বাংলা হান্ট ডেস্ক: আমাদের দেশে প্রতি বছর ২৬ জানুয়ারি দিনটিকে প্রজাতন্ত্র দিবস (Republic Day) হিসেবে পালন করা হয়। সেই রেশ বজায় রেখেই চলতি বছর আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার দেশজুড়ে ৭৪ তম প্রজাতন্ত্র দিবস পালিত হচ্ছে মহাসমারোহে। এদিকে, রাষ্ট্রপতি হিসেবে দ্রৌপদী মুর্মুর (Draupadai Murmu) এটাই হল প্রথম প্রজাতন্ত্র দিবস। তিনি সম্প্রতি উদ্বোধন হওয়া কর্তব্য পথে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করবেন।
এমতাবস্থায়, লক্ষ লক্ষ ভারতীয় প্রতি বছর টেলিভিশনে ওই অনুষ্ঠানে ভারতের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, দেশের অগ্রগতি এবং সাফল্যের দৃশ্য পরিলক্ষিত করেন। পাশাপাশি, ভারতীয় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বিমান বাহিনীর এয়ারশোও প্রত্যক্ষ করেন সবাই। এছাড়াও, প্রজাতন্ত্র দিবসের প্যারেড রিহার্সাল, প্যারেড এবং বিটিং দ্য রিট্রিট অনুষ্ঠানের মতো ইভেন্টগুলিতে যোগ দেওয়ার জন্য জনসাধারণকে স্বাগত জানানো হয়।
প্রজাতন্ত্র দিবসের ইতিহাস: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি, ভারতীয় সংবিধান আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহীত হয়েছিল। প্রজাতন্ত্র দিবসে ওই ঐতিহাসিক ঘটনাটিকেই স্মরণ করা হয়। ১৯৪৭ সালে ভারত ব্রিটিশ রাজ থেকে মুক্ত হয়। যদিও, ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত ভারতীয় সংবিধান কার্যকর হয়নি। কিন্তু, ওইদিন থেকেই ভারত একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে পরিগণিত হয় এবং দিনটি প্রজাতন্ত্র দিবস হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।
এদিকে, ১৯৪৬ সালের ৯ ডিসেম্বর প্রথমবারের মতো গণপরিষদ অনুষ্ঠিত হয় এবং ১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর শেষবারের মতো তা মিলিত হয়। যা সংবিধান দিবস (Constitution Day) হিসেবেও পালিত হয়। উল্লেখ্য যে, প্রজাতন্ত্র দিবস ভারতের স্বাধীনতার চেতনাকে সম্মান করে। মূলত, ১৯৩০ সালের ২৬ জানুয়ারি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস লাহোরে রবি নদীর তীরে তার সম্মেলনে পূর্ণ স্বরাজ ঘোষণার মাধ্যমে ঔপনিবেশিক শাসনের অবসান ঘোষণা করে। এমতাবস্থায়, ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে সংবিধান গৃহীত হয়। পাশাপাশি, প্রজাতন্ত্র দিবস ভারতীয় নাগরিকদের গণতান্ত্রিকভাবে পরিচালিত সরকার নির্বাচনের অধিকারকেও সম্মান করে। এমতাবস্থায়, ভারতীয় সংবিধানের তৈরির ঘটনাটিকে সম্মান জানাতে, দেশবাসী এই দিনটিকে একটি জাতীয় ছুটির দিন হিসাবে পালন করে।
প্রজাতন্ত্র দিবস উদযাপন: মূলত, প্রজাতন্ত্র দিবস উদযাপন সারা দেশ জুড়ে অত্যন্ত উৎসাহের সাথে পালিত হয়। রাষ্ট্রপতির জাতীয় পতাকা উত্তোলন করার পর বিভিন্ন রাজ্য এবং সরকারি বিভাগগুলির চমৎকার সামরিক ও সাংস্কৃতিক প্রদর্শনীও অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও, ভারতের রাষ্ট্রপতি বীর সৈন্যদের পরমবীর চক্র, অশোক চক্র এবং বীর চক্র প্রদান করেন এবং দেশের যোগ্য নাগরিকদের পদ্ম পুরস্কার দেওয়া হয়।