বাংলাহান্ট ডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতির ঘূর্ণাবর্তে ফের জড়িয়ে পড়তে চলেছে ভারত (India)। সোমবার মার্কিন কৃষক প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসে ট্রাম্প স্পষ্ট ইঙ্গিত দেন, ভারত, চিন ও থাইল্যান্ডের মতো দেশগুলি কম শুল্কের সুযোগ নিয়ে যে ভাবে কমদামি চাল মার্কিন বাজারে ঢালছে, তা বরদাস্ত করা হবে না। তাঁর দাবি, বিদেশি কমদামি পণ্যে মার্কিন বাজার ভরে যাওয়ায় দেশীয় কৃষকরা বড়সড় ক্ষতির মুখে পড়ছেন। তাই কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় ফের ভারতের উপর অতিরিক্ত শুল্ক বসানোর বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হবে।
ফের ভারতের (India) ওপর শুল্ক চাপানোর পরিকল্পনা:
গত আগস্ট মাসে ট্রাম্প প্রশাসন ভারতের (India) রপ্তানিপণ্যের উপর দুই দফায় মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপায়। সেই সিদ্ধান্তে ইতিমধ্যেই ভারত-মার্কিন বাণিজ্য সম্পর্ক উত্তেজনার পর্যায়ে পৌঁছেছে। তার মধ্যেই এই নতুন মন্তব্য পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। যদিও দীর্ঘদিন ধরেই উভয় দেশ একটি বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনায় ব্যস্ত, কিন্তু তা এখনও সই হয়নি। এই অবস্থায় কৃষকদের অভিযোগের ভিত্তিতে ট্রাম্প নতুন শুল্ক আরোপের পথে হাঁটবেন কি না, তা নিয়েই এখন জল্পনা তুঙ্গে।
আরও পড়ুন: অগ্রহায়ণের শেষে হু-হু করে বাড়ল সোনার দাম, জানুন আজকের লেটেস্ট প্রাইস
বৈঠকে কৃষক প্রতিনিধি দল স্পষ্ট অভিযোগ তোলে যে কম শুল্কের কারণে ভারত (India), চিন ও থাইল্যান্ড মার্কিন বাজারে ‘সস্তা চাল’ ঢালছে এবং এই তিন দেশই প্রধান দোষী বা ‘টপ কালপ্রিট’। তাঁদের দাবি, বর্তমান শুল্কহার একেবারেই যথেষ্ট নয়—শুল্ক দ্বিগুণ না করলে মার্কিন কৃষকদের রক্ষা করা যাবে না। এই অভিযোগ শুনেই ট্রাম্প বলেন, তিনি বিষয়টি দ্রুত খতিয়ে দেখবেন এবং যেসব দেশের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে সেগুলির নাম নথিবদ্ধ করার নির্দেশ দেন। তাঁর ভাষায়, ভারতীয় চালের উপর বড়সড় শুল্ক বসানো হতে পারে এবং কানাডা থেকে আমদানি করা সারের ক্ষেত্রেও একই পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।
যদিও ট্রাম্প এদিন সুনির্দিষ্ট করে বলেননি যে কবে থেকে বা কত পরিমাণ নতুন শুল্ক আরোপ হতে পারে, তবে তাঁর বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট—ভারত-মার্কিন বাণিজ্য সম্পর্কে নতুন করে টানাপোড়েন তৈরি হওয়ার আশঙ্কা প্রবল। বিশেষ করে ভারতের (India) চাল রপ্তানি শিল্পের উপর এই সম্ভাব্য সিদ্ধান্তের প্রভাব পড়তে পারে সরাসরি। বর্তমানে ভারত বিশ্বের অন্যতম বড় চাল রপ্তানিকারক দেশ। মার্কিন বাজারে বাড়তি শুল্ক আরোপ করা হলে ভারতীয় রপ্তানিকারকদের প্রতিযোগিতা ক্ষমতা হ্রাস পাবে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।

আরও পড়ুন: শীতের ছুটিতে পরিবার ও প্রিয়জনকে নিয়ে ঘুরে আসুন দার্জিলিং এর এই অফবিট গ্ৰাম থেকে
এই পরিস্থিতি আরও তাৎপর্যপূর্ণ কারণ সম্প্রতি পাঁচ দিনের ভারত (India) সফরে এসেছেন মার্কিন বিদেশ দপ্তরের রাজনৈতিক বিষয়ের আন্ডার সেক্রেটারি অ্যালিসন হুকার। তিনি ভারতীয় আধিকারিকদের সঙ্গে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়—বিশেষ করে বাণিজ্য চুক্তি—নিয়ে আলাপ-আলোচনা করবেন। তার ঠিক আগে ট্রাম্পের এই নতুন হুঁশিয়ারি দুই দেশের মধ্যে আলোচনা প্রক্রিয়াকে জটিল করে তুলতে পারে। অন্যদিকে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাম্প্রতিক ভারত সফরের পরেই আমেরিকা এই ধরনের চাপ প্রয়োগের কৌশল নিচ্ছে কিনা, তা নিয়েও আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক কোন দিকে মোড় নেয়, তা এখন নির্ভর করছে আগামী কয়েক সপ্তাহের আলোচনার উপর।












