বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সম্প্রতি উত্তর প্রদেশের গাজিয়াবাদে এক মুসলিম বৃদ্ধকে প্রহৃত করার ঘটনা সামনে এসেছে। তাঁকে ‘জয় শ্রী রাম” বলতে বাধ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনা নিয়ে যখন গোটা ভারত উত্তাল হয়েছে। তখন এক শ্রেণীর মানুষের বিরুদ্ধে এই ঘটনাটিকে সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিকোন দেওয়ার প্রচেষ্টা চালানোর অভিযোগ তুলেছে উত্তর প্রদেশ সরকার এবং পুলিশ। গতকালই কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধী সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করে এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছিলেন। এরপরেই উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের অফিস থেকে রাহুল গান্ধীর সেই মন্তব্যের নিন্দা করা হয়েছে, এবং বলা হয়েছে যে, তিনি ঘটনার সত্যতা না জেনেই সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করছেন।
উল্লেখ্য, জয় শ্রী রাম বলে মুসলিম বৃদ্ধকে প্রহৃত করার ঘটনায় এক শ্রেণীর মিডিয়া শুধুমাত্র কয়েকজন হিন্দু যুবকের নাম তুলে ধরেছে। আরেকদিকে, উত্তর প্রদেশ পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে যে, ওই কাণ্ডে কয়েকজন মুসলিম যুবকও যুক্ত আছে। কিন্তু শুধুমাত্র হিন্দুদের নাম নিয়ে সাম্প্রদায়িকতা ছড়ানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে। যোগী সরকারের তরফ থেকে এই ঘটনায় ভুল তথ্য প্রচারের জন্য টুইটার এবং বেশ কয়েকটি মিডিয়া হাউসের বিরুদ্ধে এফআইআর-ও দায়ের করা হয়েছে।
তবে টুইটারের বিরুদ্ধে মামলা কি সম্ভব? সরকারি সুত্র অনুযায়ী, কেন্দ্রের মোদী সরকার ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় সাইট টুইটারের উপর থেকে আইনি রক্ষা কবচ তুলে নিয়েছে। কেন্দ্রের নতুন তথ্য প্রযুক্তি আইন না মানার কারণেই টুইটারে বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ নিয়েছে কেন্দ্র। আর কেন্দ্রের এই পদক্ষেপের ফলে একদিকে যেমন বিপাকে পড়েছে টুইটার, তেমনই আরেকদিকে গাজিয়াবাদ কাণ্ডে ফেক তথা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ভিডিও ছড়ানোর জন্য যোগী প্রশাসনও টুইটারের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।
কেন্দ্রের তরফ থেকে জানানো হয়েছে যে, ‘কেন্দ্রের নতুন তথ্য প্রজুক্তি আইন না মেনে অসহযোগিতা করার জন্যই টুইটারের এই আইনি রক্ষাকবচ তুলে নেওয়া হয়েছে।” কেন্দ্রের এই পদক্ষেপের পর এখন থেকে টুইটারে কেউ যদি কোনও ভুয়ো ভিডিও পোস্ট করে, তাহলে পোস্টকর্তা সহ টুইটার অফিসিয়ালের বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা সম্ভব হবে। আইনি সুরক্ষা না থাকায় আগামীদিনে বড়সড় বিপদে পড়তে চলছে এই মাইক্রো ব্লগিং সাইট।
উল্লেখ্য, বেশকিছুদিন ধরে টুইটার আর কেন্দ্রের মধ্যে টানাপড়েন চলছে। দিন কয়েক আগে টুইটারের তরফ থেকে দেশের উপরাষ্ট্রপতি, আরএসএস প্রধান সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নামের পাশ থেকে ব্লু টিক সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এরপর কেন্দ্র সরকার আরও তেঁতে ওঠে। যদিও, কিছু পরেই উপরাষ্ট্রপতির নামের পাশে আবারও ব্লু টিক দিয়ে দেওয়া হয়েছিল।