কেন ট্রেনের বগির রং হয় লাল এবং নীল? কারণ জানলে চমকে উঠবেন

বাংলা হান্ট ডেস্ক: আমাদের দেশে গণপরিবহণের ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হল ট্রেন (Train)। এমনকি, ভারতীয় রেলকে (Indian Railways) দেশের “লাইফলাইন” হিসেবেও বিবেচিত করা হয়। প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ মানুষ ট্রেনে চেপেই নিশ্চিন্তে পৌঁছে যান নিজেদের গন্তব্যে। এমন পরিস্থিতিতে ট্রেনে সফরকালে আমরা প্রত্যেকেই লাল এবং নীল রঙের বগিযুক্ত পৃথক পৃথক ট্রেন দেখতে পাই। এমতাবস্থায়, আপনি কি কখনও ভেবে দেখেছেন যে কেন ট্রেনের বগিগুলির রঙের মধ্যে এহেন পার্থক্য থাকে? বা এগুলির কি কোনো আলাদা সুবিধা রয়েছে? বর্তমান প্রতিবেদনে এই প্রশ্নগুলিরই উত্তর বিস্তারিতভাবে উপস্থাপিত করা হল।

প্রথমেই জানিয়ে রাখি যে, নীল রঙের বগিযুক্ত ট্রেনকে বলা হয় ইন্টিগ্রাল কোচ (ICF)। এটি হল ঐতিহ্যবাহী রেল কোচ। ১৯৫২ সালে তামিলনাড়ুর চেন্নাইতে ইন্টিগ্রাল বগির উৎপাদন শুরু হয়। অপরদিকে লাল রঙের বগিকে বলা হয় লিংক হফম্যান বুশ (LHB) কোচ। ২০০০ সালে ভারতে লাল রঙের ট্রেনের বগি তৈরির কাজ শুরু হয়। এগুলি জার্মান কোম্পানি Link-Hofmann-Busch দ্বারা ডিজাইন করা হয়েছে। এই কোচগুলি পাঞ্জাবের কাপুরথালায় তৈরি করা হয়।

কোন বগিটি বেশি নিরাপদ: এমতাবস্থায়, স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে পারে যে এই বগিগুলির মধ্যে কোনটি বেশি নিরাপদ? উল্লেখ্য যে, দুর্ঘটনার সময় ICF অর্থাৎ নীল রঙের কোচগুলি একে অপরের উপরে উঠে যায়। মূলত, ডুয়েল বাফার সিস্টেমের কারণে এই ঘটনা ঘটে। অপরদিকে, লাল রঙের কোচগুলিতে ওই ব্যাপারটি ঘটে না। কারণ, সেগুলিতে সেন্টার বাফার কলিং সিস্টেম রয়েছে। যার ফলে এতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমানও কম হয়।

এই বগিগুলি কোন ধাতু দিয়ে তৈরি: উল্লেখ্য যে, নীল রঙের কোচগুলি স্টিলের তৈরি হয়। পাশাপাশি এগুলির ওজনও তুলনামূলক বেশি হয়। অন্যদিকে, লাল রঙের বগিগুলি স্টেইনলেস স্টিল দিয়ে তৈরি হয়। এই কোচগুলি ওজনে অনেকটাই হালকা। জানা গিয়েছে, লাল বগিগুলির ওজন নীল বগির তুলনায় প্রায় ১০ শতাংশ কম হয়।

whatsapp image 2023 02 18 at 7.59.37 pm

কোন বগির গতিবেগ বেশি: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, নীল রঙের বগিগুলি ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার বেগে চলতে পারে। যদিও, এর সর্বোচ্চ গতি ১২০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় রাখা হয়েছে। এদিকে, লাল রঙের বগিগুলি তুলনামূলক হালকা হওয়ায় সেগুলি প্রতি ঘন্টায় ২০০ কিমি বেগে ট্র্যাকে ছুটতে পারে। পাশাপাশি, এইসব কোচে ডিস্ক ব্রেক ব্যবহার করা হয়। এগুলির সর্বোচ্চ গতি প্রতি ঘন্টায় ১৬০ কিলোমিটার রাখা হয়েছে। উল্লেখ্য যে, বর্তমান সময়ে ধীরে ধীরে নীল বগিগুলির পরিবর্তে সেগুলির জায়গায় লিঙ্ক হফম্যান বুশ ব্যবহার করা হচ্ছে।


Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর