বাংলা হান্ট ডেস্ক: এবার স্কুল শিক্ষা দফতরের একটি রিপোর্টে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, রাজ্যের স্কুলগুলিতে বর্তমানে বিপুল সংখ্যক প্রধান শিক্ষকের পদ খালি রয়েছে। এমনকি, পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রায় ২৫ শতাংশ স্কুলেই নেই কোনো প্রধান শিক্ষক এবং শিক্ষিকা। যার ফলে দীর্ঘদিন ধরে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে দিয়েই চলছে এই স্কুলগুলির পরিচালনা।
এদিকে, বিগত বছরগুলিতে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের কোনো পরীক্ষা নেয়নি স্কুল সার্ভিস কমিশন। যার ফলে এই বিপুল সংখ্যক শূন্যপদ তৈরি হয়েছে। জানা গিয়েছে যে, আমাদের রাজ্যে ৯৯০০ টিরও বেশি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল রয়েছে। যদিও, এগুলির মধ্যে ২১৩০ টির মত স্কুলে নেই প্রধান শিক্ষক-প্রধান শিক্ষিকা। যদিও, এই শূন্যপদ বেড়ে প্রায় ছ’হাজারে দাঁড়াতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, ইতিমধ্যেই বিধানসভায় রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছিলেন, রাজ্যের স্কুলগুলিতে ৫৮০০-এরও বেশি প্রধান শিক্ষকের পদ খালি রয়েছে। এমতাবস্থায়, এই বিরাট শূন্যপদ নিয়ে মাধ্যমিক বোর্ড থেকে বিস্তারিত তথ্য চায় এসএসসি।
এছাড়াও, প্রধান শিক্ষক নিয়োগের আইন বদলানোর পাশাপাশি, শীঘ্রই এই নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করতে চায় রাজ্য। জানা গিয়েছে যে, এবার প্রথমবারের জন্য রোস্টার মেনে নিয়োগ হবে। অর্থাৎ এতদিন ধরে যে নিয়মে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ করা হতো সেই নিয়মের বদল করা হচ্ছে। পাশাপাশি, স্কুল শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর পাওয়া গিয়েছে, ক্যাটাগরি ভিত্তিক প্রধান শিক্ষকদের নিয়োগ করা হবে।
ইতিমধ্যেই এই সংক্রান্ত আইন সামগ্রিকভাবে সংশোধনের জন্য স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফে প্রস্তাব পাঠানো হচ্ছে রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতরের কাছে। এদিকে, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু গোটা বিষয়টি নিয়ে বেশ কয়েকবার পর্যালোচনা বৈঠক করেছেন বলেও জানা গিয়েছে। এমনিতেই গত কয়েক মাস ধরে স্কুল সার্ভিস কমিশনের বিরুদ্ধে নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি সহ একাধিক অভিযোগ উঠছে।
এমনকি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলি একাধিক বার বিক্ষোভ প্রদর্শনও করেছে। এমতাবস্থায়, প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকার নিয়োগের মাধ্যমে নতুন করে এসএসসি সম্পর্কে ইতিবাচক মনোভাব গড়ে তুলতে চায় রাজ্য। পাশাপাশি, জানা গিয়েছে সব ঠিকঠাক থাকলে আগামী মাসেই এই নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিতে পারে স্কুল সার্ভিস কমিশন। যদিও, এই বিষয়ে স্পষ্টভাবে এখনও কিছু জানায়নি এসএসসি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে শেষবারের মত প্রধান শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা নিয়েছিল এসএসসি। যার নিয়োগ সমাপ্ত হয়েছিল ২০১৯ সালে। এদিকে, অ্যাডভান্স সোসাইটি অব হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেড মিস্ট্রেসেস-এর দাবি, রাজ্যের অর্ধেক স্কুলেই বর্তমানে প্রধান শিক্ষক নেই। তাই এই নিয়োগের ক্ষেত্রে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে তাঁদের তরফে।