বাংলাহান্ট ডেস্ক : উত্তর প্রদেশের গোরক্ষপুরের বিআরডি মেডিক্যাল কলেজের (BABA RAGHAV DAS MEDICAL COLLEGE) সুপার স্পেশালিটি ব্লকে রোগীকে অজ্ঞান না করে অপারেশন করার ঘটনা সামনে এসেছে। চিকিৎসক ওই নারীর হাত-পা বেঁধে অপারেশন করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। রোগী চিৎকার করতে থাকলেও চিকিৎসক তা শোনেননি। শেষ পর্যন্ত রোগীটি ব্যথার চোটে অজ্ঞান হয়ে যান এবং তারপর তাঁর অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক তাঁকে ইনজেকশনের দেন বলেই জানা গিয়েছে।
সূত্রের খবর, মায়া বাজারের বাসিন্দা এই নীলম গুপ্তার মূত্রনালীতে পাথর হয়েছিল। তাঁর বাড়ির লোকেরা তাঁকে মেডিকেল কলেজের ইউরোলজিস্ট ডাঃ পবন কুমারের কাছে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসেন। নীলম জানান যে, ডাক্তার তাঁকে বিশেষ চিকিৎসা পদ্ধতিতে অপারেশনের কথা বলেন এবং অপারেশনের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি বাইরে থেকে আনার জন্য আট হাজার টাকা দেওয়া হয়েছিল বলেও উল্লেখ করেন তিনি। গত ২১ নভেম্বর চিকিৎসক তাঁকে অচেতন অবস্থাতেই অস্ত্রোপচার করেন, কিন্তু যন্ত্রণা থেকে মুক্তি মেলেনি।
দ্বিতীয় বার আল্ট্রাসাউন্ডে একটি ৮.১ mমিমি পাথরের খোঁজ পাওয়া যায়। ডাক্তার তাঁকে আবার মেডিকেল কলেজের অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যান। কিন্তু এবার বিছানায় তাঁর হাত-পা বাঁধা ছিল বলে অভিযোগ। নীলম যখন এটির প্রতিবাদ করেন তাঁরা বলে, এটিই নাকি চিকিৎসার পদ্ধতি। এরপর তাঁকে অজ্ঞান না করেই সরাসরি প্রস্রাবের নালীতে বিশেষ যন্ত্র ঢুকিয়ে তাঁরা সেই পাথর ভাঙতে শুরু করেন। ফলে প্রবল আঘাতপ্রাপ্ত হন তিনি। অপারেশন শেষ হলে তিনি এই বিষয়ে তাঁর স্বামীর কাছে অভিযোগ করেন। কিন্তু তিনি তাঁকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যান। এদিকে তাঁর ব্যথা বাড়তে থাকে।
এরপর তৃতীয়বার আল্ট্রাসাউন্ড করার পর দেখা যায় পাথর আর নেই, কিন্তু ইউরিন টিউবের কাছে ক্ষত রয়েছে এবং এই কারণে ব্যথা হচ্ছে। তিনি এখন একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ডাঃ পবন কুমার এসকে-কে এই ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, রোগীর হাত-পা বেঁধে অপারেশন করার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। কিন্তু এটা ঠিক যে, অপারেশনের আগে রোগীকে ঘুমন্ত করা হয়নি। কারণ, এটি খুব বড় অস্ত্রোপচার নয়। এটি ছোট অস্ত্রোপচার হওয়ার কারণে রোগীকে অজ্ঞান করার প্রয়োজন হয় নি। তিনি আরও বলেন যে, এটা নতুন কিছু না, এভাবেই অনেক নারীর অস্ত্রোপচার করানো হয়।
বিআরডি মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডাঃ গণেশ কুমার জানান, এখনো কোনো অভিযোগ আসেনি। তবে লিখিত অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। বড় অস্ত্রোপচারের আগে অ্যানেসথেসিয়া প্রয়োজন। তবে ছোটখাটো অস্ত্রোপচারে, রোগীকে সাধারণত অজ্ঞান করা হয় না এবং বাইরে থেকে মেশিন আনার বিষয়টি নিয়েও স্পষ্টভাবে তিনি কিছু বলেন নি।