বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ২০ মে ২০২০ পশ্চিমবঙ্গের বুকে আছড়ে পড়ে বিধ্বংসী আমফান ঘূর্ণিঝড়। রাজ্যে লক্ষ লক্ষ মানুষ এই ঘূর্ণিঝড়ের ফলে প্রভাবিত হয়েছিল। চলে গিয়েছিল অনেকের মাথার ছাদ। একদিকে করোনা মহামারী, আরেকদিকে আমফান ঘূর্ণিঝড় একেবারে শাঁখের করাত হয়ে উঠেছিল। রাজ্যে আমফান আক্রান্তদের জন্য কেন্দ্র এবং রাজ্য দুই সরকারই ত্রাণের ঘোষণা করেছিল। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় NDRF এর টিম আমফানে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়েছিল।
আমফান ঝড় চলে যাওয়ার পর রাজ্যে আমফান ত্রাণ বিলি নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ করে বিরোধীরা। এমনকি রাজ্যে আমফান ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় শাসক দলের নেতা-নেত্রী এবং ঘনিষ্ঠরা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়েও ত্রাণ পায়, কিন্তু আসল ক্ষতিগ্রস্তদের হাতে কিছুই আসেনা। এই নিয়ে মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদিয়া সহ একাধিক জায়গায় ক্ষতিগ্রস্তরা প্রতিবাদ জানিয়েছিল। রাস্তায় নেমে দেখিয়েছিল বিক্ষোভ। কিন্তু তাতেও খুব একটা বেশি সুরাহা হয়েছিল না।
বিরোধীরা বরাবরই অভিযোগ করে এসেছিল যে, তৃণমূল আমফানের ত্রাণ বিলির নামে ব্যাপক দুর্নীতি করেছে। পাকা বাড়ির মালিকরা ত্রাণ পেয়েছে, বাড়ি তৈরি করার টাকা পেয়েছে, কিন্তু আসল ক্ষতিগ্রস্তরা কিছুই পায়নি। আমফানের ত্রাণ দুর্নীতিতে বেশ কিছু তৃণমূল নেতার নামও প্রকাশ্যে উঠে এসেছিল। এরপর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন যে, আমফানের ত্রাণ বিলি নিয়ে কিছুটা ভুল হয়েছে ঠিকই কিন্তু সব ক্ষতিগ্রস্তরাই ত্রাণ পেয়েছে। বিরোধীরা সরকার এবং শাসক দলের নামে ইচ্ছাকৃত ভাবে কুৎসা রটাচ্ছে।
আর এবার আমফান ঝড়ের প্রায় এক বছর পর ত্রাণ নিয়ে আবারও দুর্নীতি প্রকাশ্যে এল। বিজেপির টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে একটি সংবাদমাধ্যমের ভিডিও পোস্ট করে তৃণমূলের ত্রাণ পাচারের ফন্দি ফাঁস করেছে। ভোটের ঠিক আগে আমফানের ত্রাণ টোটোয় করে পাচার করার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের নেতাদের বিরুদ্ধে। ত্রাণের সামগ্রী পাচারের সময় বিজেপির কর্মীরা তৃণমূলের নেতাকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন।
আমফানের ত্রাণ চোর তৃণমূল, আবার প্রমাণিত! pic.twitter.com/lMZxGfYBxk
— BJP Bengal (@BJP4Bengal) April 4, 2021
অভিযোগ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার কুলপি বিধানসভা তৃণমূলের ব্লক নেতা পরীক্ষিত নস্করের বাড়ি থেকে টোটো করে পাচার হচ্ছিল আমফানের ত্রাণ। এছাড়াও এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন আরও দুই তৃণমূল নেতা। যারা তৃণমূল বিধায়ক যোগরঞ্জন হালদারের অনুগামী। ভোটের আগে ভোটার কেনার উদ্দেশ্যে আমফানের ত্রাণ পাচার করার অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। এখন প্রশ্ন হল প্রায় এক বছরের পর আমফানের ত্রাণ কীভাবে সামনে এল?