বাংলাহান্ট ডেস্ক : কোমরের নিচের অংশ কাটা পড়েছে ট্রেনে। দুর্ঘটনায় শরীরের অর্ধেক অংশ চলে গিয়েছে চিরতরে। জীবন যুদ্ধে সে লড়াই করে যাচ্ছে শুধুমাত্র দুটি হাত দিয়ে। উত্তর ২৪ পরগনার নিউ ব্যারাকপুরের বাসিন্দা দেবাশিস সর্দার জীবন যুদ্ধে লড়াই করে চলেছে অর্ধেক দেহ নিয়েই। হাজার প্রতিকূলতার মধ্যেও কিভাবে লড়াই চালিয়ে যেতে হয়, তার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন ২৯ বছরের দেবাশিস।
দেবাশিসের বাড়ি নিউ ব্যারাকপুরে (New Barrackpore) রেল লাইনের পাশে। প্রতিবন্ধী হওয়া সত্ত্বেও সে কারোর মুখাপেক্ষী হয়ে বাঁচতে রাজি নয়। উপার্জনের তাগিদে সে বাড়ির বাইরে বসে ফুল বিক্রি করে। দুহাতের উপর ভর করে প্রতিদিন তাকে যেতে হয় ঠাকুরনগর। সেখান থেকে ফুল কিনে এনে বিক্রি করেন দেবাশিস। গত পাঁচ বছর ধরে এভাবেই জীবন সংগ্রাম চালাচ্ছেন ২৯ বছরের এই যুবক।
দেবাশিস জন্ম থেকেই বিশেষভাবে সক্ষম নন। পাঁচ বছর আগেও সে আর পাঁচটা ছেলের মত স্বাভাবিক জীবন কাটাতো। কিন্তু আচমকা তার জীবনে নেমে আসে অন্ধকার। ক্রমে সবার কাছে অপছন্দের পাত্র হয়ে উঠতে থাকে সে। জীবনের প্রতি বিরক্ত হয়ে সে আচমকা একদিন রেল লাইনে ঝাঁপ দিতে যায়। কিন্তু প্রাণে রক্ষা হয় তার। তবে তার দুটি পা চিরতরে বাদ চলে যায়।
এরপরেই দু হাতের উপর ভর করে শুরু হয় নতুন জীবন। বাড়ির সামনে একটি ছোট্ট গুমটি করে শুরু করে ফুলের ব্যবসা। দেবাশিস জানিয়েছেন, “কারোর কোনরকম সাহায্যের দরকার নেই। শুধু একটা তিন চাকার গাড়ি আর দোকানের পাকা ব্যবস্থা হলেই চলবে। মানসিক অবসাদের কারণে পাঁচ বছর আগে আত্মহত্যা করতে যাই রেল লাইনে। তবে বেঁচে যাই। রোজ ঠাকুরনগর থেকে ফুল এনে বিক্রি করি।”