গত ৫০ বছরেও দেখা যায়নি এমন জলোচ্ছ্বাস! দিঘায় চরম সংকটঃ আবহাওয়ার খবর

.বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত কয়েকদিন ধরেই ইয়াসের তাণ্ডবের আশঙ্কায় দিন গুনছিল পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা তথা অন্যান্য রাজ্যগুলি। বিশেষত পশ্চিমবঙ্গে গতবছর আমফানের স্মৃতি ছিল বেশ ভয়ঙ্কর।আর সেই কারণেই এবার শুরু থেকেই রীতিমত সতর্ক রাজ্য। আজ সকাল সাড়ে নটা নাগাদ শুরু হয় ইয়াসের ল্যান্ডফল। হাওয়া অফিসের খবর অনুযায়ী, এগারোটার সময় যে ল্যান্ডফল সম্পন্ন হয় তার গতি ছিল প্রায় ১৫৫ কিলোমিটার/ঘন্টা। ওড়িশার বালাসোরের দক্ষিনে আজ ল্যান্ডফল হয় ইয়াসের। বিশেষজ্ঞরা আগেই জানিয়েছিলেন, হাওয়ার সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে প্রায় ১৮৫ কিলোমিটার/ঘন্টা।

গত ৫০ বছরেও দেখা যায়নি এমন জলোচ্ছ্বাসঃ

ইয়াসের ল্যান্ডফল হওয়ার পরেই তীব্র জলোচ্ছ্বাস দেখা যায় ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে। ব্লাড মুনের কারণে এই জলোচ্ছ্বাসের পরিমাণ ছিল আরো বেশি। ইতিমধ্যেই মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দিঘা, মন্দারমণি, চাঁদিপুর, জুনপুট, বাঁকিপুট সহ বিস্তীর্ণ এলাকা। গাছ ভেঙে পড়েছে পুলিশ কিয়স্কের উপরেও। প্রভাব পড়েছে নদীতেও। জলে ভেসে গিয়েছে একাধিক গ্রাম। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন, প্রায় তিন ঘন্টা তাণ্ডব চালাবে এই ঝড়। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবার সম্ভাবনা রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা এবং দুই মেদিনীপুরে। কারণ এখানে হাওয়ার গতিবেগ হতে পারে প্রায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার অবধি।

কলকাতায় টর্নেডোর আশঙ্কাঃ

এর আগে গবেষকেরা জানিয়েছিলেন, কিছুটা হলেও ইয়াসের কবল থেকে মুক্তি পাবে কলকাতা। যেহেতু বালাসোর থেকে কলকাতার দূরত্ব অনেকটাই। তাই ক্রমশ উত্তর দিকে সরে যাওয়া এই ঝড়ের প্রভাব ততখানি নাও সইতে হতে পারে কলকাতাকে। আশঙ্কা ছিল কলকাতায় হাওয়ার গতিবেগ হতে পারে প্রায় ৭৫-৮০ কিলোমিটার/ ঘন্টা। কিন্তু সকালের আপডেট অনুযায়ী কলকাতাতেও তৈরি হচ্ছে টর্নেডোর আশঙ্কা। আবহাওয়াবিদরা জানাচ্ছেন, এখনও বেশ শান্ত রয়েছে কলকাতার আকাশ। যদিও তা সম্পূর্ণ মেঘাচ্ছন্ন। হাওয়ার গতিবেগ রয়েছে যথেষ্ট। কিন্তু মুষলধার বৃষ্টি এখনো নামেনি। অন্যদিকে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের বাইরের দিকে রয়েছে শীতল বায়ু। ভিতরে রয়েছে উষ্ণ বায়ু। যা বর্তমানে ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে ঘুরতে ঘুরতে এগোচ্ছে কলকাতার দিকে। তাই আশঙ্কা করা হচ্ছে হঠাৎ তাপমাত্রার পার্থক্য ঘটলে টর্নেডো শুরু হতে পারে কলকাতাতেও। যার গতিবেগ হতে পারে প্রায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার। ভরা কোটালের কারণে বাড়বে হুগলি নদীর জল স্তরও। ইতিমধ্যেই সকাল এগারোটা থেকে বেলা চারটে অবধি সমস্ত লকগেট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলকাতা পৌরসভা। শুধু কলকাতা নয় হাওড়া এবং হুগলির বিস্তীর্ণ এলাকা রয়েছে টর্নেডোর সম্ভাবনা।

গতকাল হুগলিতে দেখা গিয়েছিল মেঘের ঘুর্নিঃ

হুগলিতে এখনো সেভাবে শুরু হয়নি বৃষ্টি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গতকালই বিকেলের দিকে প্রায় দুই মিনিটের জন্য একটি ছোট মেঘের ঘূর্ণি দেখা গিয়েছিল ব্যান্ডেল সহ বিস্তীর্ণ অঞ্চলে। যা তছনছ করে দিয়েছিল তার যাত্রাপথের সমস্ত বাধা। অনেকেই আশঙ্কা করছেন এই ছোট ঘূর্ণিটি তৈরি হয়েছিল তাপমাত্রার তারতম্যের কারণেই। তাই কলকাতা সহ বিস্তীর্ণ অঞ্চলেও রয়েছে এই সম্ভাবনা।

Abhirup Das

সম্পর্কিত খবর