড়াও হন তাঁরই খুড়তুতো ভাই জয়দীপ দত্ত। এলোপাথারি কোপানো হয় তাঁর গলায় ঘাড়ে। স্থানীয় সূত্রে দাবি, দীর্ঘদিন ধরেই দুই পরিবারের মধ্যে পারিবারিক জায়গাজমি নিয়ে বিবাদ চলছিল। সম্প্রতি একটি পুকুর বেআইনি ভাবে ভরাট করার প্রতিবাদ করেন কল্যাণ। বাধাও দেন পুকুর ভরাটের কাজে। প্রতিবেশীদের দাবি, তার জেরেই আরও চরমে ওঠে বচসা। এরপরই বুধবার রাতে ঘটে ওই ঘটনা।
ঘটনার পর থেকেই পলাতক অভিযুক্ত জয়দীপ দত্ত। এহেন ঘটনার প্রতিবাদে এদিন সকাল থেকেই সোচ্চার হন স্থানীয় তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা। ঘটনার প্রতিবাদে এদিন সকাল ৮ টা নাগাদ হাবড়া বসিরহাট রোডের প্রতাপনগর এলাকায় শুরু হয় পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ। চূড়ান্ত উত্তেজনা এবং চাঞ্চল্য ছড়ায় গোটা এলাকায়। পুরো ঘটনার প্রেক্ষিতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয় গোবরডাঙা থানায়।
বিক্ষোভ চলাকালীন এলাকায় যান হাবড়া ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অজিত সাহা। পুরো ঘটনায় পুলিশের ভুমিকা নিয়েই প্রশ্ন তোলেন তিনি। অভিযগ ওঠে এহেন ঘটনা ঘটলেও অভিযুক্তদের ধরতে পারছে না পুলিশ। এরপর আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে যান গোবরডাঙা থানার আধিকারিকরা। ২৪ ঘন্টার মধ্যেই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করার আশ্বাস দেন তাঁরা। পুলিশের এহেন আশ্বাসের পর ওঠে পথ অবরোধ।
পুরো বিষয়টিতে অভিযোগের তীর স্বভাবতই বিজেপির দিকেই রেখেছে তৃণমূল। এবিষয়ে রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূল বিধায়ক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘গতকাল রাতে কোপানো হয়েছে। পায়ে, মাথায়, কোমড়ে, পেটে আঘাত করা হয়। বিজেপির অভ্যাস হয়ে গেছে এটা দাবি করা যে, বিজেপির কর্মীরা কেউ মারা গেলে, সেটা তৃণমূল মেরেছে, সিবিআই হবে। আর তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী বিজেপির হাতে মারা গেলে সেটা তৃণমূলের কলহ করছে। শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদার এই দুজন বাংলাকে উত্তপ্ত করছে। বাংলার ভাল চাইলে মুখে লিকোপ্লাস্ট মেরে বসে থাকুন।’
যদিও পুরো অভিযোগই অস্বীকার করেছে বিজেপি। ব্যাপারটিকে তৃণমূলের ভিতরের ব্যাপার বলে উল্লেখ করে বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক দেবদাস মণ্ডল বলেন, ‘গোবরডাঙায় যাঁকে কুপিয়েছেন তিনি তৃণমূল, যিনি কুপিয়েছেন তিনিও তৃণমূল। এখন তৃণমূল, তৃণমূলকে মারছে।’ বিক্ষোভ স্তিমিত হলেও এখনও যে চাপা উত্তেজনার আগুন রয়েইছে গোটা এলাকায় তা বলাই বাহুল্য।