বাংলা হান্ট ডেস্কঃ একের পর এক উঠে চলা দুর্নীতি মামলা, গোষ্ঠী কোন্দল, হিংসা এবং বিরোধীদের পাল্টা আক্রমণ, বর্তমানে বঙ্গ রাজনীতিতে এ যেন অত্যন্ত চেনা ছবি হয়ে দাঁড়িয়েছে সকলের কাছে! তবে কথায় আছে, সকলে খারাপ হয় না। এখনো এমন অনেক মানুষ রয়েছেন, যারা সৎ উপায় এবং পরিশ্রম করার মাধ্যমে জীবন অতিবাহিত করে চলেছেন। বর্তমানে বাংলায় এসএসসি থেকে শুরু করে গরু পাচার এবং কয়লা পাচার দুর্নীতি মাঝেও কঠোর পরিশ্রম এবং সততার সঙ্গে বেঁচে থাকেন সেই সকল মানুষেরা। সততার সেই প্রতীক হিসেবে যেন প্রতিদিন নিজেকে একটু একটু করে তুলে ধরছেন রানি মুর্মু (Rani Murmu)। ষাটোর্ধ্ব এই মহিলা পশ্চিম বর্ধমানের (Burdwan) কাঁকসার মোলডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান।
পঞ্চায়েত উপপ্রধান, অথচ দুর্নীতির সঙ্গে তাঁর দূর-দূরান্তে কোনরকম সম্পর্ক নেই। প্রতিদিন ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে হাতে কোদাল নিয়ে হেঁটে চলেন গন্তব্যে। লাখ লাখ টাকার চমকের পরিবর্তে তাঁর পরনে থাকে কেবল একটি সাধারণ শাড়ি। তা নিয়েই দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে মাঠে নেমে পড়েন তিনি। ক্ষেতমজুরের কাজ করে এভাবে দিনের পর দিন কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে সংসার চালিয়ে চলেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের এই উপপ্রধান।
তবে শুধুমাত্র ক্ষেতের কাজই নয়, পরবর্তীতে এ সকল কাজ সামলে আবার সংসারের দায়িত্ব তুলে নিয়েছেন নিজের কাঁধে। স্থানীয় সূত্রে খবর, এ সকল কাজ সামলে পরবর্তীতে প্রায় তিন কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে তিনি পৌঁছে যান পঞ্চায়েত কার্যালয়ে। গ্রামবাসীদের ভালো-মন্দ সব সামলে দিব্যি সংসার চালিয়ে চলেছেন রানি; ভরসা একটি খড়ের চাল এবং টালির ছাউনি। এর মাঝেও আবার বৃষ্টি হলে জলের মধ্যেই এক প্রকার বাস করতে হয় তাদের।
ফলে স্বাভাবিকভাবেই যখন বাংলায় দুর্নীতির ঘটনা একপ্রকার চেনা ছবি হয়ে দাঁড়িয়েছে, সেই মুহূর্তে রানির জীবনযাপন নজর কেড়েছে সকলের। তৃণমূলের এই উপপ্রধানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, “যদি ঘরটা পাকা হতো, তবে অবস্থার একটু উন্নতি হতো। তবে বর্তমানে আমার উদ্দেশ্য, গ্রামবাসীর সকলের বাড়ি পাকা করে তোলা। তারপর আমি নিজের বাড়ির দিকে খেয়াল দেবো।” রানি মুর্মু প্রসঙ্গে গ্রামবাসীদের মুখেও শোনা গিয়েছে প্রশংসা। এক স্থানীয় জানান, “কোথায় কি দুর্নীতি হচ্ছে, সেই প্রসঙ্গে খুব একটা জানিনা। তবে গ্রামের উপপ্রধান আমাদের ঘরের মানুষ। উনি যেভাবে পরিশ্রম করে চলেছেন, তা দৃষ্টান্ত।”