বাংলাহান্ট ডেস্ক : পুরভোটের মুখে তোলপাড় তৃণমূলের অন্দর। একদিকে নেতা নেত্রীদের বিক্ষোভ অন্যদিকে দলের অন্দরে ভাঙন। এরই মধ্যে মুকুল রায়ের পথেই হাঁটতে দেখা গেল আরেক নেতাকে।
একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বাগদা কেন্দ্র থেকে বিজেপির টিকিটে জেতার পর গতবছর ৩১ আগষ্ট তৃণমূলে যোগ দেন বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস। মাঝখানে মাস পাঁচেক দিব্যি তৃণমূলের হয়েই কাজ করছিলেন তিনি। কিন্তু আজ হঠাৎই উলটো সুর শোনা গেল তাঁর গলায়। এদিন মধ্যমগ্রামের তৃণমূল কার্যালয় থেকে বেরিয়ে তিনি সাফ জানালেন তিনি বিজেপিতেই আছেন।
এদিন তৃণমূলের কার্যালয় থেকে বেরিয়ে বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘আসন্ন পুরভোটে গোবরডাঙা এবং বনগাঁ পুরসভায় বিজেপির ভালো ফল হওয়া উচিত। লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচনের ফলের ভিত্তিতে জেতা উচিত বিজেপিরই।’ যদিও দলের বিরুদ্ধে কিঞ্চিৎ অনুযোগও শোনা গেছে তাঁর গলায়। তাঁর অভিযোগ, ‘আমার মতন নেতাকে ভালো করে ব্যবহার করতে পারছে না বিজেপি। শুধুই কোন্দল দলে।’
একুশের ভোটের আগেই একদিন বিধানসভার করিডরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে সাষ্টাঙ্গে প্রণাম ঠুকতে দেখা গিয়েছিল বিশ্বজিৎকে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘কী রে, ডিসিসান নিলি?’ এরপর মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক সারেন তিনি। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির টিকিটে জেতার কয়েক মাস পরই তৃণমূলে যোগ দেন বাগদার বিধায়ক। কিন্তু এদিন হঠাৎই উলটপুরাণ গাইলেন তিনি।
তৃণমূলের তরফে এখনও এই ব্যাপারে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া না গেলেও বিষয়টি নিয়ে বিশ্বজিৎকে কটাক্ষ করেন দিলীপ ঘোষ। এদিন তিনি বলেন, ‘দলত্যাগ বিরোধী আইন প্রয়োগ হবে বুঝতে পেরেই এখন ওসব বলছেন উনি। কিন্তু এসব করে কিছুই লাভ নেই।’
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কৃষ্ণনগর কেন্দ্র থেকে বিজেপির টিকিটে বিধায়ক হলেও ভোটের পরই মুকুল রায়কে দেখা যায় তৃণমূলের কার্যালয়ে। সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর সামনেই তাঁকে উত্তরীয় পরিয়ে দলে ফিরিয়ে নেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এতদিন তৃণমূলের তরফেই কাজ করছিলেন মুকুল। কিন্তু এর মধ্যেই তাঁর বিধায়ক পদ খারিজের দাবি জানান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এই নিয়ে সপ্তাহ খানেক আগে বৈঠক বসে বিধানসভায়।
সেখানে মুকুল রায়ের আইনজীবী তাঁর দল প্রসঙ্গে দাবি করেন তৃণমূলে নয়, বরাবর বিজেপিতেই আছেন মুকুল। তৃণমূলের কার্যালয়ে যাওয়া নেহাতই রাজনৈতিক সৌজন্য। এরপরই যথোপযুক্ত যুক্তি না পেয়ে মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজের আবেদন বাতিল করেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। যার জেরে এখন আবার বিজেপিতেই ফিরেছেন মুকুল রায়।