বাংলা হান্ট ডেস্কঃ এক সময় পূর্ব মেদিনীপুরে (Purba Medinipur) অধিকারী পরিবারের উপর নির্ভর করে একের পর এক নির্বাচন হেসে খেলে জিতেছে তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress)। তবে বর্তমানে সেই অধিকারী পরিবারই ক্রমশ গলার ‘কাঁটা’ হয়ে উঠেছে তাদের কাছে। আর এবার সেই কাঁটা উৎখাত করতে তৎপর হয়ে উঠল রাজ্যের শাসক দল। শিশির অধিকারীর পর এবার তাঁর ছেলে দিব্যেন্দু অধিকারীর (Dibyendu Adhikari) সাংসদ পদ খারিজের জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দিল তৃণমূল কংগ্রেস।
উল্লেখ্য, গত বছর বিধানসভা নির্বাচনে শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেন। এরপর থেকেই অধিকারী পরিবারের সঙ্গে ক্রমাগত দূরত্ব সৃষ্টি হতে থাকে দলের। বর্তমানে খাতায়-কলমে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও তাদের একাধিক পদক্ষেপ যে দলের বিরুদ্ধেই গিয়েছে, তা কাঁচের মত স্বচ্ছ। সে কারণে অতীতেই শিশির অধিকারীর বিরুদ্ধে সাংসদ পদ খারিজের জন্য একাধিক নথি সংসদে জমা করে ঘাসফুল শিবির আর এবার দিব্যেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধেও সেই একই পন্থা নিতে চলেছে তারা।
ঘটনার সূত্রপাত সম্প্রতি দেশের বুকে অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সময় থেকেই। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মুর বিরুদ্ধে বিরোধী শিবির থেকে প্রার্থী করা হয় যশবন্ত সিনহাকে। পরবর্তীতে তাঁকে সমর্থন জানিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বের তরফ থেকে সকল বিধায়ক এবং সাংসদদের নির্দেশ দিয়ে জানানো হয়, “সকলকে বাংলার বিধানসভা এসে ভোট দিতে হবে।” তবে সেই সময় দলের নির্দেশ উপেক্ষা করে দিল্লিতে গিয়ে নিজেদের ভোট দিয়ে আসেন শিশির অধিকারী এবং দিব্যেন্দু অধিকারী। উক্ত সময় অবশ্য দলনেত্রীর পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিলেও গত শনিবার উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র।
এক্ষেত্রে উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোটদান থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নেয় তৃণমূল। তবে সেক্ষেত্রে তাদের সকল বাধা উপেক্ষা করে ভোটদানে অংশগ্রহণ করেন বাবা ও ছেলে। পরবর্তীতে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে একটি চিঠি দিয়ে সতর্ক করা হয় তাদের। চিঠিতে লেখা হয়, “গত ৪ ই আগস্ট আমাদের দেওয়া চিঠিতে দলের সকল সাংসদদের নির্বাচন থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তবে আপনারা নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন। দল এই বিষয়টির উপর নজর রাখছে।”
বর্তমানে চিঠি পাঠানোর পাশাপাশি দিব্যেন্দু অধিকারীর সাংসদ পদ খারিজের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করল তৃণমূল। ইতিমধ্যে সংসদে এই প্রসঙ্গে আবেদন করা হয়েছে। সূত্রের খবর, এক্ষেত্রে উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোটদানের বিষয়টির উল্লেখ রয়েছে। এদিন চিঠি প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করা হলে দিব্যেন্দু অধিকারী জানান, “দিল্লির ঠিকানায় একটি চিঠি এসেছে বলে খবর পেয়েছি। তবে সেখানে জবাব দেওয়ার কোনো বিষয় উল্লেখ করা হয়নি। তাই আমি জবাব দেওয়ার কথা ভাবছি না।”