বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দুর্নীতি ইস্যুতে জেরবার তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress)। প্রভাব পড়েছে দলের সংগঠনে। একদিকে একের পর এক নেতা মন্ত্রীদের গ্রেফতারি, আবার অপরদিকে দলীয় কোন্দল। সব মিলিয়ে বিতর্ক চরমে আর এবার সেই অস্বস্তি বাড়িয়ে দলীয় সকল পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে বসলেন আসানসোলের (Asansol) নেতা বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায় (Biswajit Chatterjee)। ভবিষ্যতে তৃণমূলের হয়ে কাজ করলেও দলীয় সকল পদ থেকে তাঁর ইস্তফা দেওয়ার কারণটি বর্তমান রাজনীতিতে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
এদিন সকালে আচমকাই একটি ফেসবুক পোস্ট করে দলের সকল পথ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়। উল্লেখ্য, তিনি দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সদস্য পদে নিযুক্ত ছিলেন। এদিন ফেসবুক পোস্টে তৃণমূল নেতা লেখেন, “আমি বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়। রাজ্য যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক। দলের সব পদ থেকে ইস্তফা দিলাম। কারণ, ভবিষ্যতে আমার বিরুদ্ধে যদি কোন চক্রান্ত হয় কিংবা আমি চক্রান্তের শিকার হই, তবে আমার দল কিংবা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কেউ দায়ী নন।” বর্তমানে অবশ্য সেই ফেসবুক পোস্টটি ডিলিটও করে দিয়েছেন বিশ্বজিৎবাবু।
তবে দলের সকল পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার প্রসঙ্গে তিনি অনড়। এ প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা বলেন, “বর্তমানে বিরোধী দলগুলি সবাই মিলে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে নোংরা রাজনীতি করে চলেছে। আজ আমি সকল পদ থেকে ইস্তফা দিলাম। তবে তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে কাজ করব। এটাকে অন্যভাবে দেখা উচিত নয়। বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে যেভাবে সবাই শুধুমাত্র পদের জন্যই প্রতিযোগিতায় নেমেছে, এক্ষেত্রে তার বিরুদ্ধে একটা বার্তা বলতে পারেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেককে ভালোবেসে আমি দলের পাশেই থাকবো। এক্ষেত্রে আমার কোনরকম ক্ষোভ নেই।”
প্রথমে ফেসবুক পোস্ট, পরে সেটি ডিলিট এবং নিজের স্বপক্ষে যুক্তি, সব মিলিয়ে বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের ইস্তফা নিয়ে বঙ্গ রাজনীতিতে চর্চার শেষ নেই। উল্লেখ্য, বর্তমান সময় দাঁড়িয়ে যেভাবে নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি থেকে অন্যান্য একাধিক মামলায় নাম জড়িয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের, তাতে ক্রমশই অস্বস্তি বেড়ে চলেছে। প্রতিদিনই দুর্নীতি মামলায় যুক্ত হয়ে চলেছে একাধিক তৃণমূল কংগ্রেস নেতা-মন্ত্রীদের নাম। ইতিমধ্যে পার্থ চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু করে অনুব্রত মণ্ডলরা গ্রেফতার হয়েছেন। এই প্রসঙ্গে কোনো নেতা কিংবা মন্ত্রী দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকলে তার দায় যে তৃণমূল দল নেবে না, তা আগেই জানিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
সেই কথাটি উল্লেখ করে এদিন বিশ্বজিৎবাবুর ইস্তফাকে বেশ প্রাসঙ্গিক বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও তৃণমূল নেতার ইস্তফাকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। বিজেপি নেতা বাপ্পা চট্টোপাধ্যায় জানান, “তৃণমূল বর্তমানে চোরেদের দল হয়ে গিয়েছে। রাঘববোয়াল থেকে শুরু করে চুনোপুটিরাও ধরা পড়তে চলেছে। এই কারণেই আবার এখন অনেকে ইস্তফা দিচ্ছে। ওরা একটা সময় দুর্নীতি করতে ব্যস্ত ছিল আর এখন যখন গোয়েন্দা সংস্থাগুলি তদন্ত শুরু করেছে, তখন বাঁচার জন্য ইস্তফা দিয়ে বেড়াচ্ছে। তবে দুর্নীতি করে থাকলে কখনোই ছাড় পাবে না।”