বাংলাহান্ট ডেস্কঃ হিন্দুদের ১৩৩ কোটি দেব দেবদেবীদের মধ্যে বিশালাক্ষী দেবী (Vishalakshi Devi) খুবই জাগ্রত। বিশালাক্ষী দেবী মহামায়া সতীর অপর এক রূপ। গ্রাম বাংলায়ও বিশালাক্ষী দেবীর বহুল জনপ্রিয়তা রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের একাধিক অঞ্চলে এই বিশালাক্ষী দেবীর মন্দির রয়েছে।
বিশালাক্ষী দেবীর প্রধান মন্দির ভারতের বারাণসী শহরের বিশ্বনাথ মন্দিরের পশ্চাদে মীরঘাটে অবস্থিত। পুরাণ মতে, ৫১ শক্তিপীঠের অন্যতম হল এই বারাণসীর বিশালাক্ষী দেবীর মন্দির। আবার পশ্চিমবাংলার বাঁকুড়া জেলার শুশুনিয়ায় বিশালাক্ষী বা বাশুলি দেবীর মন্দিরও রয়েছে। এই মন্দিরের পূজারী ছিলেন শ্রীকৃষ্ণকীর্তন রচয়িতা বড়ু চণ্ডীদাস।
বাংলার কৃষিজীবী, জলজীবী ও বনজীবী লোকসমাজ তথা সুন্দরবন এলাকাকে বিশালাক্ষী দেবীর অনেক মহিমা রয়েছে। বিশেষত, কৃষক, জেলে, মৌয়ালি-বাওয়ালি পেশার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা এই দেবীর আরাধনা করেন। কথায় বলে, সুন্দরবনের জঙ্গলমহল যতদূর ছড়িয়ে রয়েছে, এই বিশালাক্ষী দেবীর পুজোর ক্ষেত্রে ততদূর ছড়িয়ে রয়েছে।
দেবাদিদেব শিব যখন দেবী সতীর দেহ কাঁধে করে নিয়ে তাণ্ডব নৃত্য করছিলেন, তখন মহাদেবকে শান্ত করতে বিষ্ণু সুদর্শন চক্রে সতীর দেহ ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করেছিলেন। লোকমুখে প্রচলিত আছে, সেই সময় নাকি দেবীর ছিন্ন ভিন্ন দেহের থেকে দেবীর কর্ণ ও কুণ্ডল এই অঞ্চলে পতিত হয়েছিল। তাই বিশালাক্ষী দেবী এখানে মণিকর্ণি নামে পরিচিত।
অনেকে আবার মনে করেন এই কর্ণকুণ্ডল শুধুমাত্র অলংকার, এটি দেহের অংশ একেবারেই নয়। তাই এই মন্দিরকে উপপীঠ বলা যেতেও পারে।আবার অনেকের মতে, এই স্থানে দেবীর তিনটি নয়ন বা চোখের একটি পতিত হয়েছিল। মহামায়া দিব্যচক্ষু দিয়ে সমগ্র বিশ্ব দেখতে পান। তাই এখানে এই দেবী বিশালাক্ষী দেবী নামে পরিচিত।
দেবী বিশালাক্ষীর ধ্যান মন্ত্রঃ মুলেন ব্যাপকং ন্যাসং ধ্যায়েদেবীং পরাং শিবাম। ধ্যায়েদেবীং বিশালাক্ষীং তপ্তজাম্বুনদপ্রভাম।। দ্বিভুজাম্বিকাং চণ্ডীং খড়গখেটকধারিণীম। নানালংকারসুভগাং রক্তাম্বরধরাং শুভাম।। সদা ষোড়শবর্ষীয়াং। প্রসন্নাস্যাং ত্রিলোচনাম মুণ্ডমালাবলি রম্য পীনোন্নতপয়োধরাম শবোপরী মহাদেবীং জটামুকুটমণ্ডিতাম শত্রুক্ষয়করাং দেবীং সাধকভিস্টদায়িকম সর্বসৌভাগ্যজননী মহা সম্পদপ্রদং স্মরেৎ।।