বাংলাহান্ট ডেস্কঃ একটা সময় যে মাওবাদীদের (maoist) ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে থাকত গোটা জঙ্গলমহল, এখন তাঁদের গলাতেই শোনা যাচ্ছে অন্য সুর। আত্মসমর্পণ করার জন্য লম্বা লাইন পড়ে যাচ্ছে আইনজীবীদের কাছে। তবে তার মধ্যে বেশিরভাগই মাওবাদী না হয়েও, সরকারি চাকরি পাওয়ার আশায় মাওবাদী তালিকায় নাম নথিভুক্ত করতে চাইছেন।
সম্প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার পুনরায় মাওবাদী পুনর্বাসনের প্যাকেজের মাধ্যমে পশ্চিম মেদিনীপুর (paschim medinipur) থেকে আত্মসমপর্ণ করায় ১১০ জন মাওবাদীকে হোমগার্ডের চাকরী দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও বেশকিছু বছর ধরে মাওবাদীদের সমাজের মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনার জন্য, রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে মাওবাদীদের আত্মসমপর্ণ করতে বলার পাশাপাশি নানা বিভাগে সরকারী চাকরীও দিয়েছে। তাই এবার এই করোনা আবহে না খেতে পেয়ে মরার বদলে, সরকারী চাকরী পাবার আশায় মাওবাদী তালিকায় নাম লেখাতে চাইছেন জঙ্গলমহলের বহু বেকার মানুষ।
প্রতিদিনই আদালত চত্ত্বরে পুরুষ মহিলা নির্বিশেষে শয়ে শয়ে মানুষ ঘরে বেড়াচ্ছেন। আইনজীবীদের কাছে তাঁদের আবেদন, ‘দয়া করে আমাকে জেলে ভরে দিন’। যেভাবেই হোক মাওবাদী তালিকায় তাঁদের নাম নথিভুক্ত করে জেলে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে। এই কাজের জন্য আবারও কেউ কেউ অর্থের লোভও দেখাচ্ছেন আইনজীবীদের।
একটা সময় যেখানে জামিন করানোর জন্য আদালতের বাইরে মানুষের লম্বা লাইন পড়ে যেত, এখন সেখানেই মাওবাদী তালিকায় নাম তোলার জন্য মানুষের ভিড় উপছে পড়ছে। এই একই চিত্র দেখা যাচ্ছে মেদিনীপুর আদালতেও। সেখানকার এক আইনজীবী অপূর্ব চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ‘আগে দেখা যেত পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর, নিজের নামের পাশ থেকে মাওবাদী তকমা হাটানোর জন্য মানুষের লম্বা লাইন পড়ত এখানে। কিন্তু এখন অন্য চিত্র দেখা যাচ্ছে। এখন দেখা যাচ্ছে মাওবাদী তালিকায় নাম তোলার জন্য, বিশেষত যারা কেস শেষ করার জন্য আগে আদালতে চক্কর কাটত, এখন তারাই মাওবাদী তালিকায় নাম তোলার জন্য ঘুরছেন। আমরা রীতিমত হিমশিম খেয়ে যাচ্ছি’।