বাংলা হান্ট ডেস্কঃ শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court) চত্বরে নজিরবিহীন ঘটনা ঘটে। সুপার নিউমেরারি পোস্ট বিষয়ক মামলার শুনানি ছিল সেদিন। সেই শুনানি শেষ হতেই উচ্চ আদালত চত্বরে বিক্ষোভ শুরু হয়। একদল চাকরিপ্রার্থীর বিক্ষোভের মুখে পড়েন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য (Bikash Ranjan Bhattacharya), ফিরদৌস শামিমরা। কেন এই মামলায় দ্রুত রায় দেওয়া হচ্ছে না? এই প্রশ্ন তুলে শুরু হয় বিক্ষোভ। এবার এই নিয়ে আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়ালেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। সিপিএম নেতাদের নিশানা করলেন তিনি।
বিকাশ-শামিমকে ঝাঁঝালো আক্রমণ কুণালের (Kunal Ghosh)!
তৃণমূল নেতা বলেন, ‘এসএলএসটি শারীরশিক্ষা এবং কর্মশিক্ষা চাকরিপ্রার্থীদের ঘিরে কলকাতা হাইকোর্টে একটি ঘটনা ঘটে। প্রতিনিধিরা দেখা করার জন্য আসেন। এদের অবিলম্বে নিয়োগের ক্ষেত্রে যে স্থগিতাদেশ রয়েছে, সেটা তুলে নিয়োগ করা উচিত। এরা সবাই যোগ্য। সিবিআইয়ের কোনও অভিযোগ নেই। সেই কারণে মুখ্যমন্ত্রী রেকমেন্ডেশন লেটার দিয়েছেন। তবে এরপর সিপিএমের আইনজীবীরা তাঁদের জটিলতায় ফেলছেন’।
কুণাল দাবি করেন, গতকাল এই চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে কয়েকজন ‘যন্ত্রণা’য় বিক্ষোভ দেখান। ‘অসুবিধা হলে পুলিশ-প্রশাসন দেখবেন। তবে সিপিএমের উকিল যে গুণ্ডামি করলেন… একটা কাল কা যোগী, নাম বদলের আইনজীবী। তিনি বলছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ক্ষমতায় থাকতে দেবেন না। তৃণমূল যদি মনে করে তোমায় পাড়ায় থাকতে দেবে না, তুমি কোথায় যাবে? তৃণমূল কংগ্রেস এই নীতিতে বিশ্বাস করে না’।
আরও পড়ুনঃ ‘মমতা যদি বলেন..,’ শিক্ষাকর্মীদের জন্য ভাতা ঘোষণা করতেই আসরে বিকাশরঞ্জন, ফের নয়া মামলা?
এখানেই না থেমে সংবাদমাধ্যমের সামনে একের পর এক ছবি তুলে ধরতে শুরু করেন তৃণমূলের (Trinamool Congress) রাজ্য সাধারণ সম্পাদক। প্রশ্ন করেন, এরা যখন ধর্নায় বসেছিলেন, তখন মহম্মদ সেলিম কী করছেন? ‘লজ্জা হয় না? বিকাশ ভট্টাচার্য আবার চাকরি আটকাচ্ছেন। সুজন চক্রবর্তী এদের ধর্নায় বসে রয়েছেন। ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি যিনি এদেরই চাকরির জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন… আর বিকাশ উচ্চ আদালতে চাকরি আটকাচ্ছে, কত বড় দু’নম্বরি’।
কুণাল (Kunal Ghosh) দাবি করেন, আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য একদা এনাদের পক্ষে ছিলেন। উনি ২৭ লক্ষ টাকা নিয়েছেন বলে দাবি করেন তৃণমূল নেতা। আর আজ তিনিই বাধা দিচ্ছেন। ‘উনি বলছেন টাকা নিয়ে কাজ করেছি। তবে এটা কোন পেশাদারিত্ব? টাকা নিয়ে যাদের হয়ে কাজ করেছেন, তাঁদেরই চাকরি আটকাতে মামলা করেছেন!’
বিকাশের পাশাপাশি এদিন শামিমকেও নিশানা করেন কুণাল। তিনি বলেন, ‘যত ইচ্ছা গালাগাল দাও ভাই শামিম। মঞ্চে তুমি কী করতে গিয়েছিলে? ৭ লাখ নিয়েছেন শামিম। এদের সঙ্গে ছিলেন। আজ কেন বিরোধিতা করছেন? একদিন এরা আমায় আমন্ত্রণ জানান। আমি গেলাম। মুখ্যমন্ত্রীর রেকমেন্ডেশন লেটারে চাকরি হল। এরা শামিমকে ফুল দিতে যান। এরপর উনি পোস্টও করেন। এরপর এখন চাকরির বিরোধিতায় নেমেছে’।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্ট চত্বরে চেম্বারে প্রবেশের সময় একদল চাকরিপ্রার্থীর বিক্ষোভের সম্মুখীন হন বিকাশরঞ্জন, শামিম। এবার সেই চাকরিপ্রার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েই সুর চড়ালেন তৃণমূল নেতা কুণাল (Kunal Ghosh)। একসময় যাদের থেকে টাকা নিয়েছেন, আজ তাঁদেরই চাকরির বিরোধিতায় নেমেছেন! দাবি করেন তিনি।