বাংলা হান্ট ডেস্ক: গুজরাটের স্বনামধন্য হিরে ব্যবসায়ী সাভজি ঢোলাকিয়ার (Savji Dholakia) ২৭ বছরের পুত্র দ্রব্য ঢোলকিয়া (Dravya Dholakia)। যার হাতের মুঠোয় রয়েছে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি। অথচ সেই সম্পত্তি ছেড়ে মাত্র ৭ হাজার টাকা নিয়ে রাস্তায় নেমেছিলেন তিনি। দোকান কর্মী থেকে শুরু করে কল সেন্টারের চাকরি, বেঁচে থাকার জন্য কী করেননি তিনি। কিন্তু কেন এই সিদ্ধান্ত?
সাভজির পুত্র যখন বাড়ি ছাড়ে তখন তার বয়স ছিল মাত্র ২১ বছর। বাড়ি ছাড়ার সময় তাকে তিনটি শর্ত দিয়েছিলেন তার বাবা। তিনি বলেন, দ্রব্য যতদিন বাইরে থাকবে ততদিন তার নাম ব্যবহার করতে পারবেননা। এক সপ্তাহের বেশি কোথাও চাকরি করবেননা। এবং তিনি যে ৭ হাজার টাকা দিয়েছেন সেটা ভিষণ জরুরী না পড়লে ব্যবহার করতে পারবেননা। এই শর্ত মেনেই পথে নামেন দ্রব্য।
এরপর জীবনসংগ্রামের জন্য দ্রব্য বেছে নিয়েছিলেন কেরলের কোচি শহরকে। কারণ তিনি চেয়েছিলেন এমন এক জায়গা থেকে জীবন শুরু করতে যেখানে তাকে কেউ চেনেনা এবং যেখানকার ভাষাও তার অজানা। এরপর সেখানে গিয়ে চাকরির খোঁজ করলে প্রায় ৬০টি সংস্থার তরফ থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় তাকে। অবশেষে কাজ মেলে বেকারি, জুতোর দোকান এবং খাবার দোকানে।
৬ হাজার কোটি টাকার মালিক যিনি, মাসের শেষে তার হাতে আসতো মাত্র ৪ হাজার টাকা। দৈনিক ৪০ টাকার খাবার আর ২৫০ টাকা খরচ হত থাকার জন্য। তবে তার রোজগারে মাস চলতনা। এইভাবে একটা মাস চলার পর বাড়ি ফিরে যান দ্রব্য। এমতাবস্থায় প্রশ্ন আসবে, ঠিক কী কারণে বাড়ি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন দ্রব্য? চলুন জানাই এই গল্পের নেপথ্য কাহিনী।
দ্রব্যের বাবা সাভজি এই বিষয়ে জানান, ছেলেকে বাস্তবতা শেখাতেই এই কাজ করেছিলেন তিনি। তিনি চেয়েছিলেন তার ছেলে জীবনের মূল্যবোধ বুঝুক। জানা গিয়েছে, সাভজির পরিবারে এই প্রথা আজকের নয়। বহু বছর ধরে চলে আসছে এই প্রথা। দ্রব্যর আগে তার তুতো ভাই বোনেরাও এই কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হয়েছেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আজ থেকে ১২ বছর আগে এই সংস্থা শুরু করেছিলেন সাভজি ঢোলকিয়া। দীর্ঘ লড়াইয়ের পর সফলতার মুখ দেখেছিলেন তিনি। মাত্র চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেই গুজরাটের সেরা ব্যবসায়ীদের তালিকায় নাম লিখিয়েছেন তিনি। আর নিজের ছেলেকেও জীবনের মানে বোঝানোর জন্য এই কঠিন পরীক্ষার মধ্যে ঠেলে দিয়েছিলেন হিরে ব্যবসায়ী সাভজি ঢোলকিয়া।