৪০ টাকার বিনিময়ে হাসপাতালের রান্নাঘর থেকে টোটো চার্জ, রহস্যভেদ হল ৮৪ লক্ষ টাকার বিলে

বাংলাহান্ট ডেস্ক : চুরি কত রকমের হতে পারে? তার এক নজির পাওয়া গেল কাটোয়া হাসপাতালে। বেশ কিছু মাস ধরে প্রতিমাসে কয়েক লক্ষ টাকার বিদ্যুতের বিল মেটাচ্ছিল কাটোয়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এত বিল কিসের জন্য? ধরা পড়ছিল না কিছুতেই। তাই গত কয়েক দিন ধরে গোপনে বিষয়টির দিকে অনবরত নজর রাখছিলেন হাসপাতালের সুপার শৌভিক আলম। অবশেষে তিনি যা দেখলেন তাতে মাথা ঘুরে যাওয়ার অবস্থা হয়েছিল সুপার সাহেবের। জানা গেল, এত দিন ধরে হাসপাতালের রান্নাঘরে অবৈধভাবে টোটোয় চার্জ দেওয়ার কাজ চলছিল বহাল তবিয়তে।

অভিযোগ, রান্নার ঠিকাকর্মী ৪০ টাকার বিনিময়ে হাসপাতালের বিদ্যুৎ টোটোচালকদের গাড়ি চার্জ দিতে ব্যবহার করতে দিতেন বেশ কয়েক মাস ধরেই। তাই নিজেদের অজান্তেই কয়েক লক্ষ টাকার বিল মেটিয়ে যাচ্ছিল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। গত তিন মাসে বিল আসে প্রায় ৮৪ লক্ষ টাকা! এই বিরাট চুরি ধরা পড়ল কিভাবে? বৃহস্পতিবার এক টোটো চালককে রান্নাঘরের সামনে টোটোটে চার্জ দিতে দেখা যায়। খবরটি সুপারের কানে পৌঁছলে তিনি সরেজমিনে যান তদন্ত করতে। একেবারে হাতেনাতে ধরাও পড়ে যান ওই ঠিকাকর্মী।

যদিও এখন সমস্ত অভিযোগই অস্বীকার করেছেন ওই ঠিকাকর্মী। তাঁর দাবি, ওই টোটোতেই প্রত্যেকদিন আসে হাসপাতালের বাজার। খাবার সরবরাহকারী ঠিকাদার শিবপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়ও দাবি করেন, টোটোটি তাঁরই। বিদ্যুৎ চুরির অভিযোগ ওঠায় তিনি বলেন, ‘হাসপাতালে রোগীদের আমি খাবার সরবরাহ করি। তাই, এখান থেকেই চার্জ দিই টোটোর ব্যাটারির।’

বিষয়টি নিয়ে কাটোয়া হাসপাতালের সুপার শৌভিক আলম জানিয়েছেন, মাত্র কয়েকদিন আগেই তিনি এই হাসপাতালে সুপারের দায়িত্বে এসেছেন। বিল বেশি আসায় আগেই সন্দেহ হয়েছিল তাঁর। তাই গোপনে নজর রাখছিলেন, কীভাবে কোথা থেকে চুরি হচ্ছে বিদ্যুৎ। কিন্তু রান্নাঘরে থেকেই যে এমন কাণ্ড ঘটছে তা ঘুণাক্ষরেও টের পাননি তিনি।

ঘটনার কথা বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে পৌঁছালে তিনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অভিযোগে ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত ঠিকাকর্মীকে গ্রফতার করেছে কাটোয়া পুলিশ। পুরো বিষয় জানার জন্য জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে তাকে।


Sudipto

সম্পর্কিত খবর