বাংলা হান্ট ডেস্ক: এবার একটি অত্যন্ত অবাক করা বিষয় সামনে এসেছে। এই প্রসঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, ইন্দোরে (Indore) একটি NGO দাবি করেছে যে ৪০ বছর বয়সী এক মহিলা মাত্র ৪৫ দিনে ভিক্ষা করে ২.৫ লক্ষ টাকা উপার্জন করেছেন। শুধু তাই নয়, তিনি তাঁর ৮ বছরের মেয়ে সহ তাঁর তিন নাবালক সন্তানকেও ভিক্ষাবৃত্তিতে বাধ্য করেছেন।
পিটিআইয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, ইন্দোরকে ভিক্ষুকমুক্ত শহর হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করা সংগঠন “প্রবেশ”-এর সভাপতি রূপালী জৈন মঙ্গলবার জানিয়েছেন, “ইন্দোর-উজ্জয়ন রোডের লব-কুশ মোড়ে ৪০ বছরের ইন্দ্রা বাঈ ভিক্ষা করতে গিয়ে ধরা পড়ে যান। আমরা তাঁর কাছ থেকে নগদ ১৯,২০০ টাকা পেয়েছি।”
জৈনের মতে, ইন্দ্রা তাঁকে জানান যে তিনি গত ৪৫ দিনে ভিক্ষা করে ২.৫ লক্ষ টাকা উপার্জন করেছেন। যার মধ্যে তিনি তাঁর শ্বশুর-শাশুড়ির জন্য ১ লক্ষ টাকা পাঠিয়েছেন। পাশাপাশি, একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ৫০,০০০ টাকা জমা দিয়েছেন এবং ৫০,০০০ টাকা ফিক্সড ডিপোজিট স্কিমে (FD) বিনিয়োগ করেছেন। তিনি আরও দাবি করেছেন যে পেশাগত ভিক্ষা করে এমন ১৫০ জনের একটি দলের অংশ ওই মহিলার রাজস্থানে একটি জমি এবং একটি দোতলা বাড়িও রয়েছে।
জৈন আরও জানান, ইন্দ্রার স্বামী একটি মোটরসাইকেল কিনেছেন। ভিক্ষার পর তিনি ও তাঁর স্বামী ওই মোটরসাইকেলে শহরে ঘুরে বেড়ান। NGO-র প্রধানের মতে, উজ্জয়নে মহাকাল লোক করিডোর তৈরির পরে, ভিক্ষা থেকে ইন্দ্রার পরিবারের আয় বেড়েছে। কারণ এই ধর্মীয় শহরের দিকে যাওয়া বেশিরভাগ ভক্তের গাড়ি ইন্দোরের লব-কুশ মোড়ে ট্রাফিক সিগন্যালে থামে।
এদিকে, ইন্দ্রার পাঁচ সন্তানের মধ্যে দু’জন রাজস্থানে রয়েছে এবং তিনজন তাঁর সাথে থাকত। বর্তমানে তাঁর ওই তিন সন্তানকে শিশু কল্যাণে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে এবং তদারকিতে রাখা হয়েছে। পাশাপাশি, বনগাঙ্গা থানার সাব-ইন্সপেক্টর ঈশ্বরচন্দ্র রাঠোড় বলেছেন যে, ভিক্ষা করার সময় ধরা পড়ার পরে, ইন্দ্রা আগ্রাসী আচরণ করেছিলেন এবং NGO-র একজন মহিলা কর্মীর সাথে তর্কও করেছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তিনি আরও বলেন যে, ওই ৪০ বছর বয়সী মহিলাকে ফৌজদারি কার্যবিধির (সিআরপিসি) ধারা ১৫১-এর অধীনে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে (কোনো অপরাধ সংঘটন রোধ করার জন্য সতর্কতামূলক গ্রেপ্তার করা)।
আরও পড়ুন: ফের দরাজ হস্ত মুখ্যমন্ত্রী! রেশন কার্ড থাকলেই মিলবে ১,০০০ টাকা, বার্ধক্য ভাতা নিয়েও বড় চমক
উল্লেখ্য যে, কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায়বিচার ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রক দেশের ১০ টি শহরকে ভিক্ষুকমুক্ত করতে একটি পাইলট প্রকল্প শুরু করেছে। যার মধ্যে ইন্দোরও রয়েছে। ইন্দোরের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আশিস সিং জানিয়েছেন যে, “আমরা শহরের ভিক্ষাবৃত্তিতে বাধ্য হওয়া সমস্ত শিশুকে বাঁচানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি।” এমতাবস্থায়, এখনও পর্যন্ত ১০ জন শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে। পাশাপাশি শিশুদের ভিক্ষা করতে বাধ্য করা চক্রের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।