বাংলা হান্ট ডেস্ক : বিশ্বের পরাশক্তি অর্থাৎ আমেরিকা (United States Of America) শক্তিক্ষয় হয়ে চলেছে দিন প্রতিদিন। আর সেই স্থানে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে কাজ করছে চিনা পিপলস লিবারেশন আর্মি (Peoples Libaration Army)। ইতিমধ্যে নৌ-বহরের হিসেবে বিশ্বের শক্তিশালী বাহিনী হয়ে ওঠেছে তারা (অন্তত সংখ্যার হিসেবে)। আর তারমধ্যেই এল এক নয়া খবর। জানা যাচ্ছে চিনের সেনাবাহিনীর মধ্যে চলছে বিরাট বড় অন্তর্দ্বন্দ্ব! এমনকি কয়েকজন সেনা কর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নিচ্ছে চিনের কম্যুনিস্ট সরকার।
সাধারণত চিনে মানুষ গায়েব হয়ে যাওয়া খুব একটা বড় বিষয় নয়, চিনা সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খোলার ফলাফল কি হতে পারে তা দেখেছে দেশের আম জনতা। কিন্তু গত ৬ জুন PLA রকেট ফোর্সের ডেপুটি কমান্ডার উ গুওহুয়ার রহস্যমৃত্যু নিয়ে বেশ তোলপাড় হচ্ছে। যদিও PLA সেই বিতর্ক ধামাচাপা দিতে তাদের অফিশিয়াল বয়ানে জানায় গুওহুয়া নাকি সেরিব্রাল হেমোরেজের কারণে মারা যান। কিন্তু সেখানেই বিষয়টা শেষ হয়নি।
এদিকে বিগত সময়ে চিনের মধ্যে বেশ ধরপাকড় দেখা গেছে। শি জিনপিংয়ের বিরুদ্ধে মুখ খুলে রাতারাতি গায়েব হয়ে যান অনেকে, কেও কেও আবার জেলে বন্দী হন। তবে PLA এর রকেট ফোর্সের আধিকারীকের মৃত্যু নিয়ে বেশ ব্যতিব্যস্ত তারা। উল্লেখ্য, এই রকেট ফোর্সই চিনের পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র সহ সমস্ত ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ন্ত্রণ করে। যা কিনা সরাসরি বেজিংয়ে অবস্থিত সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশনের অধীনে আসে। আর সেই ডিভিশনের ডেপুটি কমান্ডার উ গুহুয়ার মৃত্যু বেশ বড় রহস্য সৃষ্টি করেছে।
আমেরিকার সাথে সম্মুখ সমরে না হলেও অঘোষিত যুদ্ধে রয়েছে চিনা কমিউনিস্ট পার্টি। এমতবস্থায় কদিন আগে পিএলএ রকেট ফোর্সের কমান্ডার ‘জেনারেল লি ইউচাও’ তার পদোন্নতি অনুষ্ঠান থেকে নিখোঁজ। তারপর উ গুওহুয়ার রহস্য মৃত্যু সেনাবাহিনীর মধ্যে অন্তর্কলহ বিষয়টিকে উস্কে দিচ্ছে। তবে সবচেয়ে বড় ঝটকা এসেছে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাং হঠাৎ নিখোঁজ হওয়ার পর থেকেই। জানা যাচ্ছে তাকে শেষবার দেখা যায় গত ২৫ জুন। তারপর থেকেই উধাও তিনি।
বিষয়টি নিয়ে সেদেশের অনেকের মত যে, তিনি নাকি শি জিনপিংয়ের বিরাগভাজন হয়েছেন, আবার কারো মতে টেলিভিশন অ্যাঙ্কারের সাথে সম্পর্কের কারণেই তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। একসাথে এতজন মিলিটারি অফিসার এবং সেইসাথে সেনাকর্তা এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নিখোঁজ হওয়া দেশটির মধ্যেকার অন্তর্কলহকের কথাই উস্কেই দিচ্ছে। ধীরে ধীরে হলেও সামনে আসছে চিনা সেনাবাহিনী PLA এর সাথে কমিউনিস্ট লাল পার্টির মতবিরোধ। এখন দেখার আগামীতে সেনাবাহিনী সরকারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয় কিনা!