‘শুধরে যান, নাহলে মারধর করা হবে!” প্রকাশ্যে পুলিশকে হুমকি তৃণমূল বিধায়কের

বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: তৃণমূল নেতাদের না বুঝে কথা বলার ঘটনা নতুন কিছু নয়। এমন ঘটনা প্রায়শই ঘটে থাকে যেখানে তারা ক্যামেরা এবং জনগণের সামনে তাদের মনের ভাব চেপে রাখতে ব্যর্থ হন। ফলস্বরূপ এমন কিছু তথ্য ফাঁস করে বসেন বা এমন কিছু বিবৃতি দিয়ে ফেলেন যা দলের সদস্যদের বেকায়দায় ফেলে দেয়। সম্প্রতি এমন ঘটনা ফের ঘটেছে। বেফাঁস মন্তব্য করে, পুলিশকে মারধরের হুমকি দিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছেন চোপড়ার তৃণমূল বিধায়ক হামিদুল রহমান। যদিও তারপরেই ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করেছেন সেই অঞ্চলের তৃণমূল নেতৃত্ব। তবে ততক্ষণে সাধারণ মানুষের কাছে যা বার্তা যাওয়ার তা পৌঁছে গিয়েছে।

৬ই এপ্রিল তৃণমূলের তরফে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের ভদ্রকালী এলাকায় একটি কর্মীসভার আয়োজন করা হয়েছিল। সেই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে উপস্থিত হয়েছিলেন চোপড়ার বিধায়ক হামিদুল রহমান। বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে তিনি তার অভিযোগের নিশানা ঘোরান বিজেপি নেতৃত্বের দিকে।

একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের কর্মী হিসেবে অন্য রাজনৈতিক দলের কর্মীদের দিকে আঙুল তোলার ঘটনা নতুন কিছু নয়। এত অবধি কোনও সমস্যা ছিল না। কিন্তু এরপর নজিরবিহীনভাবে পুলিশকে নিজের আক্রমণের নিশানা করেন বিধায়ক। তার বক্তব্যে উপস্থিত তৃণমূল কর্মীরা অস্বস্তিতে পড়েন, কারণ তিনি বলেছিলেন যে ইসলামপুর থানার রামগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক হিসাবে দায়িত্বে থাকা পুলিশ প্রধান পিন্টু বর্মনই হচ্ছেন সেই এলাকার যাবতীয় সন্ত্রাসের মূল। তার দাবি ছিল চোপড়া এবং সংলগ্ন এরিয়ায় অশান্তির জন্য সেই পুলিশ অফিসারই দায়ী। যদিও পরে জানা তার কিছু শাগরেদকে সেই পুলিশ অফিসার জেলে ঢোকানোয় ক্ষুব্ধ ছিলেন হামিদুল। তাই তিনি প্রকাশ্য সভাতেই যাবতীয় অভিযোগ নাম করে করতে শুরু করেন এবং তারপরেই গন্ডগোলটি ঘটে।

tmc mla 5

কর্মীসভায় দাঁড়িয়ে এরপর হামিদুর রহমান হুমকি দিয়ে বলেন, “এখনই শুধরে যান, নাহলে থানায় বিক্ষোভ হবে। প্রয়োজনে পুলিশদের মারধরও করা হতে পারে।” হামিদুরের এই বক্তব্যেই এখন সরগরম রাজ্য-রাজনীতি। একজন বিধায়ক হওয়া সত্ত্বেও কিভাবে এহেন উস্কানিমূলক মন্তব্য করেন , তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। তৃণমূল নেতৃত্ব এর নিন্দা করেছেন সেইসঙ্গে অনেকে জানিয়েছেন দলের ভেতর এমন কেউ করলে দলনেত্রী আগেও তাদের শাসন করেছেন, ভবিষ্যতেও করবেন। যদিও সেই মন্তব্যে শান্ত হতে নারাজ তৃণমূল বিরোধীরা। তারা দাবি করেছেন যে তৃণমূল দলনেত্রী নিজেই অতীতে বিভিন্ন সময়ে পুলিশের গায়ে হাত তোলার মতন কুরুচিকর মন্তব্য করেছেন, তাই এমন একজনের ধমকে তার দলের নেতাদের মনের দীর্ঘমেয়াদি কোনও পরিবর্তন হওয়া সম্ভব নয়।


Reetabrata Deb

সম্পর্কিত খবর