বাংলা হান্ট ডেস্ক: একটা সময় ছিল যখন দেশের প্রতিটি প্রান্তেই নবীন প্রজন্মের মধ্যে চাকরির আগ্রহ পরিলক্ষিত হত। তবে, সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তন হচ্ছে সবকিছুতেই। সাথে পাল্টে যাচ্ছে মানসিকতাও। এমতাবস্থায়, বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে প্রথাগতভাবে চাকরির পথে না হেঁটে অনেকেই সাহস অবলম্বন করে নিজেদের উদ্যোগ বা স্টার্ট আপ (Startup) শুরু করছেন। পাশাপাশি, তাতে মিলছে সফলতাও। এমতাবস্থায়, বর্তমান প্রতিবেদনে আজ আমরা আপনাদের কাছে এমন একজনের প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করব যাঁর উত্তরণের কাহিনি (Success Story) অবাক করবে সবাইকেই।
মূলত, আজ আমরা নিখিল কামাত (Nikhil Kamath) নামের এক যুবকের প্রসঙ্গে জানাবো যাঁকে বর্তমানে শেয়ার বাজার এবং “Zerodha” কোম্পানির একজন সফল ব্যবসায়ী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু, জেনে অবাক হবেন যে, বর্তমানে কোটি টাকা মূল্যের কোম্পানির মালিক নিখিল একটা সময়ে কল সেন্টারেও কাজ করতেন। পাশাপাশি, স্কুলের গন্ডীও পেরোতে পারেন নি তিনি।
স্কুল ড্রপ-আউট থেকে কোটি টাকার কোম্পানির মালিক: জানা গিয়েছে নিখিল মাত্র ১৭ বছর বয়সেই তাঁর কর্মজীবন শুরু করেছিলেন। সেই সময় তিনি একেবারেই অনভিজ্ঞ ছিলেন। তাই প্রথমে তিনি একটি কল সেন্টারে কাজ করেন। যেখানে তাঁকে প্রতি মাসে ৮ হাজার টাকা করে বেতন দেওয়া হত। আসলে নিখিল স্কুলছুট ছাত্র ছিলেন। পড়াশোনার প্রতি খুব একটা মনোযোগ ছিল না তাঁর। যদিও, কল সেন্টারে কাজ করার সময় নিখিল শেয়ার বাজার সম্পর্কে তাঁর জ্ঞান এতটাই বাড়িয়ে নেন যে এখন তাঁর নাম কোটিপতি ব্যবসায়ীদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
নিখিল কামাত এক বছরের মধ্যেই স্টক মার্কেট সম্পর্কিত সমস্ত তথ্য অর্জন করেছিলেন। শুধু তাই নয়, তিনি বাজারের মূল্য নির্ধারণের বিষয়টিও রপ্ত করেছিলেন। এমতাবস্থায়, তিনি তাঁর এই অভিজ্ঞতাকে নষ্ট হতে না দিয়ে তা ব্যবহার করে শেয়ারবাজারে অর্থ বিনিয়োগ শুরু করেন। যেখান থেকে তিনি প্রচুর লাভ পান।
“Zerodha”-র পথচলা: যেহেতু নিখিলের স্টক মার্কেট সম্পর্কে প্রখর জ্ঞান ছিল, তাই তিনি সেটিকে সীমাবদ্ধ রাখতে চাননি। সেজন্য নিখিল ২০১০ সালে “Zerodha” নামের একটি কোম্পানি শুরু করেন। যা আজ দেশের একটি সুপরিচিত কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে। মূলত, “Zerodha” কোম্পানি এবং শেয়ারবাজারে অর্থ বিনিয়োগের কারণে নিখিল কামাতকে কোটিপতিদের মধ্যে গণ্য করা হয়। তবে তিনি এখনও তাঁর সাফল্য নিয়ে ভয় পান।
এই প্রসঙ্গে নিখিল জানান যে, একজন স্কুল ড্রপ-আউট ছাত্রের পক্ষে নিজের কোম্পানি তৈরি করা এবং কোটি টাকার মালিক হওয়া সহজ নয়। যার কারণে তাঁর সময় হঠাৎ বদলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করেন তিনি। নিখিল এখনও দিনের প্রায় ৮৫ শতাংশ সময়ে কাজের মধ্যেই ব্যস্ত থাকেন। পাশাপাশি, নিখিলের এই সাফল্যের পিছনে, তাঁর বাবার ভূমিকাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিখিলের কোম্পানি শুরু করার সময়ে তাঁর বাবা তাঁকে অর্থ সাহায্য করেন। আর এভাবেই বর্তমানে নিজেকে সকলের কাছে সুপ্রতিষ্ঠিত করে ফেলেছেন নিখিল।