বাংলা হান্ট ডেস্কঃ যত সময় গড়াচ্ছে আস্তে আস্তে আরও কঠিন হয়ে উঠছে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি। রেডক্রসের আন্তর্জাতিক কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী গত মাসেই হাজারের উপর আফগান নাগরিক মারা গিয়েছেন, শুধু তাই নয় আহত হয়েছেন ৪০৪২ জন। যদিও তালিবান গোষ্ঠীর তরফ থেকে জানানো হয়েছে তারা কোন সাধারণ নাগরিকের উপর আক্রমণ করেননি। কোন বাড়িও ধ্বংস করা হয়নি। কিন্তু ক্রমশই তালিবানরা আফগানিস্তানের মূল এলাকাগুলি দখল করে নিচ্ছে। বিশেষত মার্কিন সৈন্য বল সরে যাবার পরেই রীতিমতো সক্রিয় হয়ে উঠেছে তালিবান গোষ্ঠী।
মার্কিন ইন্টেলিজেন্স রিপোর্ট অনুযায়ী তালিবানরা আগামী ৩০ দিনের মধ্যেই আফগানিস্তান রাজধানী থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারে। শুধু তাই নয় ৯০ দিনের মধ্যে তালিবানরা রাজধানী কাবুল দখল করতে পারে বলেও জানা গিয়েছে। যদিও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন নিরাপত্তা আধিকারিক জানিয়েছেন, মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহার করা কোন ভুল ছিল না। কারণ এই ব্যবস্থা আজীবন চলতে পারে না। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও আগেই জানিয়েছিলেন, তিনি তার সৈন্য প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত একটুও অনুতপ্ত নন। আফগান নেতৃত্ব ও সেনাবাহিনীকে তাদের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করতে আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
তিনি এও জানান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গত কুড়ি বছরে আফগানিস্তানের জন্য প্রায় ১ ট্রিলিয়ন ডলার খরচা করেছে। তারা যে শুধু হাজার হাজার মার্কিন সৈন্য হারিয়েছে তাই নয়, আফগান সেনাদের জন্য বেতন,খাদ্য, বিমান সহায়তা ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জামেরও ব্যবস্থা করেছে। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকিও বলেন, আফগান নেতাদেরই নির্ধারণ করতে হবে তাদের রাজনৈতিক লড়াই করার ইচ্ছা আছে কিনা। তাদের একত্রিত হতে হবে। অবশ্য ৯০ দিনের মধ্যে আফগানিস্তানের রাজধানী দখল করবে তালিবানরা, এই মার্কিন ইন্টেলিজেন্স রিপোর্ট নিয়ে তিনি কিছু বলতে চাননি। তবে তিনি বলেন ৩১ আগস্টের মধ্যেই সেনা প্রত্যাহার হবে।
এমতাবস্থায়, ক্রমশই এত জটিল হয়ে উঠছে পরিস্থিতি। জানা গিয়েছে ইতিমধ্যেই ৮০%-এর কাছাকাছি এলাকায় চলে গিয়েছে তালিবানের দখলে। শুধু তাই নয়, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান, ইরান, পাকিস্তান এবং চীনের সীমান্তবর্তী জেলাগুলিও দখল করেছে তারা। যার জেরে আঞ্চলিক নিরাপত্তা উদ্বেগ আরও বেড়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যখন স্পষ্ট বার্তা দিচ্ছে নিজেদের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করতে হবে আফগানিদেরই, তখনই অন্যদিকে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠছে। এখন আগামী দিনে ঘটনা কোন দিকে মোড় নেয় সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।