বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ফের একবার আক্রমণাত্মক মেজাজে ধরা দিলেন তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congres বিধায়ক সমীর পাঁজা (Samir Panja)। অতীতেও একাধিক সময় বেফাঁস মন্তব্য করে খবরের শিরোনামে আসেন তিনি আর এবার দলের পঞ্চায়েত প্রধান থেকে শুরু করে সমিতির সভাপতি, পঞ্চায়েত উপপ্রধান এবং অন্যান্য নেতাদের দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তুলে দিলেন সমীরবাবু। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই অস্বস্তিতে পড়েছে শাসক দল।
সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির পাশাপাশি অন্যান্য একাধিক কাণ্ডে অস্বস্তিতে তৃণমূল কংগ্রেস। এই পরিস্থিতিতে যখন একাধিক তৃণমূল নেতা মন্ত্রীরা হেফাজতে, সেই মুহূর্তে পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া দল আর সেই পরিস্থিতিতে এলাকার পঞ্চায়েত প্রধান, উপপ্রধান এবং সমিতির সভাপতিদের বিরুদ্ধেই বিস্ফোরক বক্তব্য করে বসলেন সমীর পাঁজা।
উদয়নারায়নপুরের তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক এদিন বলেন, “বিধায়ক হওয়ার পূর্বে আমার কাছে কত পরিমান সম্পত্তি ছিল এবং পরবর্তী সময়ে সেই সম্পত্তির পরিমাণ ঠিক কত হয়েছে, তার ওপর নজর রাখা উচিত দলের। একইভাবে পঞ্চায়েত প্রধান থেকে শুরু করে উপপ্রধান এবং সভাপতিদের সম্পত্তির পরিমাণের দিকেও নজর দেওয়া হোক।”
একই সঙ্গে তিনি বলেন, “সবকিছু খতিয়ে দেখার প্রয়োজন। যাদের টিকিট দেওয়া হচ্ছে, তারা কখনো দুর্নীতির সঙ্গে কোন রকম আপোষ করেছেন কিনা, তা তদন্ত করে দেখুক দল।” তাঁর এই মন্তব্যের পর ইতিমধ্যে শোরগোল পড়ে গিয়েছে সর্বত্র। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে, তবে কি দলের ভিতরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এবং দুর্নীতিকেই সামনে তুলে ধরলেন তৃণমূল বিধায়ক? যদিও পরবর্তী ক্ষেত্রে কোন রকম প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি সমীরবাবু।
সূত্রের খবর, সমীর পাঁজার এহেন বক্তব্যে খুশি নয় দলীয় নেতৃত্ব। একেই দুর্নীতি ইস্যুতে ব্যাকফুটে দল আর তার ওপর বিধায়কের বক্তব্যে আরও বেকায়দায় পড়তে চলেছে তারা। এই পরিস্থিতিতে বিধায়কের মন্তব্য যে দলের নজর এড়ায়নি, সেই বার্তাও ইতিমধ্যে তাঁকে দেওয়া হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, দলের বিরুদ্ধে সমীর পাঁজার এহেন মন্তব্য এই প্রথম নয়। গত মাসে একটি ফেসবুক পোস্ট করে বিতর্কিত মন্তব্য করেন সমীরবাবু। তিনি লেখেন, “মহান নেত্রী আছেন বলেই আমি দল ছেড়ে যাইনি। গত ৩৮ বছর ধরে মহান এই নেত্রীর সঙ্গে সৈনিক হিসেবে কাজ করে চলেছি। তবে বর্তমানে নিজেকে বড়ই বেমানান লাগছে। আমার মত অবিভক্ত যুব কংগ্রেসের সময় থেকে যারা দলে রয়েছে, তারা কি কোনো গুরুত্ব পাচ্ছেন? আমার যাওয়ার সময় হল, দাও বিদায়!” আর বর্তমানে পঞ্চায়েত প্রধান, উপপ্রধানদের বিরুদ্ধে সমীরবাবুর এহেন বক্তব্য দলের অস্বস্তি আরো বাড়িয়ে তুলল।