বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দুঃস্বপ্নের প্রহর গোনার মধ্যে অন্তত কিছুটা স্বস্তি রাজ্যবাসীর। একই কোভিডের সংক্রমণ নিয়ে রীতিমতো আশঙ্কিত সকলে। লকডাউনের জেরে সংক্রমণ কমলেও এখনো প্রতিদিনই আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়ে যাচ্ছে দশ হাজারের উপর। এরই মধ্যে গত বছরের আমফানের স্মৃতি ফিরিয়ে ফেরত পাঠাচ্ছে এদিকে দিয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি। দক্ষিণবঙ্গের বেশ কিছু জেলাতে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনাও রয়েছে। তবে এর মধ্যে অন্তত কিছুটা স্বস্তি দিল ইয়াস। আবহাওয়াবিদদের অনুমান অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গের দিক থেকে কিছুটা মুখ ফিরিয়েছে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস।
পশ্চিমবঙ্গ থেকে মুখ ফেরালো ইয়াসঃ
নিজেদের শেষ আপডেট মৌসম ভবন জানিয়েছে, এই মুহূর্তে তীরের দিকে আরো এগিয়ে এলেও ইয়াসের অভিমুখ মূলত ওড়িশার দিকে। আবহাওয়াবিদরা অবশ্য আগেই জানিয়েছিলেন ইয়াসের ল্যান্ডফল মূলত হতে চলেছে ওড়িশার পারাদ্বীপ এলাকায়। আপাতত পারাদ্বীপ উপকূল থেকে ২৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পূর্বে অবস্থান করছে এই ঝড়। দীঘা থেকে দূরত্ব প্রায় ৩৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ পূর্ব। সাগরদ্বীপ থেকেও একই দূরত্বে রয়েছে ইয়াস। তবে বছরের শেষ ব্লাড মুন থাকায় তীরের দিকে এগোতে এগোতে এই ঝড়ের গতিবেগ আরো বাড়বে বলে অনুমান আবহাওয়াবিদদের। আপাতত ঘণ্টায় প্রায় ১৭ কিলোমিটার বেগে এগিয়ে আসছে এই ঝড়।
কখন হবে ইয়াসের ল্যান্ডফলঃ
ইতিমধ্যেই ইয়াসের আগমন নিয়ে রীতিমতো আশঙ্কিত রাজ্য গুলি। পশ্চিমবঙ্গেও জারি হয়েছে কড়া সর্তকতা। মঙ্গলবারের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, দক্ষিণবঙ্গের বেশকিছু জেলা যেমনপূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, কলকাতা, হাওড়া, হুগলিতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তর বঙ্গের জেলাগুলি কিছুটা রেহাই পেলেও বিক্ষিপ্ত ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে কালিম্পং দার্জিলিং, মালদহ সংলগ্ন এলাকায়। আবহাওয়াবিদদের অনুমান অনুযায়ী, আগামীকাল ভোর রাতে ওড়িশার চাদবলি এবং ধামারা বন্দরের কাছে আছড়ে পড়তে পারে এই সুপার সাইক্লোন। এরপর দুপুরের দিকে পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করতে পারে এই ঝড়। একইসঙ্গে বালেশ্বরেও দুপুরের দিকে প্রবেশ করবে সুপার সাইক্লোন।
ইয়াস মোকাবিলায় রাজ্যের প্রস্তুতিঃ
পশ্চিমবঙ্গের দিক থেকে ইয়াস কিছুটা মুখ ফেরালেও ভারী বৃষ্টির সহ বজ্রপাতের সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে রাজ্যজুড়ে। বিশেষত দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে বৃষ্টিপাত। এমতাবস্থায় পড়া সর্তকতা জারি করা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর তরফে। ইতিমধ্যেই উপান্নে খোলা কন্ট্রোল রুমে বসে ঝড়ের গতির উপর কাছ থেকে নজর রাখছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে ইতিমধ্যেই সরিয়ে আনা হয়েছে প্রায় দশ লক্ষ মানুষকে। শনিবার থেকেই উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে হয়েছে মাইকিং। মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। প্রস্তুত করা হয়েছে প্রায় ৫০০ টেলিকম কন্ট্রোল টিম। বুধবারই নিজের ভয়ঙ্কর রূপ দেখা যায় চলেছে ইয়াস। জানা গিয়েছে, উপকূলে আছড়ে পড়ার সময় এর গতি হতে পারে ঘন্টায় প্রায় ১৫৫ থেকে ১৬৫ কিলোমিটার। পরে তা বেড়ে দাঁড়াবে ঘণ্টায় প্রায় ১৮৫ কিলোমিটার অবধি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গতবছর আমফানের গতিবেগ ছিল প্রায় ঘণ্টায় ১৭০ কিলোমিটার। তাতেই রীতিমতো তছনছ করে দিয়েছিল এই ঘূর্ণিঝড়। এখন ইয়াস কি কান্ড ঘটায় সেই দুঃস্বপ্নের দিন গুনছে সকলে।
‘ভারত আজ পর্যন্ত অলিম্পিকে সোনা পায়নি …’ ভরা মঞ্চে বেফাঁস মমতা