বাংলাহান্ট ডেস্ক : শান্তিনিকেতন: প্রকৃতির কোলে শিক্ষা
বর্তমানে ব্যস্ততার সময় প্রত্যেক মানুষের জীবনে বাঁচার জন্য একটি জিনিসের বড়ই অভাব সেটা হল “শান্তি”। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের (Rabindranath Tagore) পিতা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর সেই শান্তির খোঁজে বীরভূম জেলার অবস্থিত বোলপুর শহরে ১৮৬৩ সালে ২০ একর জমির উপর অতিথি শালা নির্মাণ করেন এবং সেই অতিথি শালার নাম “শান্তিনিকেতন” রাখেন, তারপর আস্তে আস্তে জায়গাটির নাম শান্তিনিকেতন নামে পরিচিত হলো। শান্তিনিকেতনের অর্থ হল শান্তির নিবাস অথবা যে গৃহে শান্তি বাস করে।
কীভাবে তৈরি হয় রবিঠাকুরের (Rabindranath Tagore) শান্তিনিকেতন?
১৮৭৮ সালে কবি রবি ঠাকুর (Rabindranath Tagore) যখন তাঁর বয়স ১৭ বছর তখন দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের হাত ধরে বোলপুর শহরের মাটিতে তাঁর প্রথম পা রাখা, তারপর ১৯০১ সালে ডিসেম্বর মাসে শান্তিনিকেতনে ব্রহ্মচর্যাশ্রম তাঁর দ্বারা স্থাপিত হয় এবং এটি পাঠভবন নামে পরিচিত , তার ঠিক ১২ বছর পর ১৯১৩ সালে তাঁর লেখা গীতাঞ্জলি সাহিত্য দ্বারা ভারত তথা এশিয়ার মহাদেশের প্রথম লেখক যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।
প্রতিষ্ঠিত হয় বিশ্বভারতী: শুধু তাই নয় ,২৩ ডিসেম্বর ১৯২১ সালে শান্তিনিকেতনে কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের (Rabindranath Tagore) দ্বারা বিশ্ব ভারতী প্রতিস্থাপন করেন এবং ১৯৫১ সালে ভারতের সংবিধানের আইন অনুযায়ী কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাতীয় গুরুত্বের একটি প্রতিষ্ঠান হিসাবে ঘোষণা হয়েছিল,এবং শান্তিনিকেতনকে বর্তমান সময় গোটা বিশ্ব বিশ্বভারতী নামে চেনেন।
আরো পড়ুন : দেশের অন্দরেও চাঞ্চল্যকর ঘটনা! ভারত-পাক সংঘর্ষের মাঝেই বড় পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত শীর্ষ আদালতের
শিক্ষার আসল অর্থ: দ্যা স্কটিশ সেন্টার অফ টেগোর স্টাডিজ (The Scottish Centre of Tagore Studies) এবং ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ কারেন্ট রিসার্চ অ্যান্ড একাডেমিক রিভিউ (International Journal of Current Research and Academic Review) রিপোর্ট অনুযায়ী রবি ঠাকুর (Rabindranath Tagore) বলেছেন – “শিক্ষার অর্থ হল সেই চূড়ান্ত সত্যকে খুঁজে বের করতে মনকে সক্ষম করা যা আমাদেরকে ধূলির বন্ধন থেকে মুক্তি দেয় এবং আমাদের সম্পদ দেয় বস্তুর নয়, বরং অভ্যন্তরীণ আলো, শক্তি নয়, ভালবাসার। এটি জ্ঞানার্জনের একটি প্রক্রিয়া এটা ঐশ্বরিক সম্পদ। এটা সত্য উপলব্ধি করতে সাহায্য করে”।অর্থাৎ এর থেকে বোঝা যায় রবি ঠাকুরের কাছে শিক্ষা হলো তার প্রথম গুরুত্ব।
আরো পড়ুন : লাগাতার মিথ্যাচার, নীচতার সীমা অতিক্রম করে মন্দির-গুরুদ্বারা-চার্চকে নিশানা পাকিস্তানের
বর্তমান সময় উন্নত প্রজন্মের সাথে তালে তাল মিলিয়ে চলার কারণে আমাদের ঐতিহ্য প্রায় লুপ্ত এবং যেখানে সব জায়গায় অশান্তি , চিন্তার ও হিংসার ছায়া গ্রাসিত প্রায় সেখানে শান্তিনিকেতন একদম অন্যতম এখনো শান্তিনিকেতনে আগেকার দিনের মতো বৃক্ষের তলায় পড়াশোনা, বাউল সংগীত ও রবীন্দ্র সংগীত মিলেমিশে একাকার। শান্তিনিকেতনের মাটিতে মাটিতে কবির কবিতার গন্ধ বাতাসে বাতাসে কবির কবিতার ভাব প্রত্যেক মানুষের হৃদয়কে ছুঁয়ে দূষণমুক্ত করে চলেছেন এখনো।
প্রতিবেদনটি লিখেছেন অয়ন চট্টোপাধ্যায়।