উঠবে গিনিস বুকে নাম! পুজো হচ্ছে ১১২ ফুট দুর্গা মূর্তিতে? এবার বড় নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সমস্ত প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে এসেও মেলেনি সবুজ সংকেত। রানাঘাটের কামালপুরে ১১২ ফুট দুর্গা মূর্তি তৈরির অনুমতি দেন নি নদিয়ার জেলাশাসক। আগেই জেলাশাসক হাইকোর্টে জানান, বিদ্যুৎ দফতর, দমকল, পুলিশ, বিডিও সহ রানাঘাটের মহকুমা শাসক সকলেও এই পুজোর আবেদন বাতিল করেছেন। এদিন উদ্যোক্তাদের আবেদনের ভিত্তিতে অনুমতি নিয়ে ফের জেলাশাসককে বিষয়টি পুনর্বিবেচনার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। আগামী বৃহস্পতিবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি।

রানাঘাটের (Ranaghat) অভিযান সঙ্ঘ পুজো কমিটির ১১২ ফুটের দুর্গাপুজোর অনুমতি দেওয়া নিয়ে কী পদক্ষেপ করলেন তা জেলাশাসকের কাছে জানতে চেয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। জেলাশাসক রিপোর্ট দিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি অনুমতি দিতে পারবেন না। পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আদালত মামলার পরবর্তী শুনানির আগে সিদ্ধান্ত জানতে চেয়েছে।

এবারের পুজোয় ১১২ ফুটের দুর্গা প্রতিমা তৈরি করে গিনিস বুকে নাম ওঠানোর উদ্যোগ নিয়েছিল নদিয়ার রানাঘাটের অভিযান সঙ্ঘ পুজো কমিটি। তবে তাতে পুলিশি অনুমতি না মেলায় কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল পুজো কমিটি। হাইকোর্ট নদিয়ার জেলাশাসককে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানোর নির্দেশ দিয়েছিল। রানাঘাট পুলিশ জেলার ধানতলা থানা তরফে জানানো হয়েছে, এত বড় দুর্গা মূর্তি দেখতে প্রচুর মানুষের ভিড় হতে পারে। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার বিষয়টি রয়েছে।

পাশাপাশি এত বড় মূর্তি হওয়ায় লাইন এবং বিদ্যুতের তারের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার সম্ভাবনা থাকছে। ১২ ফুট রাস্তার উপর প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছে যা খুবই সংকীর্ণ জায়গা। এছাড়া প্রতিমা বিসর্জনেও ওতো বড় দুর্গামূর্তি নিয়ে যাওয়ায় প্রতিকূলতা রয়েছে। সম্প্রতি এই পুজো নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, “১১২ ফুটের প্রতিমা দেখতে গিয়েছিলাম কেউ পদপিষ্ট হলে তার দায়িত্ব কে নেবে?”

মমতা আরও বলেছিলেন, “১১২ ফুট কেন ৪১২ ফুটের প্রতিমা হোক, কিন্তু সেই প্রতিমা দেখতে গিয়ে যদি মানুষ মারা যায় তার দায় কে নেবে? ওই পুজোর জায়গায় কি সাধারণ মানুষের এন্ট্রি-এক্সিটের পর্যাপ্ত জায়গা রয়েছে? পুজো করলেই হবে না, দায়িত্বশীল হয়ে পুজো করতে হবে।” ওদিকে হাইকোর্টের এই মামলার আগের শুনানিতে মামলাকারীদের আইনজীবী জানিয়েছিলেন, ‘‘এত বড় মা দুর্গার মূর্তি আগে বাংলার কোথাও হয়নি। এই পুজো হলে এক নতুন নজির গড়বে রানাঘাটের ওই পুজো কমিটি।’’

উদ্যোক্তাদের পক্ষে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এবং ফিরদৌস শামিম হাইকোর্টে জানিয়েছিলেন, প্রায় ৫০ বছর ধরে ওই ক্লাব দুর্গাপুজো করে আসছে। কোনওবার কোনও সমস্যা হয়নি। এবার এই প্রতিমার দৈর্ঘ্য নজিরবিহীন। বহু পরিশ্রম করা হয়েছে। পুজো দেখতে রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রতিনিধিরাও আসতে পারেন। হাইকোর্টের কাছে এই পুজো করার অনুমতি চাওয়া হয়েছে উদ্যোক্তাদের পক্ষে।

durga ma idol 2

আরও পড়ুন: কোনো যোগ্যতাই নেই! BJP করেন বলেই দাদাসাহেব ফালকে পাচ্ছেন মিঠুন! বিস্ফোরক তৃণমূল নেতা

প্রসঙ্গত, এর আগে এই মামলার শুনানিতে রাজ্য তরফে ২০১৫ সালে কলকাতার দেশপ্রিয় পার্কের পুজোর উল্লেখ করে বলা হয়েছিল, সে বার দেশপ্রিয় পার্ক ৮৮ ফুটের দুর্গাপ্রতিমা তৈরি করেছিল। যা দেখতে এত পরিমাণে ভিড় হয়েছিল যে পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয়েছিল প্রশাসন। পরে জনপ্লাবনের জেরে প্রতিমা দর্শন বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছিলেন উদ্যোক্তারা। তাই এক্ষেত্রে কোনোরকম বিশৃঙ্খলা হোক সেই ঝুঁকি নিতে চাইছে না প্রশাসন।

ad

Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর