বাংলাহান্ট ডেস্ক: আগামী দিনে দেশে নগদ টাকার উপর নির্ভরতা কমাতে তৎপর কেন্দ্র। সে জন্য UPI থেকে শুরু করে বিভিন্ন ডিজিটাল পদ্ধতিতে আর্থিক লেনদেন করার জন্য মানুষকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। মানুষকে যাতে নগদ টাকা নিয়ে ঘুরতে না হয়, সে জন্য সম্প্রতি লঞ্চ করা হয়েছে ডিজিটাল রুপি (Digital Rupee)। যা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে কৌতূহলের সীমা নেই।
উল্লেখ্য, ডিজিটাল রুপি এখনও সরকারের পাইলট প্রকল্প হিসেবেই চালু হয়েছে। তাই দেশের সর্বত্র এটি লাগু হয়নি। মাত্র কয়েকটি শহরে চালু করা হয়েছে ডিজিটাল রুপি। এই শহরগুলিতে টাকার ডিজিটাল রূপের সাফল্য থেকে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে রিজার্ভ ব্যাংক। একই সঙ্গে ডিজিটাল রুপি আসার পর একাধিক প্রশ্নও উঠেছে। নগদ টাকার নতুন এই ডিজিটাল রূপ উস্কে দিচ্ছে ২০১৬ সালের নোটবন্দির স্মৃতি।
প্রশ্ন উঠছে, মোদী ফের নোটবন্দির মতো কোনও সিদ্ধান্ত নেবেন না তো? ডিজিটাল রুপি আসার পর দেশের আর্থিক লেনদেনের মানচিত্র পাল্টে যেতে পারে। সরকারের তরফে এটিকে বর্তমান নগদ টাকার একটি বিকল্প এবং যোগ্য উত্তসূরি হিসেবে দেখা হচ্ছে। তাই সাধারণ মানুষের আশঙ্কা, এটি যদি টাকার বিকল্প হয়, তাহলে কি দেশে ফের নোটবন্দি হতে পারে?
এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মত, অদূর ভবিষ্যতে নোটবন্দির মতো চরম কোনও সিদ্ধান্ত নেবে না সরকার। আপাতত ডিজিটাল রুপির সাফল্য মাপা হবে। ধীরে ধীরে আরও বেশি সংখ্যক জায়গায় ডিজিটাল রুপি লঞ্চ করে এটির পরিধি বাড়ানো হবে। তারপর দেখা হবে এই সমস্ত জায়গায় এটি কতটা ভাল বা খারাপ ফল করছে। তারপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে যে এটি নগদ টাকার যোগ্য একটি বিকল্প কী না। তাই আপাতত নোটবন্দির ভয় নেই।
ডিজিটাল ভারতের অন্যতম একটি সমস্যা হল ‘ডিজিটাল ডিভাইড’। অর্থাৎ, মোট জনসংখ্যার একটি স্তরের কাছে ইন্টারনেট পৌঁছেছে। কিন্তু অন্য একটি স্তরের মানুষ এখনও এই পরিষেবা ব্যবহারই করে উঠতে পারেননি। এদিকে সরকার ধীরে ধীরে তাদের সমস্ত কাজ ইন্টারনেট নির্ভর করে তোলার চেষ্টা করছে। ফলে এই স্তরের মানুষ ক্রমে পিছিয়ে পড়ছেন।
এখনও ভারতের অনেক গ্রামে ভাল ইন্টারনেট পরিষেবা পাওয়াই যায় না। সেক্ষেত্রে সেখানে ডিজিটাল রুপির কার্যকারিতা কতটা হবে তা নিয়ে একটা প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। গ্রামে যদি ভাল ইন্টারনেট পরিষেবা না দেওয়া হয়, বা গ্রামের মানুষকে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে না শেখানো হয়, তাহলে সেখানে টাকার নতুন বিকল্প লঞ্চ করা মুশকিল।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ডিজিটাল রুপি ভারতে কালো টাকা ও অর্থপাচারের মতো অপরাধ রাখতে সাহায্য করবে। এমনকি, এটি চালু হলে কর ফাঁকি দেওয়ার মতো কাজও আর করা যাবে না। ডিজিটাল রুপি চালু হলে সরকারের কাছে প্রতিটি আর্থিক লেনদেনের হিসেব থাকবে। ফলে এমন অপরাধের ঘটনা এড়ানো যাবে। বিশেষজ্ঞরা আরও জানাচ্ছেন, ডিজিটাল রুপির ফলে ব্যাংকিং ব্যবস্থাতেও সামঞ্জস্য আসবে। একইসঙ্গে তাদের মতে, ডিজিটাল রুপির লেনদেন সাধারণ মানুষের কাছে সহজলভ্য করে তুলতে UPI অ্যাপের সাহায্য নেওয়া উচিত কেন্দ্রের।