বাংলাহান্ট ডেস্ক : তৃণমূল নেতা হিসেবে অনুব্রত মণ্ডলের ( Anubrata Mandal) নাম ডাক দীর্ঘদিন ধরেই। একজন রাজনৈতিক নেতার, যিনি আবার সরকারি কোন পদেও নেই, তাঁর এত সম্পত্তি কী ভাবে হতে পারে, তা নিয়েই ধন্ধে রয়েছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। কেষ্টর একাধিক জমির হদিশ আগেই পেয়েছে সিবিআই (CBI), আর এবার তাঁদের নজরে অনুব্রতর রাইস মিলের দিকে। দীর্ঘদিন উৎপাদন বন্ধ থাকা রাইস মিলে কোন সূত্র খুঁজতে তল্লাশি চালাচ্ছে সিবিআই, তা সঠিক সময়ে জানা যাবে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, রাইস মিলটি রয়েছে বহুদিন আগে থেকেই।
এলাকাবাসীরা দাবি করেন, ওই জায়গায় ছিল ২ টি রাইস মিল। তখনও রাইস মিলের চাবিকাঠি ছিল না অনুব্রত মণ্ডলের হাতে। পরবর্তী কালে অনুব্রত দুটি মিলই কিনে নেন। দুটি মিলিয়ে একটি মিল তৈরি করে কেষ্ট। মোট ৪৫ বিঘা জমির ওপর ওই মিল রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। নথি বলছে প্রায় ৫ কোটি টাকা দিয়ে পুরনো মালিকদের কাছ থেকে কেনা হয় মিল দুটি। তারপর থেকে এই মিলের তদারকি করতেন অনুব্রতর মেয়ে সুকণ্যা মণ্ডল। মিলে নাকি মাঝে মধ্যেই আসতেন সুকন্যা।
এলাকার অনেকেই বলছেন, পুরনো মালিকেরা মিল চালাতে পারছিলেন না, তা এক একরকম বাধ্য হয়েই তা বিক্রি করে দেন। তবে জোর করে কম দামে মিল কিনে নেওয়া হয়েছিল বলে সুত্র মারফত জানা যাচ্ছে। গত ২ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে মিলের কাজ। কোনও উৎপাদন আপাতত হচ্ছে না সেখানে। কী কারণে বন্ধ মিল, তাও স্পষ্ট নয়।
জানা গিয়েছে, ২০১১ সালের আগে এই রাইস মিলের মালিক ছিলেন হারাধন মণ্ডল। তাঁর ছেলের অংশিদারিত্ব ছিল। আচমকাই ২০১১ সালের পর গোটা রাইস মিল তিনি বিক্রি করে দেন অনুব্রত মণ্ডলকে। ওই রাইস মিলের মালিকানা রয়েছে দুজনের নামে। এক, অনুব্রত মণ্ডলের প্রয়াত স্ত্রী এবং মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলের নামে। একের পর সম্পত্তির হদিসের সঙ্গেই জানা গিয়েছে, খাতায় কলমে প্রতিটি সম্পত্তি মূলত তিনজনকে দেওয়া হয়েছে। এক স্ত্রী ছবি মণ্ডল, কন্যা সুকন্যা এবং বিদ্যুৎবরণ গাইনকে। এই বিদ্যুৎবরণ গাইন মূলত অনুব্রতকে ‘বাবা’সম্বোধন করে ডাকেন।যিনি ২০১১ সালের আগে খালাসি ছিলেন, এখন বোলপুর পুরসভার স্থায়ী কর্মী।
এ দিন সকালে যখন সিবিআই আধিকারিকরা মিলে যান, তখন ভিতরে ছিলেন নিরাপত্তারক্ষী ও বেশ কয়েকজন কর্মী। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে বিভিন্ন বিষয়ে জানার চেষ্টা করছেন আধিকারিকরা। প্রথমে কেউ দরজা না খোলায় প্রায় ৪০ মিনিট দরজার বাইরে অপেক্ষা করতে হয় আধিকারিকদের। মিলে ঢুকে এ দিন তাঁরা দেখেন মিলের পিছনের দিকে একটি গ্যারাজে পরপর দাঁড়িয়ে রয়েছে একাধিক বিলাসবহুল গাড়ি। গাড়িগুলি কার, কী কাজে ব্যবহার করা হত, তা জানার চেষ্টা করছে সিবিআই।