বাংলাহান্ট ডেস্কঃ পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম জনপ্রিয় লৌকিক দেবদেবীগণের মধ্যে মা চণ্ডী (Ma Chandi) অন্যতম। খ্রিষ্টীয় ত্রয়োদশ থেকে ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে চণ্ডীমঙ্গল কাব্যে দেবী চণ্ডীর মাহাত্ম্য বর্ণনা করা হয়েছে। মঙ্গলকাব্য ধারা অনুসারে দেবী চণ্ডী কালীর সমান। গিরিজা পার্বতীর আর এক রূপ। এই দেবীর পূজা অসমেও পূজা করা হয়ে থাকে। আবার পশ্চিমবঙ্গের বহু গ্রামের নাম, মা চন্ডীর নামের অনুকরণে দেওয়া।
সৌভাগ্যের দেবী বলা হয় মা চণ্ডী কে। সুখসমৃদ্ধি, সন্তান, জয় ইত্যাদির আশায় দেবীর মঙ্গলচণ্ডী, সঙ্কটমঙ্গলচণ্ডী, রণচণ্ডী ইত্যাদি মূর্তিগুলি পূজা প্রচলিত আছে। আবার মহামারী ও গবাদিপশুর রোগ নিবারণের উদ্দেশ্যে ওলাইচণ্ডীর পূজা করা হয়।
চণ্ডী বা চণ্ডিকা হলেন পুরাণের দেবীমাহাত্ম্যম্ গ্রন্থের সর্বোচ্চ দেবী। তিনি আবার দুর্গা সপ্তশতী নামেও পরিচিত আছেন। দেবীমাহাত্ম্যম্ গ্রন্থের দ্বিতীয় অধ্যায়ে দেবীর উৎস সম্পর্কে বিস্তারিত ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
কথিত আছে, “অসুরগণের সঙ্গে দীর্ঘ কালীন যুদ্ধ চলার পর দেবতারা পরাজিত হন। সেই সময় দেবী পার্বতী কত্যায়ানি রূপে নিজের অংশ দেবরাদেরকে দান করেন। এবং তিনি নিজের সেই শক্তিকে কায়া রূপ দিতে বলেন দেবতাদের। অর্থাৎ দেবতাদের দেহসঞ্জাত তেজঃপুঞ্জ হতে এই মহাদেবীর উৎপত্তি। এই দেবীর নারীমূর্তি ধারণ করার পূর্বে দেবগণের শক্তি সম্মিলিত হয়ে এক মহাজ্যোতির সৃষ্টি হয়ে দশদিক আলোতে ভরে ওঠে”।
মহাশক্তিধারী সিংহবাহিনী এই দেবী ত্রিনয়না এবং তাঁর কপালে অর্ধচন্দ্র শোভিত আছে। সৃষ্টিকালীন সময়ে দেবগণের দান করা দেবীর হাতের বহু প্রকার অস্ত্র এবং গাত্রে বহুমূল্য অলংকার ও মালা দেখতে পাওয়া যায়।