বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বর্তমানে দিল্লিতে (Delhi) রয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। আপাতত ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজধানীতেই থাকবেন তৃণমূল সুপ্রিমো। আগামীকাল ১৯ ডিসেম্বর রয়েছে ইন্ডিয়া জোটের বৈঠক (INDIA Alliance Meeting)। সেই বৈঠকেও যোগ দেবেন মমতা। তারপর আগামী ২০ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মমতার সাক্ষাৎ। আর বিরোধী মহা জোটের মেগা বৈঠকের আগের দিনই মমতার মুখে সমঝোতার সুর।
সোমবার দিল্লির বুকে সাংবাদিক বৈঠক থেকে মমতা সাফ বুঝিয়ে দিলেন আসন নিয়ে সমঝোতায় তার অসুবিধা নেই। এদিন চাণক্যপুরীতে নতুন বঙ্গভবন থেকে মমতা বলেন, আসন সমঝোতা করতে হবে এবং মোদী সরকারকে ক্ষমতায় থেকে সরাতে হবে। এই বিষয়ে সিপিএম (CPM) এর সাথেও সমঝোতার ইঙ্গিত মুখ্যমন্ত্রীর মুখে? প্রসঙ্গত, বাংলায় সাম্প্রতিক একুশের বিধানসভা ভোটে সিপিএমের সঙ্গে জোট করেছিল কংগ্রেস। তাহলে লোকসভা ভোট কি হতে পারে? এই প্রসঙ্গে মমতা বলেন, “এটা ওদের পার্টির ব্যাপার। এ বিষয়ে আমি কোনও মন্তব্য করতে পারি না।”
সাংবাদিকদের প্রশ্নে মমতা এদিন বলেন, তিনি আলোচনার জন্য প্রস্তুত। রাজ্যে কংগ্রেসের (Congress) সাথে জোটের সম্ভাবনা নিয়েও মুখ খুলেছেন মমতা। এই নিয়ে তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন,’ কাউকে তো উদ্যোগ নিতেই হবে। আমি আলোচনার জন্য ওপেন রয়েছি।’ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, “কাউকে তো অবশ্যই বিড়ালের ঘণ্টা বাজাতে হবে। তারা যদি সত্যিই চায় তাহলে আমার কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে তাদের মাত্র দুটি আসন আছে। তবে এই বিষয়ে আমি কথা বলতে ও আলোচনা করতে প্রস্তুত।”
আরও পড়ুন: অধীর, সৌগত, কাকলি, শতাব্দী লোকসভা থেকে একজোটে সাসপেন্ড ৩১ জন সাংসদ! কারণ কি?
তৃণমূল সুপ্রিমো সাফ জানান, ‘আসন সমঝোতা নিয়ে আগেই আলোচনা হয়েছে। কালকের বৈঠকে এই নিয়ে আরও আলোচনার উপায় রয়েছে। সবাই আসন সমঝোতা চায়, আলোচনা না করে আমি কারও ওপরে আমার সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিতে পারি না। আসন সমঝোতা খুব সহজ কাজ নয়। তবে খুব দেরি হয়ে যায়নি’।
‘এক দুটো রাজনৈতিক দলের মত হয়তো আলাদা হতে পারে তবে জোটের অধিকাংশ দলই আসন সমঝোতায় রাজি থাকবে। সবাই একসাথে মিলেই কাজ করবে। আমার কারোও সঙ্গে যেতেই কোনও সমস্যা নেই।’ সাফ বার্তা মমতার। এখানেই প্রশ্ন উঠছে জোটের কারও সাথে সমস্যা যখন নেই, তাহলে কি সিপিএম এর সাথে আসন সমঝোতাতেও অসুবিধা নেই মমতার? ইতিমধ্যেই এই ইস্যুতে সুর চড়িয়েছে বিরোধীরা।
আর সবথেকে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, একদিকে মমতার মুখে যখন নিজের জোট শরিকদের সাথে সমঝোতার সুর, সেই একই দিনে কংগ্রেস এবং সিপিএম-এর তরফে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র আক্রমণ শানানো হল। আক্রমণের মূল টপিক প্রধানমন্ত্রীর সাথে মমতার সাক্ষাৎ।
এই নিয়ে কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী বলেন, ‘সত্যিই গরীব মানুষের টাকা আদায় করার ইচ্ছা থাকলে, পিসি আর খোকাবাবু মিলে প্রধানমন্ত্রীর দরজার সামনে অবস্থান-অনশনে বসুন। তাহলে বুঝবো।” ওদিকে বাংলার বকেয়া আদায় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রীর সাক্ষাৎকে কটাক্ষ করেছেন সিপিএম এর সুজন চক্রবর্তীও। বাম নেতা বলেন, “পিসি এবং ভাইপোকে যাতে বাঁচানো যায় সেই জন্যই মিটিং করতে যাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।”